E-Paper

‘দলবদলুদের’ নিশানা দিলীপের

সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ঘটনার সূত্রে বিজেপির সঙ্গে দিলীপের দূরত্ব নিয়ে জল্পনা রয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। কয়েক দিন ধরে বিজেপির কোনও কর্মসূচিতেও দিলীপকে দেখা যায়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৫ ০৭:৪৪
দিলীপ ঘোষ।

দিলীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।

দল বদলে বিজেপিতে আসা নেতৃত্বের একাংশকে ‘দুর্নীতি’-প্রশ্নে ফের নিশানা করলেন দিলীপ ঘোষ। আন্তর্জাতিক যোগ-দিবসে শনিবার রানি রাসমণি রোডে সঙ্ঘের শাখা সংগঠন ক্রীড়া ভারতীর আয়োজিত কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার পরে এই নিয়ে সরব হয়েছেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ। এর পরেই বিজেপিতে ‘আদি-নব্য দ্বন্দ্বে’র কথা বলে খোঁচা দিয়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।

যোগ-দিবসের কর্মসূচি শেষে দিলীপ বলেছেন, “যাঁরা সিপিএম-তৃণমূল থেকে বিজেপিতে এসেছেন, তাঁদের অনেকে দুর্নীতি-হিংসায় যুক্ত। বিজেপির উদার রাজনীতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছেন না। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ‘গাইডলাইন’ বেঁধে দিয়েছেন। তা মেনে না-চললে অন্য দলের সঙ্গে কী ভাবে পার্থক্য হবে?”

সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ঘটনার সূত্রে বিজেপির সঙ্গে দিলীপের দূরত্ব নিয়ে জল্পনা রয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। কয়েক দিন ধরে বিজেপির কোনও কর্মসূচিতেও দিলীপকে দেখা যায়নি। তাঁর সঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ‘সম্পর্ক’ নিয়েও নানা জল্পনা রয়েছে। এই আবহে দিলীপের মন্তব্য নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। যদিও দিলীপের ব্যাখ্যা, “বিজেপি উদার দল। ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’-এ বিশ্বাসী। সকলকে নিয়ে চলতে চায়। ‘সব কা সাথ সব কা বিকাশ’ দলের মূল মন্ত্র।”

এই বিষয়ে দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের অবশ্য বক্তব্য, “দিলীপ ঘোষ কেন, আমি কোনও বিজেপি নেতারই বক্তব্যের পাল্টা কিছু বলি না।” যদিও বিধানসভায় বিজেপির সচেতক শঙ্কর ঘোষ বলেছেন, “উনি (দিলীপ) দীর্ঘদিনের রাজনীতিবিদ। তবে যাঁরা অন্য দল ছেড়ে বিজেপিতে এসেছেন, তাঁরা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ছাড়পত্র পেয়েই যোগ দিয়েছেন। তা হলে এ কথা কী ভাবে বলা যায়?” ঘটনাচক্রে, তৃণমূল থেকে শুভেন্দু, সিপিএম থেকে শঙ্করের মতো অনেক নেতাই এসেছেন বিজেপিতে। এমনকি, সঙ্ঘের যোগ-দিবসের কর্মসূচিতে দিলীপের সঙ্গেই এ দিন ছিলেন অতীতে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতা তমোঘ্ন ঘোষ। তিনি ২০২১-এ যখন বিজেপিতে এসেছিলেন, তখন দলের রাজ্য সভাপতি ছিলেন দিলীপই।

তবে দিলীপের এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের খোঁচা, “উনি যা বলছেন, সেটা ওঁদের দলের বিষয়। যাঁরা তৎকাল বিজেপি, যাঁরা বিজেপিকে ছিনতাই করতে চাইছেন, ওঁর মতো পুরনো নেতাদের সরাতে চাইছেন, উনি তাঁদেরই নিশানা করেছেন।”

এ দিকে, প্রতি বারের মতো এ বারেও যোগ-দিবস পালন করতে দেখা গিয়েছে সুকান্ত, শুভেন্দু-সহ রাজ্য বিজেপির নেতাদের। সুকান্ত বিধাননগরে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হোমিওপ্যাথি-র ক্যাম্পাসে, শুভেন্দু-সহ বিজেপি বিধায়কদের একাংশ ভারতীয় জাদুঘরে যোগ-দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। যুব মোর্চার আয়োজনে জাতীয় গ্রন্থাগারে যোগ-দিবসের অনুষ্ঠানে ছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য, দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায়, যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি ইন্দ্রনীল খাঁ প্রমুখ।

কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের উদ্যোগে পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্রে বিশেষ ভাবে সক্ষম শিশু-কিশোরেরা যোগ-দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেয় এবং তাদের ভার্চুয়াল মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্য শোনানো হয়। পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্রের অধিকর্তা আশিস গিরি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর ‘এক বিশ্ব, এক স্বাস্থ্যে’র বার্তাকে সামনে রেখেই এমন উদ্যোগ।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

BJP TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy