কয়েক দিন আগে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা বিধায়ক দিলীপ ঘোষকে কটাক্ষ করে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁর নিরাপত্তা রাজ্য সরকার দেয়। দিল্লি দেয় না। তার জবাবে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে সোমবার বিধানসভাতেই পাল্টা আক্রমণ করলেন দিলীপবাবু।
বাজেট সংক্রান্ত আলোচনায় এ দিন বিরোধীদের মধ্যে একমাত্র দিলীপবাবুই অংশ নেন। আগাগোড়া রাজ্য সরকারকে বিঁধে তিনি একেবারে শেষে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রীকে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘রাজ্য সরকার নিরাপত্তা দিচ্ছে বলে সে দিন মুখ্যমন্ত্রী আমাকে কথা শোনালেন! আমি কারও কাছে নিরাপত্তা চাইনি। আমার কোনও নিরাপত্তার প্রয়োজন নেই। ওই নিরাপত্তা আজই তুলে নিতে পারেন।’’ মুখ্যমন্ত্রী নিজে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা রক্ষী পান। সে প্রসঙ্গে টেনে এর পরে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘গত সাত বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের নিরাপত্তা পাচ্ছেন। তাই ওঁকে বলছি, কাচের ঘরে বসে ঢিল ছুড়বেন না। আগে নিজের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ছেড়ে দিয়ে দেখান!’’ দিলীপবাবুর বিস্ময়, এক দিকে তৃণমূল তাঁর বাড়ি এবং দলীয় দফতরে গুন্ডা পাঠাচ্ছে। আবার তাঁকে নিরাপত্তা দিয়ে তা নিয়ে রাজ্য সরকার খোঁটাও দিচ্ছে!
নোট বাতিলের ফলে এ রাজ্যে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে বাজেটে উল্লেখ করেছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। কিন্তু দিলীপবাবুর দাবি, ‘‘রাজ্যের যে প্রান্তেই যাই না কেন, দেখি শুধুই মেলা, খেলা আর উৎসব হচ্ছে। সবই হচ্ছে সরকারি টাকায়। এত মেলা, উৎসব কি দুর্ভিক্ষের ইঙ্গিত?’’ শাসক শিবিরে মন্ত্রীদের আসনে বসা অর্থমন্ত্রী, নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের মুখে তখন মুচকি হাসি। দিলীপবাবুর মুখে একের পর এক বিরোধিতা শুনেও তাঁদের দিক থেকে কোনও প্রতিবাদ আসেনি।
বাজেট নিয়ে আলোচনার সময় প্রধান দুই বিরোধী দল কংগ্রেস ও বামেরা সভা বয়কট করেছিল। ফলে দিলীপবাবু বহু ক্ষণ বক্তৃতার সময় পান। বস্তুত, তাঁর নাম বক্তার তালিকায় ছিলই না। তবু তিনি বলার সুযোগ পান এবং মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেন। কংগ্রেস এবং বামেদের মতে, এটা সাজানো চিত্রনাট্য। তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির তলে তলে বোঝাপড়া রয়েছে। তৃণমূল-বিজেপির বন্ধুত্বটা মানুষ যাতে বুঝতে না পারে, তাই দিলীপবাবু মমতাকে আক্রমণ করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy