Advertisement
E-Paper

কোথাও ভর্তির ফর্ম মিলবে লাইনে, কোথাও অনলাইনে

পাঁচ দিন আগে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ হয়েছে। কিন্তু চুঁচুড়ার বিভিন্ন কলেজে ভর্তি কবে এবং তার পদ্ধতি নিয়ে জেলার ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ধোঁয়াশা কাটেনি। কোনও কলেজ কর্তৃপক্ষ অনলাইনে ফর্ম বিলির সিদ্ধান্ত জারি রেখেছেন। কোথাও আবার সাবেক পদ্ধতিতে লাইন দিয়ে ফর্ম তুলতে হবে ছাত্রছাত্রীদের। কিন্তু কবে থেকে তা শুরু হবে, তা নিয়ে এখনও বহু কলেজ কর্তৃপক্ষই কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৪ ০১:০৯

পাঁচ দিন আগে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ হয়েছে। কিন্তু চুঁচুড়ার বিভিন্ন কলেজে ভর্তি কবে এবং তার পদ্ধতি নিয়ে জেলার ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ধোঁয়াশা কাটেনি। কোনও কলেজ কর্তৃপক্ষ অনলাইনে ফর্ম বিলির সিদ্ধান্ত জারি রেখেছেন। কোথাও আবার সাবেক পদ্ধতিতে লাইন দিয়ে ফর্ম তুলতে হবে ছাত্রছাত্রীদের। কিন্তু কবে থেকে তা শুরু হবে, তা নিয়ে এখনও বহু কলেজ কর্তৃপক্ষই কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি। তবে, তাঁরা জানিয়েছেন, সরকারি নির্দেশমতো ১০ জুনের মধ্যেই ফর্ম বিলি করার কথা। সে যে পদ্ধতিতেই হোক না কেন, তা নিয়ে সমস্যা থাকার কথা নয়।

কিন্তু ইতিমধ্যেই ছাত্রছাত্রী এবং তাঁদের অভিভাবকেরা কলেজে কলেজে যাতায়াত শুরু করেছেন। কিন্তু ভর্তির দিনক্ষণ এবং পদ্ধতি সে ভাবে জানতে না পেরে অনেককেই ফিরতে হচ্ছে হতোদ্যম হয়ে। ফেব্রুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক কেন্দ্রীয় ভাবে অনলাইন পদ্ধতিতে ছাত্রভর্তির কথা বলে উচ্চ মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশের প্রাক্-মুহূর্তে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত বদলের জেরে ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে তাঁদের। কোথায় অনলাইন, কোথায় অফলাইন, কোথায় কবে থেকে ফর্ম বিলি, কবেই বা জমা দেওয়ার দিন শেষ মুহূর্তে সে সব ঠিক করতে কলেজ-কর্তৃপক্ষ হিমশিম খাচ্ছেন আর তার খেসারত দিচ্ছেন ভর্তি হতে আসা ছাত্রছাত্রীরা। সেই সঙ্গে কলেজের মূল ফটকে দেখা মিলছে ছাত্র সংসদের দাদাদের। ভর্তি সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়ে যাঁরা ‘মুশকিল আসান’ হয়ে হাজির হচ্ছেন। হাতে গুঁজে দিচ্ছেন নিজেদের টেলিফোন নম্বর।

হুগলিতে মোট ৩২টি কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে শ্রীরামপুর মহকুমার কলেজগুলি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন। বাকি তিনটি মহকুমার (চন্দননগর, হুগলি এবং আরামবাগ) কলেজগুলি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন। তবে, এ বার কলেজগুলিকেই ভর্তির ব্যাপারে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা দফতর।

গত বছর শ্রীরামপুর কলেজে অনলাইনে ছাত্রছাত্রীদের ফর্ম বিলি এবং জমা নেওয়া হয়েছিল। টাকা জমা দিতে হয়েছিল ব্যাঙ্কে। এ বারও একই ব্যবস্থা চালু থাকছে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। উত্তরপাড়ার রাজা প্যারীমোহন কলেজে ফর্ম অনলাইনে মিলবে। জমা নেওয়া হবে কলেজের কাউন্টারে। রিষড়ার বিধানচন্দ্র রায় কলেজে অনলাইনে ফর্ম দেওয়া ও জমা দুই ব্যবস্থাই থাকছে।

