Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ডাক্তারদের চাপ কমাতে দাওয়াই সেই ধ্যান

কোথাও বহির্বিভাগে কয়েকশো রোগীকে পরীক্ষা করে রোগ নির্ণয়। কোথাও বা পরিকাঠামোর হাজারো অভাবকে সঙ্গী করে জটিল অস্ত্রোপচার। তার উপরে চিকিৎসক-নিগ্রহের ঘটনা। সব মিলিয়ে মানসিক চাপ বাড়ছে চিকিৎসকদের, এমনটাই মনে করছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৫৪
Share: Save:

কোথাও বহির্বিভাগে কয়েকশো রোগীকে পরীক্ষা করে রোগ নির্ণয়। কোথাও বা পরিকাঠামোর হাজারো অভাবকে সঙ্গী করে জটিল অস্ত্রোপচার। তার উপরে চিকিৎসক-নিগ্রহের ঘটনা। সব মিলিয়ে মানসিক চাপ বাড়ছে চিকিৎসকদের, এমনটাই মনে করছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)।

চিকিৎসকদের মানসিক চাপ কমানোর উপায় খুঁজতে আইএমএ রবিবার একটি আলোচনাসভার আয়োজন করেছিল। আলোচনায় উঠে এল, অতিরিক্ত রোগীর চাপ অনেক সময়েই চিকিৎসার দক্ষতায় কুপ্রভাব ফেলে। বহির্বিভাগে রোগীর লম্বা লাইন দেখে বিচলিত হওয়ার চেয়ে কী ভাবে কম সময়ে দ্রুত রোগী দেখা যায়, সেই কৌশল শেখা জরুরি। কোনও রোগীর যদি একাধিক প্রশ্ন থাকে, সেই রোগীর সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বলতে হবে পরে। কিন্তু রোগীর প্রশ্নকে কখনওই কোনও ভাবে অবহেলা করা যাবে না।

আইএমএ-র রাজ্য শাখার সভাপতি, চিকিৎসক সুশীলকুমার মণ্ডল জানান, ক্রমাগত কাজের চাপ বা়ড়ছে চিকিৎসকদের। তার জেরেই মানসিক চাপ তৈরি হচ্ছে। যা তাঁদের পারিবারিক সম্পর্কের পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলছে। সেই সমস্যার সমাধান খুঁজতেই এ দিনের আলোচনার আয়োজন। ‘‘আশা করছি, সমাধানের পথ খুঁজে পাওয়া যাবে,’’ বলেন সুশীলবাবু।

আরও পড়ুন: দুর্ঘটনায় দুই ভাই, মন্ত্রী রক্ষাকর্তা

অনুষ্ঠানে ছিলেন ব্রহ্মাকুমারী ঈশ্বরীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সিস্টার শিবানী। চিকিৎসকদের মানসিক চাপ কমাতে তাঁর পরামর্শ, জীবনযাপনের ধরন বদলাতে পারলে অনেক সমস্যা মিটবে। চিকিৎসকদের নিয়মিত ধ্যান করা উচিত। সকালে ঘুম থেকে উঠে কিছুটা সময় নিজের জন্য রাখা দরকার সকলেরই। চিকিৎসকদেরও সময় খুঁজে নিতে শিখতে হবে। নিয়মিত ধ্যান করলে সংযম বাড়বে। ফলে তাঁরা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বিচলিত হবেন না। জটিল পরিস্থিতিতেও শান্ত থাকতে শিখবেন। যা আরও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে সাহায্য করবে তাঁদের।

চিকিৎসকের মানসিক অস্থিরতা অনেক সময়েই রোগী-চিকিৎসক সম্পর্কে ক্ষত তৈরি করে বলে মনে করছেন আইএমএ-র রাজ্য শাখার সম্পাদক, চিকিৎসক শান্তনু সেন। তিনি জানান, চিকিৎসক-নিগ্রহের নানান ঘটনায় বোঝা যাচ্ছে, রোগী-চিকিৎসক সম্পর্কে ক্ষত তৈরি হয়েছে। সেই ক্ষত সারাতে এগিয়ে আসতে হবে চিকিৎসকদেরই। ‘‘যে-কোনও উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থায় রোগীর সঙ্গে চিকিৎসকের সুসম্পর্ক বজায় থাকে। সেই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হবে চিকিৎসকদেরই। সে-ক্ষেত্রে তাঁদের মানসিক সুস্থতা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে,’’ বললেন শান্তনুবাবু।

আইএমএ সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসকদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে এর পরে জেলায় জেলায় অনুষ্ঠান হবে। এ দিনের সভায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের প্রায় সাড়ে তিন হাজার চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন। এর পরে কোন জেলায় চিকিৎসকেরা ঠিক কী ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন, সেটা পর্যবেক্ষণ করে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Doctors meditation Treatment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE