Advertisement
E-Paper

যাদবপুরকাণ্ড: মঙ্গল এবং বুধবারও প্রতিবাদ কর্মসূচি অতিবাম ছাত্র সংগঠনের, দূরত্ব রাখছে এসএফআই

মঙ্গলবার এবং বুধবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে ডিএসএফ। তবে এই কর্মসূচির সঙ্গে এখনও পর্যন্ত দূরত্বই রাখছে এসএফআই। পড়ুয়াদের পরীক্ষা না-বসার সিদ্ধান্তেরও আপত্তি জানিয়েছে তারা।

গত শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়ির সামনে পড়ুয়াদের বিক্ষোভ।

গত শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়ির সামনে পড়ুয়াদের বিক্ষোভ। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২৫ ১৮:৫৮
Share
Save

মঙ্গলবার এবং বুধবারও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে ডিএসএফ। আগামী দু’দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘পেন ডাউন’ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে এই অতিবাম ছাত্র সংগঠন। দুই দিনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ এবং গবেষণাগার (ল্যাবরেটরি) সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে চাইছে তারা।

সোমবার এসএফআইয়ের ডাকা ছাত্র ধর্মঘটে মিশ্র প্রভাব দেখা গিয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। অধ্যাপকেরা এসেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং ইতিহাস বিভাগ বন্ধ থাকলেও অন্য বেশ কিছু বিভাগ খোলা ছিল। পরীক্ষার আয়োজনও করা হয়েছিল। অনেক ক্ষেত্রে পড়ুয়ারা পরীক্ষায় না-বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তবে গণজ্ঞাপন বিভাগের সেমেস্টারের পরীক্ষা দিয়েছেন পড়ুয়ারা। কলা বিভাগেও ‘ক্লাস টেস্ট’ হয়েছে স্বাভাবিক ছন্দেই। এই আবহে আগামী দু’দিনও প্রতিবাদ কর্মসূচি ডাকল ডিএসএফ। ডিএসএফ নেতা দেবার্ঘ্য যশ বলেন, “আমরা আরও দু’দিন ক্যাম্পাসে পেন ডাউন করার কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। আশা করব শিক্ষক শিক্ষা কর্মী সহ সকল পক্ষ আমাদের সঙ্গে সামিল হবেন।” যদিও এই কর্মসূচি থেকে নিজেদের এখনও পর্যন্ত দূরেই রাখছে এসএফআই।

মঙ্গলবার তৃণমূলপন্থী অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপাও ‘পাল্টা’ প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটায় যাদবপুর 8বি বাসস্ট্যান্ডে থেকে যাদবপুর থানা পর্যন্ত মিছিল করবেন ওয়েবকুপার সদস্যেরা। তৃণমূলপন্থী অধ্যাপক সংগঠনের দাবি, শনিবারের ঘটনায় শিক্ষামন্ত্রীর গাড়িতে ছাত্রের ধাক্কা লাগেনি। দাঁড়িয়ে থাকে কোনও স্কুটারের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। সেখান থেকেই ওই পরিস্থিতি তৈরি হয়।

যাদবপুরের উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির পরে শনিবার রাতে আহতদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। উপাচার্যের পরনে পাঞ্জাবি ছিঁড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, উপাচার্যের রক্তচাপের সমস্যা দেখা দিয়েছে। অসুস্থতার কারণে বাড়িতে বিশ্রামে রয়েছেন তিনি। তবে বাড়ি থেকেই খোঁজখবর নিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতির।

সোমবার এসএফআইয়ের ডাকা ছাত্র ধর্মঘটে কলকাতা এবং জেলার কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত বিক্ষোভ দেখা গেলেও সার্বিক ভাবে বিশেষ প্রভাব পড়েনি। বিশ্ববিদ্যালয় অচল হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা দৃশ্যত কোথাও ঘটেনি। যাদবপুরে সোমবার চারটি বিভাগের পড়ুয়াদের চাকরির ইন্টারভিউ (প্লেসমেন্ট) ছিল। সেখানেও ছাত্র ধর্মঘটের প্রভাব পড়েনি বলে দাবি প্লেসমেন্ট অফিসারের। পড়ুয়াদের একাংশ দাবি করেন, ইন্টারভিউয়ের জন্য একটি সংস্থার আসার কথা থাকলেও উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে তারা সিদ্ধান্ত বদল করে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্লেসমেন্ট অফিসারের ব্যাখ্যা, ওই সংস্থার প্রথম ধাপের ইন্টারভিউ বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়েছিল। সোমবার দ্বিতীয় দফার প্রক্রিয়া ছিল, যা ওই সংস্থার অফিসেই হয়েছে।

এ ছাড়া ইঞ্জিনিয়ারিং-সহ মোট ১২টি বিভাগে সোমবার প্রথম বর্ষের পরীক্ষা ছিল। তার মধ্যে ইনস্ট্রুমেন্টেশন অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে এক জন পড়ুয়াই পরীক্ষায় বসেছেন। আরও বেশ কিছু বিভাগের পড়ুয়ারা পরীক্ষায় না-বসার সিদ্ধান্ত নেন। যদিও এসএফআই শিবিরের বক্তব্য, তারা কখনোই পরীক্ষা না-বসার ডাক দেননি। এই সিদ্ধান্তে সংগঠনের সায় নেই, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছে এসএফআই। সংগঠনের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম নেতা রাজেশ্বর মণ্ডলের বক্তব্য, “আমরা কখন‌ও কোনও পরীক্ষার্থীকে বাধা দিইনি। পরীক্ষা বাতিলেরও কোন‌ও ডাক ছিল না আমাদের।" এসএফআই সমর্থিত এক অংশের ছাত্রের দাবি কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বিজ্ঞান বিভাগে পড়ুয়ারা অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের পরীক্ষা বাতিলের ডাকে সাড়া দিয়ে সেমেস্টার পরীক্ষায় বসেনি। এটা তাদের দায়।

শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েবকুপার বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়ে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁকে ঘিরে ‘গো ব্যাক’ স্লোগানও দেন এসএফআই, আইসা, ডিএসএফের সদস্যেরা। তা থেকেই অশান্তির সূত্রপাত। দফায় দফায় উত্তেজনা তৈরি হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে চত্বরে। অভিযোগ, ব্রাত্যের গাড়ির চাকার হাওয়া খুলে দেন বিক্ষোভকারী পড়ুয়ারা। শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির পাশাপাশি তাঁর পাইলট কারে ভাঙচুর চালানোরও অভিযোগ ওঠে। ব্রাত্য আহতও হন। বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের পাল্টা অভিযোগ, মন্ত্রীর গাড়ি এক ছাত্রকে ধাক্কা মারার ফলে ওই পড়ুয়া আহত হয়েছেন। দু’পক্ষের অভিযোগ ঘিরে শনিবার থেকে উত্তেজনার আবহে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে।

Jadavpur University Protest

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}