তারকেশ্বর ডিগ্রি কলেজে ফর্ম দেওয়া হবে ৯ জুন। লাইন দিয়ে সেখানে ফর্ম তুলতে হবে ছাত্রছাত্রীদের। চাঁপাডাঙা কলেজেও একই ভাবে ফর্ম বিলি করা হবে ১০ জুন। দু’জায়গাতেই গত বার অনলাইনে ফর্ম দেওয়া হয়েছিল। দুই কলেজের অন্দরেই কানাঘুষো অনলাইনে ভর্তি করা হবে ভেবে ফর্ম ছাপানো হয়নি এখন তাই বাড়তি হ্যাপা পোহাতে হচ্ছে।

ছাত্রছাত্রী এবং কলেজ শিক্ষকদের অধিকাংশেরই মত, অনলাইনে ছাত্র ভর্তির প্রক্রিয়া স্বচ্ছ। কলেজে ফর্ম তুলতে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গলদঘর্ম হয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে পয় পড়ুয়া-অভিভাবকদের। বহু ক্ষেত্রেই ছাত্র সংসদের নেতাদের দাদাগিরির অভিযোগ ওঠে। টাকার বিনিময়ে ছাত্রভর্তির অভিযোগও নতুন নয়। এই পরিস্থিতিতে ছাত্রভর্তির প্রক্রিয়ায় হ্যাপা কমাতে এবং স্বচ্ছতা আনতে দু’বছর ধরে অনলাইন ব্যবস্থাকে আঁকড়ে ধরতে শুরু করছিল কলেজগুলি। কিন্তু এ বার এক পা এগিয়েও দু’পা পিছিয়ে যেতে হচ্ছে তাঁদের।

তারকেশ্বর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ অমলকান্ত হাটি বলেন, ‘‘গত বছর অনলাইনে ফর্ম দেওয়া হলেও এ বার সরকারি নিয়ম মেনে আমরা কলেজের কাউন্টার থেকে ৯ তারিখে ফর্ম দেব।’’ হুগলি মহসিন কলেজের অধ্যক্ষ শুভ্রকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনলাইনে ছাত্রভর্তির কোনও নির্দেশ পাইনি। পুরনো পদ্ধতিতে কলেজের কাউন্টার থেকেই ফর্ম দেওয়া হবে।’’ হুগলি উইমেন্স কলেজ কর্তৃপক্ষ অনলাইনে ফর্ম বিলির সিদ্ধান্ত নিলেও তা জমা নেওয়া হবে কলেজের কাউন্টারে।

কলেজগুলির এই দু’রকম নিয়ম নিয়ে এসএফআই তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের সমালোচনা করতে ছাড়েনি। সংগঠনের জেলা সম্পাদক পার্থ দাস বলেন, “অনলাইনে ফর্ম বিলিতে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অসুবিধা হচ্ছে। দুর্নীতির পথে বাধা হচ্ছে। তাই ওই ব্যবস্থা সর্বত্র চালু করা হচ্ছে না। এতে ছাত্রছাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাজ্য সরকার সে সব ভাবল না। আমরা চাই, পুরো প্রক্রিয়াই অনলাইনে হোক।” তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি শুভজিৎ সাউ ভর্তি নিয়ে তাঁদের সংগঠনের বিরুদ্ধে ওঠা দাদাগিরি বা দুর্নীতির অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁরা অনলাইনে ভর্তির বিপক্ষে নন দাবি করে শুভজিৎ বলেন, “ভর্তি কোন পদ্ধতিতে হবে তা কলেজই ঠিক করুক। আমাদের ছাত্র সংসদগুলি ভর্তির প্রক্রিয়ায় শুধু সহায়তা করে। তাদের সাহায্য ছাড়া মসৃণ ভাবে এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয় না।’’

কোন কলেজে কী

• হুগলি উইমেন্স কলেজ। ফর্ম বিলি অনলাইনে

• তারকেশ্বর ডিগ্রি কলেজ ফর্ম বিলি লাইনে

• চাপাডাঙা কলেজ ফর্ম বিলি লাইনে

• রাজা প্যারীমোহন কলেজ ফর্ম বিলি অনলাইনে

• বিধানচন্দ্ররায় কলেজ ফর্ম বিলি অনলাইনে

online registration hooghly women’s college tarakeswar degree college
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy