E-Paper

বন্ধ তারাতলা উড়ালপুল, কাজের দিনে যানজটে নাকাল বেহালা

গত সপ্তাহেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে তারাতলা উড়ালপুল চার দিন বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছিল কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ। ওই উড়ালপুলের ভার বহন ক্ষমতা পরীক্ষার জন্যই শনিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত সেখান দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রাখা হবে বলে জানানো হয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:১২
তারাতলা উড়ালপুল।

তারাতলা উড়ালপুল। — ফাইল চিত্র।

সপ্তাহের প্রথম দিন তারাতলা উড়ালপুল বন্ধ থাকায় ফিরে এল সাত বছর আগের মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয়ের স্মৃতি। শনি ও রবিবার গাড়ির চাপ অপেক্ষাকৃত কম থাকায় তা-ও পরিস্থিতি সামলানো গিয়েছিল। কিন্তু ভোগান্তি চরমে উঠল সপ্তাহের প্রথম দিন, সোমবার। এ দিন তারাতলা উড়ালপুল বন্ধ থাকায় বেহালাসংলগ্ন বিভিন্ন রাস্তায় তৈরি হয়েছিল তীব্র যানজট। কয়েক কিলোমিটার দূরত্ব পেরোতেই লেগে গিয়েছেকয়েক ঘণ্টা।

গত সপ্তাহেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে তারাতলা উড়ালপুল চার দিন বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছিল কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ। ওই উড়ালপুলের ভার বহন ক্ষমতা পরীক্ষার জন্যই শনিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত সেখান দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রাখা হবে বলে জানানো হয়েছিল। পূর্ব-নির্ধারিত সময় মেনেই শনিবার সকাল থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল তারাতলা উড়ালপুলের উপর দিয়ে যানবাহন চলাচল। বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে বেহালা থেকে আলিপুরমুখী যানবাহন করুণাময়ী সেতু দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। আর আলিপুর থেকে বেহালামুখী যানবাহন দুর্গাপুর সেতু, হাইড রোড এবং নিউ আলিপুর দিয়ে চালানোর ব্যবস্থা করা হয়। শনি ও রবিবার চাপ অপেক্ষাকৃত কম থাকায় বিকল্প রাস্তায় যানবাহনের ভিড় তা-ও সামলানো গিয়েছিল। কিন্তু সোমবার পরিস্থিতি এমনই হয় যে, গোটা বেহালার রাস্তা কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায়। ডায়মন্ড হারবার রোডে প্রবল যানজট তৈরি হওয়ায় অনেকেই জেমস লং সরণি ধরার চেষ্টা করেন। কিন্তু দেখা যায়, সেই পথেও প্রায় একই অবস্থা।

জানা যাচ্ছে, সপ্তাহের কাজের দিনে ডায়মন্ড হারবার রোডে এমনিতেই গাড়ির চাপ থাকে। এ দিন তারাতলা উড়ালপুল বন্ধ থাকায় কলকাতামুখী রাস্তায় গাড়ির চাপ কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এর পরে বেলা যত গড়িয়েছে, ততই দীর্ঘ হয়েছে গাড়ির লাইন। শুধু ওই রাস্তা নয়, বেহালার জেমস লং সরণি, আলিপুরের সাহাপুর রোডেও ছিল একই পরিস্থিতি। এ দিন সকালের ব্যস্ত সময়ে ওই সব রাস্তাতেও এক ঘণ্টার বেশি যানজটে আটকে থাকতে হয়েছে বলে অভিযোগ। শুধু গাড়ি নয়, মোটরবাইক নিয়ে যাঁরা বেরিয়েছিলেন, তাঁরাও যানজটে আটকে পড়েন।

এ দিন সরশুনা থেকে সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে যাওয়ার জন্য বেরিয়েছিলেন অভিজিৎ বিশ্বাস। বাইক নিয়ে মাঝেরহাট সেতু পেরোতেই তাঁর কয়েক ঘণ্টা লেগে যায় বলে অভিযোগ। অভিজিতের কথায়, ‘‘মেট্রোর কাজের জন্য এমনিতেই বেহালাবাসীর দুর্দশার কমতি নেই। সারা বছর রাস্তায় যানজট লেগেই থাকে। তার উপরে এ বার তারাতলা উড়ালপুল বন্ধ করে দেওয়ায় রাস্তায় বেরোনোই দুষ্কর হয়ে পড়েছে। পনেরো মিনিটের দূরত্ব যেতেই ঘণ্টা পেরিয়ে যাচ্ছে।’’ এ দিন রাস্তায় বেরিয়ে ভোগান্তির মধ্যে পড়া অনেকেই জানিয়েছেন, মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয়ের পরে যে দুর্ভোগের মধ্যে দিয়ে অনেকগুলি মাস কাটাতে হয়েছিল, সে কথাই মনে পড়ে যাচ্ছে তাঁদের।

ভোগান্তির কথা মেনে নিয়েও লালবাজার দাবি করেছে, এ দিন রাস্তায় অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করে পরিস্থিতি সামলানো হয়েছে। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘শনিবার থেকেই রাস্তায় অতিরিক্ত ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। সোমবার, কাজের দিনে গাড়ির চাপ বেশি থাকবে অনুমান করেই অতিরিক্ত আরও কর্মী নামিয়ে পরিস্থিতি সামলানো হয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Taratala flyover

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy