Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Ministry of Rural Development

হিসাব না দিলে পশ্চিমবঙ্গকে টাকা নয়, জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ, দাবি দিলীপের

প্রধানমন্ত্রী একশো দিনের কাজের মতো একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পের খরচের শংসাপত্র দিতে না পারায় প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে পশ্চিমবঙ্গকে টাকা পাঠানো বন্ধ রেখেছে কেন্দ্র।

Dilip Ghosh and Giriraj Singh

বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ এবং কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২৩ ০৭:০৭
Share: Save:

পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব গ্রামোন্নয়ন খাতে বরাদ্দের টাকা মঞ্জুরির দাবি জানাচ্ছে ধারাবাহিক ভাবে। কিন্তু বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ আজ দাবি করেছেন, পশ্চিমবঙ্গ খরচের হিসাব না দেওয়া পর্যন্ত একটি কানাকড়িও পাবে না বলে তাঁর সঙ্গে বৈঠকে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ। দিলীপ বলেন, ‘‘গিরিরাজ স্পষ্ট করে দিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গ যত দিন না প্রাপ্ত অর্থের খরচের বিষয়ে সম্পূর্ণ রিপোর্ট পাঠাচ্ছে, তত দিন নতুন করে কোনও অর্থ মঞ্জুর হবে না।’’

দিলীপ জানান, মানুষের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে রাজ্যকে এড়িয়ে কোনও ভাবে উপভোক্তাদের সরাসরি টাকা দেওয়ার প্রস্তাব গিরিরাজকে দিয়েছিলেন তিনি। তাঁকে জানানো হয়েছে, সে ধরনের কোনও ব্যবস্থা সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের আইনে নেই। তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় আজ আবার জানিয়েছেন, আগামিকাল লোকসভার বিষয় উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের বাজেট বরাদ্দ নিয়ে আলাদা করে আলোচনার দাবি জানাবেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী একশো দিনের কাজের মতো একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পের খরচের শংসাপত্র দিতে না পারায় প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে পশ্চিমবঙ্গকে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের প্রকল্পে টাকা পাঠানো বন্ধ রেখেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। উপরন্তু ওই সব কেন্দ্রীয় প্রকল্পে পুকুর চুরির অভিযোগ ওঠায় অভিযোগ খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় দলকে পাঠানো হয় দিল্লি থেকে। আজ দিলীপের দাবি, বৈঠকে গিরিরাজ জানিয়েছেন, তদন্তকারী দলকে যে ভাবে বিভিন্ন স্থানে বাধা এবং শাসানি দেওয়া হয়েছে, তা ভাল ভাবে নেয়নি কেন্দ্র। অভিযোগ, বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের দুর্নীতি যাতে সামনে না আসে সেই লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় দলকে রোখার চেষ্টা করা হয়। এ নিয়ে মন্ত্রকের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছে ওই তদন্তকারী দল।

দিলীপ জানান, গিরিরাজ তাঁকে বলেন, রাজ্যকে প্রায় ৫৬ লক্ষ বাড়ি বানানোর টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঠিক ক’টা নতুন বাড়ি বানানো হয়েছে তার কোনও তথ্য রাজ্য আজ পর্যন্ত দিয়ে উঠতে পারেনি। দিলীপের কথায়, ‘‘অন্যান্য রাজ্যে ঘুরলে চারটি পুরনো বাড়ির পরে একটি নতুন বাড়ি দেখা যায়। কিন্তু আমাদের রাজ্যে সে সব কোথায়! খুব বেশি হলে দেওয়াল গাঁথা হয়েছে।’’ উপরন্তু রয়েছে পরিবার-পিছু ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ। যে সব অভিযোগের কোনও সুরাহা হয়নি।

রাজ্যের গড়িমসি ও শাসক দলের দুর্নীতির কারণে সাধারণ মানুষের কাছে কেন্দ্রীয় সাহায্য যাচ্ছে না, এই অভিযোগে দীর্ঘ সময় ধরে সরব রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। আবার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার লক্ষ্যেই পশ্চিমবঙ্গের জন্য বরাদ্দকৃত কেন্দ্রীয় অর্থ আটকে রাখা হয়েছে বলে পাল্টা সরব তৃণমূল। দলের লোকসভার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দশ জন সাংসদ পরিস্থিতি সমাধানের লক্ষ্যে গিরিরাজ সিংহের সঙ্গে দেখা করেন। রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারও দিল্লি এসে গিরিরাজের সঙ্গে দেখা করেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর আশ্বাস সত্ত্বেও ওই অর্থ আটকে রাখা হয়েছে। আসলে রাজ্য বিজেপি নেতারা এসে গিরিরাজকে টাকা না দেওয়ার বিষয়ে কুমন্ত্রণা দিয়ে যান। আর কেন্দ্রও সেই কথা মেনে চলে।’’ সুদীপের দাবি, ‘‘রাজ্যসভার নেতা পীযূষ গয়াল আমায় জানিয়েছেন, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা হিসাবে শুভেন্দু অধিকারীর যে পদ পাওয়া উচিত, তা দিলেই পশ্চিমবঙ্গকে সব ধরনের সাহায্য করবে দিল্লি। লজ্জাজনক বিষয়।’’ কিছুটা নজিরবিহীন ভাবেই সংসদের অধিবেশন শুরুর দু’সপ্তাহ আগে, আগামিকাল বিষয় উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক ডেকেছেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। আজ সুদীপ বলেন, ‘‘এ বারের বাজেট বিতর্কে যাতে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের বরাদ্দ নিয়ে আলোচনা হয় তার জন্য আবেদন জানাব। দেশের মানুষের জানা উচিত বাংলার সঙ্গে কী ধরনের বঞ্চনা করে চলেছে কেন্দ্র।’’ আবাস যোজনা,

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE