এক তরুণীর মৃত্যুকে ঘিরে উত্তাল নার্সিংহোমে পরিবারের রোষের শিকার হয়েছিলেন এক চিকিৎসক। তার প্রতিবাদে বুধবার এক দিনের ধর্মঘটে সামিল হলেন ইসলামপুরের চিকিৎসকরা। ফলে ডাক্তার দেখাতে এসে নার্সিংহোম ও চেম্বার থেকে ফিরতে হল রোগীদের।
চিকিৎসক নিগ্রহের প্রতিবাদে এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের ইসলামপুর শাখা। সংগঠনের সদস্য হাসনান সারসার বলেন, ‘‘এই ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। সমস্ত চিকিত্সক আতঙ্কিত।’’ তাঁরা জানান, মহকুমা শাসক বিষয়টি দেখার আশ্বাস দেন। এ দিন সংগঠনের প্রতিনিধিরা মহকুমা শাসকের সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাতে স্মারকলিপিও তুলে দেন।
রবিবার পেটে যন্ত্রণা নিয়ে ইসলামপুরের নার্সিংহোমে ভর্তি হন জয়ন্তী সাহা। চিকিৎসক হিমাংশু বিশ্বাস জানান, একটোপিক প্রেগন্যান্সি ছিল ওই তরুণীর। অর্থাৎ তাঁর ফ্যালোপিয়ান টিউবে বাড়ছিল গর্ভস্থ ভ্রুণ। অস্ত্রোপচারের পরে মৃত্যু হয় তাঁর। এর জেরে হিমাংশুবাবুর উপর চড়াও হন ওই তরুণীর পরিবার। অভিযোগ, তাঁকে মারধর করা হয়। বৈধ লাইসেন্স ছাড়া ওই নার্সিংহোমে চিকিৎসা হতো বলে পরে তদন্তে উঠে আসে। আইএমএর বক্তব্য, কোনও নার্সিংহোমের লাইসেন্স আছে কী নেই, তা জেনে চিকিত্সা অসম্ভব। হিমাংশু বিশ্বাসের হয়ে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ইসলামপুর থানায় এ দিন অভিযোগও করেন ইসলামপুর হাসপাতালের চিকিত্সকেরা।
ইসলামপুর শহরের চিকিৎসকরা এ দিন প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ রাখায় দুর্ভোগে পড়েন রোগীরা। তাঁদের অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ এই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। তাই কোনও ডাক্তার যে বসবেন না, তা আগে জানতে পারেননি তাঁরা। শহরের বাসিন্দা জুমাতুন নেশা বলেন, ‘‘ব্লাড সুগার বেড়ে যাওয়ায় ডাক্তার দেখাতে যাই। তখনই জানতে পারি, কোনও ডাক্তারই দেখবেন না। তাই বাড়ি ফিরে যেতে হয়েছে।’’ তাঁদের প্রশ্ন, রাজ্যে বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিংহোমের অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। এ ক্ষেত্রেও চিকিৎসার মতো পরিষেবা যেখানে জড়িত সেখানে একটা শহরে কি এ ভাবে ধর্মঘটের পথে যেতে পারেন চিকিৎসকরা?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy