হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল অন্যতম অভিযুক্ত লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলামের সঙ্গীদের বিরুদ্ধে।
বীরভূমের লাভপুরে তিন সিপিএম সমর্থক ভাইয়ের হত্যা-মামলায় ক’দিন আগেই বোলপুর আদালতে চার্জশিট দিয়েছে বীরভূম পুলিশ। সেই মামলা তুলে নেওয়ার জন্য নিহতদের এক ভাই সানোয়ার শেখকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল অন্যতম অভিযুক্ত লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলামের সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। এর পরেই কলেজপাড়ায়, সানোয়ারের বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন হয়েছে।
ওই হত্যাকাণ্ডে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে চার্জশিটে নাম রয়েছে বিজেপি নেতা মুকুল রায়েরও। তার জেরে সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেছেন মুকুল। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের ডিভিশন বেঞ্চে আজ, মঙ্গলবার ওই আবেদনের শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন মুকুলের আইনজীবী শুভাশিস দাশগুপ্ত। তিনি জানান, আগাম জামিনের আবেদনে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত অতিরিক্ত চার্জশিটে নাম ঢোকানো হয়েছে মুকুলের। ন’বছর আগে যখন খুনের ঘটনা ঘটে, সেই সময় এফআইআরে নাম ছিল না মুকুলের। ২০১৪ সালে পুলিশ বোলপুর আদালতে খুনের মামলার প্রথম চার্জশিট পেশ করে। ওই চার্জশিটেও তাঁর নাম ছিল না।
পুলিশি সূত্রের খবর, ২০১০ সালে লাভপুরের বুনিয়াডাঙা গ্রামের সিপিএম কর্মী জাকের আলি, কোটন শেখ ও ওইসুদ্দিন শেখকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে মনিরুলের বিরুদ্ধে। চলতি বছরে পুনর্তদন্তের আর্জি জানানো হয় হাইকোর্টে। গত সেপ্টেম্বরে তিন মাসের মধ্যে পুনর্তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেয় আদালত। সেই নির্দেশ মেনে পুলিশ সম্প্রতি মনিরুল-সহ ৬৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছে। কিন্তু ‘সাক্ষী সুরক্ষা প্রকল্পে’ মামলাকারী এবং তাঁর পরিবারের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার যে-নির্দেশ বিচারপতি দিয়েছিলেন, তা মানা হয়নি বলে সানোয়ারের অভিযোগ।
ওই ঘটনার পর থেকে নিহতদের বৃদ্ধা মা জরিনা বিবি সপরিবার গ্রামছাড়া। তিনি বোলপুরের একটি গ্রামে এক ছেলের কাছে রয়েছেন। লাভপুরে এলে সানোয়ারের বাড়িতেই থাকেন। জরিনা বলেন, ‘‘লাভপুরে এলে খুব আতঙ্কে থাকি। মামলা তোলার চাপে থাকতে হয়।’’ সানোয়ারের দাবি, আগে বেশ কিছু দিন বাড়ির সামনে পুলিশ প্রহরা ছিল। কিন্তু বছর দুয়েক পাহারা তুলে নেওয়া হয়। তার পরেই নানা ভাবে হুমকি আসত। তাঁর অভিযোগ, ‘‘পুলিশকে লিখিত জানিয়েও লাভ হয়নি। ফের চার্জশিট জমা পড়ার পর থেকে আমাদের উপরে চাপটা বেড়ে যায়। রবিবার বিকেলেও মনিরুলের লোকেরা ফের হুমকি দিয়ে যায়।’’ পুলিশ সূত্রের খবর, মৌখিক ভাবে সে কথা থানায় জানানোর পরেই করে পাহারা শুরু হয়েছে ওই বাড়িতে।
ফোন করে ও মেসেজ পাঠিয়েও মনিরুল ইসলামের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। পুলিশের দাবি, বরাবরই ওই বাড়িতে নিরাপত্তা ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy