Advertisement
E-Paper

তিস্তা-তর্কে সেই মমতায় আস্থা ঢাকার

ঠিক এক দিন আগেই ভারত-বাংলাদেশ তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৬ ০৯:৪৯
ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশি হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলি। নবান্নে। ছবি:  দীপঙ্কর মজুমদার।

ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশি হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলি। নবান্নে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

ঠিক এক দিন আগেই ভারত-বাংলাদেশ তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। তিস্তা-সমস্যার সমাধানে পৌঁছতে বাংলাদেশও যে এখনও মমতার উপরেই আস্থা রাখছে, ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশি হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলি সোমবার কলকাতায় সেটা পরিষ্কার করে দিয়েছেন।

ঠিক এক বছর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ঢাকা সফরে গিয়ে মমতা যে-আস্থার কথা বলেছিলেন, এ দিন সেটারই পুনরাবৃত্তি করেছেন বাংলাদেশি দূত। নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য-সাক্ষাতের পরে মোয়াজ্জেম বলেন, ‘‘গত বছর ঢাকায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলে এসেছিলেন, তিস্তা নিয়ে আমরা যেন ওঁর উপরে আস্থা রাখি। এ দিনের আলোচনায় ওঁকে মনে করিয়ে দিয়েছি, ওঁর উপরে আমরা আস্থা রেখেই চলেছি।’’

তিস্তার জল বণ্টন নিয়ে তিনি যে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তির বিরুদ্ধে নন, এর আগে মোদীকে লিখিত ভাবেও তা জানিয়েছেন মমতা। তবু বিভিন্ন রাজনৈতিক কারণে প্রায় এক বছর বিষয়টি নিয়ে বিশেষ উচ্চবাচ্য হয়নি। হলেও কার্যক্ষেত্রে কথাবার্তা তেমন এগোয়নি। এই অবস্থাতেই সুষমা রবিবার দিল্লিতে ইঙ্গিত দেন, তিস্তা চুক্তি নিয়ে আবার মমতার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু হতে চলেছে। সুষমার মন্তব্য, ‘‘তিস্তা নিয়ে বাংলাদেশ, ভারত এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ঐকমত্যে পৌঁছনোটা জরুরি। মমতা দ্বিতীয় বার ভোটে জিতে ক্ষমতায় এসেছেন। তিনিও বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান।’’ তাই তিনি শীঘ্রই তিস্তা চুক্তি সইয়ের ব্যাপারে আশাবাদী বলে জানান সুষমা।

তার পরেই বাংলাদেশি দূত কলকাতায় এসে মমতার উপরে ঢাকার আস্থার কথা বলায় বিষয়টি বিশেষ তাৎপর্য পেয়ে যাচ্ছে। ঢাকার দূতকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, সুষমার ওই বক্তব্যের পরে পরেই মমতার সঙ্গে তাঁর এ দিনের সাক্ষাৎ কি তিস্তা চুক্তির বিষয়ে আলোচনার জন্যই?

হাইকমিশনার মোয়াজ্জেম অবশ্য জানিয়ে দেন, তাঁর এই সাক্ষাৎ সম্পূর্ণ সৌজন্যমূলক। তিনি বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (বিধানসভা নির্বাচনে) বিরাট জয়ের পরে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে এসেছিলাম। এই বিপুল জয়ে স্পষ্ট, বিপুল মানুষের সমর্থন রয়েছে তাঁর সঙ্গে।’’ তিস্তা নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে কেন্দ্রের কথা থেমে থাকার একটা কারণ নির্বাচনী ব্যস্ততা। সেই নির্বাচন সাঙ্গ হওয়া এবং তাতে মমতার বিপুল গরিষ্ঠতা নিয়ে ফিরে আসার পরে তিস্তা-বৈঠকের পথ প্রশস্ত হয়েছে বলে মনে করছে দিল্লিও। ঢাকার তরফে মমতাকে সময়োচিত শুভেচ্ছা জ্ঞাপন এবং তিস্তা চুক্তি নিয়ে মমতার উপরে বাংলাদেশের আস্থার পুনরাবৃত্তি তাই পরস্পরের সঙ্গে অর্থপূর্ণ ভাবেই জুড়ে যায়।

মমতার সঙ্গে সাক্ষাৎ পর্বের পরে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ রফতানির বিষয়েও প্রশ্ন করা হয়েছিল হাইকমিশনারকে। জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমরা তো ইলিশ রফতানি করতে প্রস্তুত। তবে তার জন্য এখানকার বন্দরের সুযোগ-সুবিধে আরও বাড়ানো প্রয়োজন। সেটা বাড়ালেই রফতানি করা যাবে।’’

নবান্ন সূত্রের খবর, এ দিন মমতার সঙ্গে মোয়াজ্জেমের আলোচনায় ঢাকা রামকৃষ্ণ মিশনে ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর হুমকির বিষয়টিও ওঠে। মোয়াজ্জেম জানান, সুষমা স্বরাজের সঙ্গে এই বিষয়ে তাঁদের কতটা কী আলোচনা হয়েছে, সেটা তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে দিয়েছেন।

m4 Dhaka Teesta issue
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy