Advertisement
E-Paper

সাক্ষীই গরহাজির, শুরু করা গেল না খাগড়াগড় মামলার শুনানি

প্রস্তুতির অভাব ছিল না। আদালত চত্বর জুড়ে ছিল আঁটোসাটো নিরাপত্তা। বিচারক কোর্টরুমে বসে। বাদী ও বিবাদী দু’পক্ষের উকিলরা উপস্থিত। মামলায় অভিযুক্ত ধৃতেরা কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে। এসেছেন তাদের আত্মীয়েরাও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৬ ১৮:১২
—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

প্রস্তুতির অভাব ছিল না। আদালত চত্বর জুড়ে ছিল আঁটোসাটো নিরাপত্তা। বিচারক কোর্টরুমে বসে। বাদী ও বিবাদী দু’পক্ষের উকিলরা উপস্থিত। মামলায় অভিযুক্ত ধৃতেরা কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে। এসেছেন তাদের আত্মীয়েরাও। কিন্তু যাঁর সাক্ষ্যগ্রহণ দিয়ে বিচার শুরু হওয়ার কথা, সেই পুলিশ অফিসারই গরহাজির! যার ফলে, খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলার বিচার শুক্রবার শুরু করা গেল না।

এই নিয়ে বিচারক উষ্মা প্রকাশও করেছেন। সাক্ষী পুলিশ অফিসারের হাজির না হওয়াকে কলকাতা নগর দায়রা আদালতের মুখ্য বিচারক শুভ্রা ঘোষ এ দিন বলেছেন ‘ক্যাসুয়াল অ্যাপ্রোচ’ বা ঢিলেঢালা মনোভাব।

তবে ওই পুলিশ অফিসারের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আজ, শনিবার বেলা সাড়ে ১২টায় নতুন সময় ধার্য করেছেন বিচারক। ওই ঘোষণা করার সময়ে বিচারক একাধিক বার মামলার সরকারি কৌঁসুলি শ্যামল ঘোষ ও বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি তমাল মুখোপাধ্যায়কে বলেন, সাক্ষী যাতে শনিবার যথা সময়ে হাজির হন, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

ওই পুলিশ অফিসার বর্তমানে জগাছা থানার আইসি আবদুল গফ্ফর। খাগড়াগড়ের ঘটনার সময়ে তিনি ছিলেন বর্ধমান থানার আইসি। তাঁর করা এফআইআর-এর ভিত্তিতে মামলা ও তদন্ত শুরু হয়েছিল।

কিন্তু তিনি এলেন না কেন?

আরও পড়ুন: সমীক্ষার রিপোর্ট পেতেও দু’হপ্তা, ডেঙ্গি রুখবে কে

সরকারি কৌঁসুলি শ্যামল ঘোষ জানান, ওই পুলিশ অফিসার তাঁর এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামলাতে ব্যস্ত, তাই তিনি হাজির হতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন।

তখনই বিচারক বলেন, ‘‘কীসের ল অ্যান্ড অর্ডার সিচুয়েশন? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। এত ক্যাসুয়াল অ্যাপ্রোচ কেন?’’ এর পর হাওড়া পুলিশের এক অফিসারের নিয়ে আসা আবদুল গফ্ফরের লিখিত বক্তব্য বিচারককে দেওয়া হয়।

অভিযুক্তদের কয়েক জনের পক্ষের আইনজীবী ফজলে আহমেদ খান বলেন, ‘‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চেয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ খাগড়াগড় মামলা। সেখানে শুনানির প্রথম দিনেই সাক্ষী এলেন না! এটা তো হেনস্থা করার সামিল।’’ বিচারক অবশ্য তখন বলেন, ‘‘কোর্টরুমে বসে আমরা কিন্তু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করতে পারি না। যেখানে তিনি লিখিত ভাবে তাঁর না আসার কারণ জানিয়েছেন।’’

পরে আবদুল গফ্ফরকে ফোনে ধরা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমাকে আইনশৃঙ্খলার দিকটাও দেখতে হয়। তাই, যেতে পারিনি। শনিবার হাজির থাকব।’’ তাঁর কথায়, ‘‘একটা বিশেষ প্রোগ্রামে ল অ্যান্ড অর্ডার ডিউটি চলছে।’’ যদিও হাওড়া পুলিশ সূত্রের খবর, সিটি পুলিশের উদ্যোগে শিবপুর পুলিশ লাইন থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত এ দিন ছিল পথ নিরাপত্তা নিয়ে মিছিল, আর তাতেই আবদুল গফ্ফর উপস্থিত ছিলেন।

আদালতে এ দিন দুই মহিলা রাজিয়া বিবি ও আলিমা বিবি-সহ ধৃত ২০ জনকে হাজির করানো হয়। এরা জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর সদস্য বলে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র দাবি। বীরভূমের কীর্ণাহার থেকে আসা, ধৃত আমজাদ আলি শেখের বাবা সুকুর শেখ বলেন, ‘‘রাত তিনটেয় বাড়ি থেকে বেরিয়েছি। অথচ প্রথম দিনেই এনআইএ সাক্ষীকে হাজির করাতে পারল না! কষ্ট করে, টাকা খরচ করে আসা বৃথা গেল।’’

খাগড়াগড় মামলার জন্য বিচার ভবনে এ দিন একে ফর্টি সেভেনধারী কলকাতা পুলিশের কমান্ডোদের মোতায়েন করা হয়েছিল। ব্যাঙ্কশাল কোর্ট লাগোয়া বিচার ভবনের প্রধান ফটকে পুলিশকর্মীরা প্রত্যেককে তল্লাশি করছিলেন। সাংবাদিকের জামার পকেটে রাখা ওষুধের স্ট্রিপও বার করে দেখা হচ্ছিল। এক জন অফিসার চেঁচিয়ে বললেন, ‘‘আজ যতক্ষণ না খাগড়াগড় মামলা শেষ হচ্ছে, এমনই সতর্ক থাকতে হবে।’’

khagragarh bankshall court NIA
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy