Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

নিজেকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রাখতে পেরেছে বিয়াস

সকাল থেকেই টেলিভিশনের সামনে মনমরা হয়ে বসেছিল বিয়াস। মনে ভয়, আশঙ্কা নিজেকে দেওয়া কথা, রাখতে পারব তো নিজে! হ্যা, পেরেছে সে। উচ্চমাধ্যমিকে সম্ভাব্য নবম হয়েছে জয়নগর পল্লিশ্রী বিদ্যানিকেতনের ছাত্রী বিয়াস কোলে। শুক্রবার তখনও ফল প্রকাশ হয়নি উচ্চমাধ্যমিকের। পাঁচলার হাকোলার বাড়িতে বসে সকাল থেকেই টিভির দিকে তাকিয়ে বসেছিল সে। মাধ্যমিকে আশানুরূপ ফল হয়নি। তাই উচ্চমাধ্যমিকটাই ভরসা ছিল বিয়াসের। নিজের কাছেই নিজের জেদ ছিল, এ বারে অন্তত রাজ্যের প্রথম দশ জনের মধ্যে নিজেকে রাখতেই হবে। আর হলও তাই।

রেজাল্ট বেরোনোর পরে ফোনে পরিজনদের খবর দিচ্ছেন বিয়াস। সঙ্গে মা স্নিগ্ধাদেবী। —নিজস্ব চিত্র।

রেজাল্ট বেরোনোর পরে ফোনে পরিজনদের খবর দিচ্ছেন বিয়াস। সঙ্গে মা স্নিগ্ধাদেবী। —নিজস্ব চিত্র।

সুব্রত জানা
পাঁচলা শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৪ ০১:২০
Share: Save:

সকাল থেকেই টেলিভিশনের সামনে মনমরা হয়ে বসেছিল বিয়াস। মনে ভয়, আশঙ্কা নিজেকে দেওয়া কথা, রাখতে পারব তো নিজে! হ্যা, পেরেছে সে। উচ্চমাধ্যমিকে সম্ভাব্য নবম হয়েছে জয়নগর পল্লিশ্রী বিদ্যানিকেতনের ছাত্রী বিয়াস কোলে।

শুক্রবার তখনও ফল প্রকাশ হয়নি উচ্চমাধ্যমিকের। পাঁচলার হাকোলার বাড়িতে বসে সকাল থেকেই টিভির দিকে তাকিয়ে বসেছিল সে। মাধ্যমিকে আশানুরূপ ফল হয়নি। তাই উচ্চমাধ্যমিকটাই ভরসা ছিল বিয়াসের। নিজের কাছেই নিজের জেদ ছিল, এ বারে অন্তত রাজ্যের প্রথম দশ জনের মধ্যে নিজেকে রাখতেই হবে। আর হলও তাই।

উচ্চমাধ্যমিকে ৪৬৮ নম্বর পেয়েছে বিজ্ঞান বিভাগের এই ছাত্রী। বাংলায় ৯০, ইংরেজিতে ৮৫, পদার্থবিদ্যায় ৯৭, রসায়নে ৯৮ ও জীবনবিজ্ঞানে ৯৮ পেয়েছে। অঙ্কে পেয়েছে ৯৩। এর পরে ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছে রয়েছে তার।

বাবা তপন কোলে ওষুধ কারখানায় কাজ করেন। মা স্নিগ্ধাদেবী একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী। বিয়াস তাঁদের এক মাত্র মেয়ে। যখন ফল জানতে পেরেছে মেয়ে, তখন বাড়িতে ছিলেন না তপনবাবু। স্নিগ্ধাদেবীও বেরিয়েছিলেন কাজে। নিজের সহকর্মীদের কাছ থেকে জানতে পারেন, মেয়ের রেজাল্ট। মেয়েও ফোন করে ডাকে মাকে। কাজ ফেলে ছুট্টে আসেন বাড়িতে। মেয়েকে জড়িয়ে ধরেন তিনি। চোখে আনন্দের কান্না। মেয়ের এত ভাল ফল করার খবর ফোনে জানানো হয় তপনবাবুকে। তিনিও তখন আনন্দে আত্মহারা। বললেন, “মেয়ের ইচ্ছার জোর রয়েছে। যা জেদ করেছিল, তাই করে দেখাল। ওর ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন আমি পূরণ করবই।”

এত ভাল রেজাল্টের জন্য কতক্ষণ পড়াশোনা করত বিয়াস? সে জানায়, পড়াশোনা করার জন্য আলাদা করে কোনও রুটিন ছিল না তার। যখন যে বিষয় ভাল লাগত, তখন তাই পড়ত সে। তবে প্রতিদিন স্কুলে যেত। শিক্ষকদের সাহায্য নিত। এছাড়াও পাঁচ জন গৃহশিক্ষক ছিলেন তার। পড়াশোনার ফাঁকে টিভি দেখা, গান শুনতে ভালবাসে বিয়াস।

বিয়াসের এমন রেজাল্টে পরিবার তো বটেই, খুশি স্কুলের শিক্ষকেরাও। পল্লিশ্রী বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক বিপ্লব মান্না বলেন, “বিয়াস আমাদের স্কুলের নাম উজ্জ্বল করেছে বিপ্লব মান্না বলেন, ও প্রথম থেকেই খুব মেধাবী, স্কুলের সব বিষয়ে অংশগ্রহণ করত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

subrata jana panchla bias
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE