—ফাইল চিত্র।
‘ম্যাজিক বল’-এর জারিজুরি শেষ হল এসএসকেএমে।
আঙুলে গলিয়ে পাক খাওয়ালেই বনবন করে ঘোরে চাইনিজ স্পিনিং বল। দিদি আর ভাইয়ের সবচেয়ে পছন্দের খেলনা। আবার সেই বলকে লুকিয়ে রেখে দিদি মাঝে মধ্যে ভাইকে ম্যাজিক দেখায়। বুধবার বিকেলেও চলছিল সেই ম্যাজিক দেখানো। হঠাৎ বল উধাও! কিছু পরে বোঝা যায়, ম্যাজিক দেখাতে গিয়ে ঘটেছে বিপত্তি।
বুধবার বজবজের আলম নগরের এগারো বছরের কঙ্কনা হালদার চাইনিজ স্পিনিং বল নিয়ে খেলার সময় একটা লোহার বল গিলে ফেলে। কঙ্কনার বাবা সৌমিত্র হালদার দ্রুত তাকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। চিকিৎসক পরামর্শ দেন, এক্স-রে করানোর। এর পরে তাকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক ভাবে খাদ্যনালীতে লোহার বল আটকে গিয়েছে বলে অনুমান করেন ওই হাসপাতালের চিকিৎসক। পরে অন্য বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে এক্স-রে রিপোর্টে ধরা পড়ে শ্বাসনালীর বাঁ দিকে বল আটকে। এর পরে ওই হাসপাতাল রোগীকে সরকারি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।
বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটে নাগাদ কঙ্কনাকে এসএসকেএম-এর ইএনটি বিভাগে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের তরফে কঙ্কনার পরিবারকে জানানো হয়, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। বাঁ দিকের ফুসফুস প্রায় কাজ করছে না। ইনঞ্জেকশন, ওষুধের মাধ্যমে প্রথমে তার অবস্থা স্থিতিশীল করা হয়। শুক্রবার সকালে ইএনটি বিভাগের প্রধান অরুণাভ সেনগুপ্ত, চিকিৎসক দেবাশিস ঘোষ এবং চিকিৎসক সুমন্ত দত্তের টিম অস্ত্রোপচার করে শ্বাসনালীতে আটকে থাকা লোহার বল বের করেন। চিকিৎসকেরা জানান, অস্ত্রোপচার সফল হলেও কঙ্কনাকে পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিকু) রাখা হয়েছে।
এ দিন কঙ্কনার বাবা সৌমিত্রবাবু বলেন, ‘‘সরকারি হাসপাতালে এত ভাল পরিষেবা পাব ভাবতে পারিনি। মেয়েটার শ্বাসনালীতে বল আটকে গিয়েছে শুনে খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। অস্ত্রোপচারের পরে ও আমার সঙ্গে কথা বলেছে। এখন আশ্বস্ত হয়েছি।’’
কঙ্কনার শারীরিক পরিস্থিতি কতখানি সঙ্কটজনক ছিল? চিকিৎসক অরুণাভ সেনগুপ্ত জানান, ফুসফুস কাজ করা প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিল। যার জেরে শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হচ্ছিল। অস্ত্রোপচার দ্রুত করতে না পারলে ঝুঁকি বেড়ে যেত। লোহার বল শরীরের ভিতরে থাকায় সংক্রমণের ঝুঁকিও ছিল। এক বেসরকারি হাসপাতালের ইনএনটি চিকিৎসক দীপঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘বাইরের কোনও কিছু খাদ্যনালীতে আটকালে আশঙ্কা তুলনায় কম থাকে। কিন্তু শ্বাসনালীতে লোহার বল আটকে থাকা যথেষ্ট আশঙ্কাজনক। এর ফলে প্রাণ সংশয়ও হতে পারত।’’
এসএসকেএম-এর সুপার মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মেয়েটি আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে এসেছিল। অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। দ্রুত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলে ভাল লাগবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy