কৃষ্ণনগরে দিলীপ ঘোষ। রবিবার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
পঞ্চায়েত স্তরে কেন্দ্রের পাঠানো টাকা লুট হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। রবিবার কৃষ্ণনগরে এসে দিলীপ বলেন, “মানুষের জন্য কেন্দ্র যে টাকা পাঠাচ্ছে তা লুট হয়ে যাচ্ছে।” প্রসঙ্গত, কিছু দিন আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিয়ো পোস্ট করে পঞ্চায়েত স্তরে কাজ না হওয়ার অভিযোগ করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ তথা কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মহুয়া মৈত্র।
মহুয়ার পোস্ট করা ভিডিয়ো নিয়ে দিলীপ বলেন, ‘‘উনি আসলে বিবেকের তাড়নায় এ সব বলছেন। ২০২১ সালে নির্বাচন। তার আগে মানুষকে হিসেব দিতে হবে। তাই আগে থেকে এ সব বলে বাহানা দেখাচ্ছেন। কিন্তু লোক ক্ষমা করবে না।” দিলীপের এই বক্তব্য়ের প্রেক্ষিতে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের একাংশের বক্তব্য, মহুয়াই যখন ব্যর্থতা নিয়ে ভিডিয়ো পোস্ট করছেন, তখন তার সুযোগ তো বিরোধীরা নেবেনই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘দলের সাংসদই যদি পঞ্চায়েতের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, তাহলে বিরোধীরা তো আঙুল তুলবেই।’’
এ দিন কৃষ্ণনগরে এক সাংবাদিক বৈঠক করেন দিলীপ। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, গায়ের জোরে, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করে পঞ্চায়েত দখল করেছে তৃণমূল। ফলে ব্যর্থতার দায় তাদেরই নিতে হবে। দিলীপ বলেন, “১০ বছর ধরে পঞ্চায়েত চালাচ্ছেন ওঁরা। পরিকাঠামো তৈরি না হলে তার দায় ওঁদের।’’
সম্প্রতি সোশ্য়াল মিডিয়ায় রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়েছেন মহুয়া। সেখানেও পঞ্চায়েতের কাজ নিয়ে মহুয়ার অভিযোগের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন রাজ্যপাল। রাজ্যপালের পাল্টা সমালোচনাও করেছেন তৃণমূল সাংসদ। এ প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, “উনি আসলে এ সব করে ‘টাইম পাস’ করছেন। যাঁরা ভোট করতে না দিয়ে পঞ্চায়েত সদস্য হয়েছেন, তাঁরাই এখন কেন্দ্রের টাকা লুঠ করছেন। সেটা উনি নিজেই স্বীকার করে নিয়েছেন। এখন ফেসবুক, টুইটারে সময় ব্যয় করছেন। রাজ্যপালকে আক্রমণ করে সময় কাটাচ্ছেন।”
পাশাপাশি, এ দিন করোনা এবং পরিযায়ী শ্রমিকের প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারকে নিশানা করেন দিলীপ। তাঁর অভিযোগ, রাজ্য সরকার করোনা নিয়ে তথ্য গোপন করছে। অন্য দিকে, জেলার বাসিন্দা অনেক শ্রমিকই ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরেছেন। পরিযায়ী সেই শ্রমিকদের সহযোগিতা করার বিষয়ে রাজ্য উদ্যোগী হচ্ছে না বলেও তাঁর দাবি। দিলীপ বলেন, ‘‘এই রাজ্য সরকারের কাছে পরিযায়ী শ্রমিকদের কোনও তালিকা বা তথ্য নেই। রাজ্য সরকার চাইলে আমরা সেই তথ্য দেব। পাশাপাশি কেন্দ্র সরকারের কাছেও এই শ্রমিকদের সহযোগিতা করার অনুরোধ করব।’’
এ দিন রাজ্য কমিটিতে মুকুল রায়ের না থাকা নিয়ে দিলীপ বলেন, ‘‘উনি সর্বভারতীয় নেতা। ওঁকে তো এখানে আটকে রাখা যায় না। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মুকুলবাবুকে ব্যবহার করছেন।’’ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া কোনও কোনও নেতা ফের পুরনো দলে ফিরতে চাইছেন কি না, তা দিলীপকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “জানি না এ সবের পিছনে কাটমানি আছে কি না। কাজ করতে চাইলে আত্মনির্ভর ভারত নির্মাণের জন্য কাজ আছে। দল ঠিক করবে কাকে কী কাজ দেওয়া হবে। বিজেপিতে থাকতে হলে এটা মেনে চলতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy