Advertisement
E-Paper

জেলাশাসক, মন্ত্রী সংঘাত

রাজাভাতখাওয়া চেকপোস্টে বনকর্মীদের ব্যবহার নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে। চেকপোস্টের প্রান্তে থাকা বাসিন্দাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারের অভিযোগ তুলে সম্প্রতি তৃণমূলের নেতা, কর্মীরাও একাধিকবার ওই চেকপোস্ট বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখান৷ কিছুদিন আগে জয়ন্তীতে দফতরের কাজ সেরে ফিরছিলেন পিএইচই-র জেলা শীর্ষ আধিকারিক-সহ কয়েকজন। তাঁদেরকেও প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে ওই গেটে আটকে রাখার অভিযোগ ওঠে চেকপোস্টের কর্মীদের বিরুদ্ধে৷ 

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৪৩

রাজাভাতখাওয়া চেকপোস্টে জেলাশাসককে ‘নিগ্রহ’-এর ঘটনায় এবার সরাসরি সংঘাত বন দফতর ও আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসনের মধ্যে৷ শুক্রবার রাজাভাতখাওয়াতে দাঁড়িয়ে রাজ্যের বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ সাফ জানালেন, তাঁর দফতরের আধিকারিকদের না জানিয়ে আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক নিখিল নির্মল যেভাবে ওই চেকপোস্টে গিয়েছেন, তা তাঁর উচিত হয়নি৷ যদিও এর পাল্টা হিসাবে জেলাশাসকও জানিয়ে দিয়েছেন, তদন্তের কাজে তিনি আইন মেনেই রাজাভাতখাওয়া চেকপোস্টে গিয়েছিলেন৷

রাজাভাতখাওয়া চেকপোস্টে এ দিন এক টিকিট কাউন্টারের উদ্বোধন করেন বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ। বক্সা জঙ্গলকে প্লাস্টিকমুক্ত করতে, এবার থেকে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বা প্লাস্টিকের কোনও সামগ্রী নিয়ে জঙ্গলের ভিতরে ঢোকা যাবে না বলেও তিনি জানান। বদলে পর্যটকদের বন দফতরের দেওয়া কাগজের ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে। টিকিট কাউন্টারের উদ্বোধন করতে এসে মন্ত্রী জেলাশাসকের ওই চেকপোস্টে তদন্ত করতে আসা নিয়ে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।

রাজাভাতখাওয়া চেকপোস্টে বনকর্মীদের ব্যবহার নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে। চেকপোস্টের প্রান্তে থাকা বাসিন্দাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারের অভিযোগ তুলে সম্প্রতি তৃণমূলের নেতা, কর্মীরাও একাধিকবার ওই চেকপোস্ট বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখান৷ কিছুদিন আগে জয়ন্তীতে দফতরের কাজ সেরে ফিরছিলেন পিএইচই-র জেলা শীর্ষ আধিকারিক-সহ কয়েকজন। তাঁদেরকেও প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে ওই গেটে আটকে রাখার অভিযোগ ওঠে চেকপোস্টের কর্মীদের বিরুদ্ধে৷

সূত্রের খবর, এই অবস্থায় খোদ জেলাশাসক নিখিল মির্মল নিজে অভিযোগের তদন্ত করতে সেপ্টেম্বর মাসের গোড়ায় এই চেকপোস্টে আসেন৷ অভিযোগ, ওই সময় সেখানে সাধারণ পোশাকে থাকা এক বনকর্মী জেলাশাসকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন৷ বাধ্য হয়ে জেলাশাসক নিজের পরিচয় দেন৷ কিন্তু তাতেও কোন কাজ হয়নি বলে অভিযোগ৷ আরও অভিযোগ, জেলাশাসক ওই বনকর্মীর নাম জানতে চাইলে, ওই বনকর্মী জেলাশাসককে রেঞ্জ অফিস থেকে তাঁর নাম জেনে নিতে বলেন৷ এই ঘটনায় জেলা প্রশাসনিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়৷ বন আধিকারিকদের কাছে ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠান বনমন্ত্রী৷

শুক্রবার রাজাভাতখাওয়ায় দাঁড়িয়ে বনমন্ত্রী সাফ বলেন, “বিষয়টা নিয়ে আমি খোঁজ নিয়েছি৷ কোনও এক পক্ষকে দোষ দেব না৷ ওই ঘটনায় দুই পক্ষেরই ভুল-ত্রুটি রয়েছে৷ আচমকা সাধারণভাবে না এসে, জেলাশাসকের উচিত ছিল, বন দফতরের আধিকারিকদের জানিয়ে চেকপোস্টে আসা৷”

বনমন্ত্রীর এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ জেলা প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ৷ তাঁদের বক্তব্য, বন দফতরের কর্মীদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করার অধিকার জেলাশাসকের রয়েছে৷ তা ছাড়া অভিযোগ যেখানে বন দফতরের বিরুদ্ধেই, তখন সেই দফতরের আধিকারিকদের আগে কেন তদন্তের বিষয় জানানো হবে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা। আর জেলাশাসক বলেন, ‘‘তদন্তের প্রয়োজনে আমি সেদিন সেখানে সম্পূর্ণ আইন মেনেই গিয়েছিলাম৷ এর বাইরে কিছু বলব না৷’’

তবে বনমন্ত্রী এ দিন জানান, ‘‘ভবিষ্যতে এধরনের ঘটনা রুখতে রাজাভাতখাওয়া চেকপোস্টে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে৷ কোনও অভিযোগ উঠলে, সেই ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷’’

Forest Department District Magistrate Check Post
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy