বাংলাদেশে কাফ সিরাপ পাচারের সময়ে গোপালনগর পুলিশের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়ে গেল দুই দুষ্কৃতী।
গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে গোপালনগরের করাতকল এলাকায় মিল শ্রমিকদের বেতনের প্রায় ছ’লক্ষ টাকা ছিনতাইয়ে তারা সরাসরি জড়িত বলে পুলিশের দাবি। বুধবার রাতে গোপালনগর স্টেশন মোড় এলাকা থেকে বাবলু মণ্ডল ও রাজা সাহাজি নামে ওই দু’জনকে ধরা হয়। ধৃতদের বাড়ি অশোকনগরের দোগাছিয়া এবং খোশদেলপুরে। তাদের কাছ থেকে ১৪০ বোতল কাফ সিরাপ আটক করা হয়েছে। জেরা করে ওই ঘটনায় যুক্ত আর এক দুষ্কৃতী রঞ্জিত মুখোপাধ্যায়কে ধরে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে বারাসত জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ১৪ দিনের জেল হাজতের নির্দেশ দেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, তারা ওই ছ’লক্ষ টাকা লুঠের ঘটনাটি ঘটিয়েছিল।’’
২০১৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে গোপালনগরের একটি চটকলের দুই কর্মী হারু শিকদার ও ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য স্থানীয় বিদ্যুত্ সাহা নামে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে শ্রমিকদের বেতনের প্রায় ৬ লক্ষ টাকা নিয়ে মোটরবাইকে করে আসছিলেন। সেই সময়ে করাতকল এলাকার ওই চটকলের সামনে আসতেই কয়েকজন হারুবাবুর মুখে লঙ্কা গুড়ো ছিটিয়ে দেয়। মোটরবাইক থেকে পড়ে যান তিনি। ছিটকে পড়েন পিছনে বসা ধনঞ্জয়বাবুও। হারুবাবুকে মারধর করে তারা। টাকার ব্যাগ নিয়ে ধনঞ্জয়বাবু পালানোর চেষ্টা করলে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে সেটি কেড়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। ভরদুপুরে প্রকাশ্যে ওই ঘটনা ঘটায় এলাকার মানুষের মধ্যে রীতিমতো আতঙ্ক ছড়ায়। পুলিশ দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিলেও এত দিন পর্যন্ত অধরাই ছিল তারা।
পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃত দুষ্কৃতীরা জানিয়েছে, মাসের ৪ ও ১৯ তারিখ ওই মিলের শ্রমিকদের বেতন দেওয়া হয় বলে জানত তারা। মিল কর্তৃপক্ষ যে বিদ্যুত্ সাহা নামে ওই ব্যবসায়ীর কাছে শ্রমিকদের বেতনের টাকা পাঠিয়ে দিতেন সেই খবর পেয়েছিল রঞ্জিত।
সে বাবলুর সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি তাকে জানায়। বাবলু জায়গা দেখে গিয়ে অপারেশন চালানোর পরিকল্পনা করে। এই কাজের জন্য মোট ন’জনকে সে দলে নেয়। হরিণঘাটা, চাকলা, বারাসত থেকে কুখ্যাত দুষ্কৃতীদের ভাড়া করা হয়। তাদের মধ্যে ছিল নগরউখড়ার হাতকাটা শ্যামলও। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার দিন তিনটি বাইকে ওই ন’জন দুষ্কৃতী এসেছিল। যাদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন মামলায় এখন জেলে রয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে। ছিনতাই হওয়া ওই টাকাও উদ্ধার করার চেষ্টা করা হবে।