Advertisement
E-Paper

চাকরি বহালের রায় কেউ চ্যালেঞ্জ করলে সুপ্রিম কোর্টে লড়বেন বিকাশ! সিদ্ধান্ত দলীয় সাংসদের বোধের উপর ছাড়লেন সেলিম

৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বহাল থাকার রায় ঘোষণার পরে তৃণমূল যেমন উচ্ছ্বসিত, তেমনই বিরোধী শিবির কিছুটা ম্রিয়মাণ। এর ঠিক উল্টো ছবি দেখা গিয়েছিল ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের ঘটনায়। তবে সিপিএমের অবস্থা হয়েছে ‘শাঁখের করাতে’ পড়ার মতো।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ১০:৫৮
(বাঁ দিকে) বিকাশ ভট্টাচার্য। মহম্মদ সেলিম (ডান দিকে)

(বাঁ দিকে) বিকাশ ভট্টাচার্য। মহম্মদ সেলিম (ডান দিকে) — ফাইল চিত্র।

প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায় খারিজ করে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বহাল রেখেছে। ডিভিশন বেঞ্চের সেই রায়কে যদি চ্যালেঞ্জ করে মামলাকারীরা সুপ্রিম কোর্টে যান, তা হলে শীর্ষ আদালতে তাঁদের হয়ে আইনি লড়াই লড়বেন বলে জানিয়ে দিলেন সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ তথা আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য। বিকাশের কথায়, ‘‘যদি মামলাকারীরা সুপ্রিম কোর্টে যান, তা হলে নিশ্চয়ই লড়ব।’’

বিকাশ পেশাগত ভাবে আইনজীবী। তাঁর উপর কোনও নির্দেশ জারি করে তাঁকে রুখতে চাইছে না সিপিএম। এর পর তিনি কী করবেন, তা তাঁর ‘ব্যক্তিগত বোধে’র উপরেই ছাড়তে চেয়েছেন দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা পার্টিগত ভাবে কোনও নির্দেশ তাঁকে আগেও দিইনি। এখনও দেব না। কারণ, পেশাগত ভাবে তিনি কী করবেন, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়। সবটাই নির্ভর করে তাঁর বোধের উপর।’’ সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের ব্যাখ্যা, ‘‘কোনও ডাক্তারকে তো আমরা বলি না যে, এই রোগীর অস্ত্রোপচার করবেন না। এ ক্ষেত্রেও তেমনই।’’

৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বহাল থাকার রায় ঘোষণার পরে তৃণমূল যেমন উচ্ছসিত, তেমনই বিরোধী শিবির কিছুটা ম্রিয়মাণ। এর ঠিক উল্টো ছবি দেখা গিয়েছিল ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের ঘটনায়। তবে সিপিএমের অবস্থা হয়েছে ‘শাঁখের করাতে’ পড়ার মতো। দুর্নীতি নিয়েও তাদের বলতে হচ্ছে আবার চাকরিরতদের কথাও ভাবতে হচ্ছে। সিপিএমের এক প্রথম সারির নেতার কথায়, ‘‘বিকাশদা আইনগত ভাবে হয়তো ঠিকই বলছেন। কিন্তু এই প্যানেলে আমাদের সমর্থকদের পরিবারের ছেলেমেয়েরাও রয়েছেন। তাঁদেরও দাগিয়ে দেওয়া বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করছে।’’

বুধবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ৩২ হাজারের নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। তবে এত শিক্ষকের চাকরি বাতিল করে দেওয়া যাবে না। ন’বছর ধরে তাঁরা চাকরি করেছেন। চাকরি বাতিল করলে তাঁদের পরিবারের উপরেও প্রভাব পড়বে। মূলত মানবিক কারণেই চাকরি বাতিলের নির্দেশ খারিজ করেছে আদালত। ডিভিশন বেঞ্চ এ-ও স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, তদন্তে কোথাও এমন ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি যে, যাঁরা চাকরি পেয়েছেন তাঁরা ব্যক্তিগত ভাবে দুর্নীতিতে জড়িত ছিলেন। সিবিআই তদন্তে উঠে এসেছে যে, মোট ২৬৪ জন প্রার্থীর ক্ষেত্রে অনিয়ম হয়েছে। তাঁদের অতিরিক্ত নম্বর দিয়ে উত্তীর্ণ করা হয়েছিল। তদন্তে এই ২৬৪ জনকে চিহ্নিতও করা হয়েছে। আরও ৯৬ জন প্রার্থী যোগ্যতা অর্জনের ন্যূনতম নম্বর পাননি। তবুও তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। তাঁদেরও চিহ্নিত করা হয়েছে। তাই কিছু প্রার্থীর সমস্যা রয়েছে বলেই পুরো নিয়োগপ্রক্রিয়াকে ‘ভুয়ো’ বলা যায় না। ৩২ হাজার শিক্ষকের নিয়োগকে একযোগে বাতিল করার কোনও আইনি ভিত্তি নেই।

২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের পর্বে সিপিএম এবং ব্যক্তি বিকাশের অবস্থান ছিল দুই মেরুতে। দলের ছাত্র-যুব সংগঠন থেকে শুরু করে প্রথম সারির নেতারা বলেছিলেন, চাল আর কাঁকর আলাদা করতে হবে। সকলের নিয়োগেই অনিয়ম হয়েছে, তা বলা যায় না। অতএব, যিনি যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ পেয়েছেন, তাঁকে দুর্নীতিগ্রস্তদের সঙ্গে একই বন্ধনীতে ফেলা যায় না। পক্ষান্তরে বিকাশের বক্তব্য ছিল, প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি হলে পুরো প্যানেলই বাতিল করা উচিত। আইনজীবী সাংসদ ৩২ হাজারের চাকরি বহালের রায়ের পরেও সেই অবস্থানেই অনড়। বিকাশ মনে করেন, এ ক্ষেত্রেও প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতিই হয়েছে।

Primary Recruitment Case
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy