Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Education system

শিক্ষক নেই, প্রশ্নের মুখে পঠনপাঠন

এই শিক্ষকের-আকালের পিছনে উৎসশ্রীকেই দুষছে শিক্ষক মহল। বর্তমানে বদলি করে আকাল পূরণের চেষ্টায় লাভ হবে না বলে তাঁদের দাবি।

An image of students

শিক্ষকের আকাল শুধু গ্রামে নয়, শহরাঞ্চলেও আছে বলে দাবি শিক্ষকদের। প্রতীকী ছবি।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২৩ ০৭:৪১
Share: Save:

কোথাও ১৪টি বিষয় পড়ানোর জন্য স্থায়ী শিক্ষক মাত্র তিন জন। কোথাও বা উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে এক জনও শিক্ষক নেই। তবু একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পঠনপাঠন হচ্ছে। শিক্ষক মহলের বক্তব্য, বিচ্ছিন্ন উদাহরণ নয়, বরং রাজ্যের বহু স্কুলেই এমন অবস্থায় পড়াশোনা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, মাধ্যমিক পাশ করেও একাদশ শ্রেণিতে নিজের পছন্দসই বিষয় নিয়ে ভর্তি হতে পারবে? ভর্তি হলেও স্কুলে সেই বিষয়ে যথাযথ পড়াশোনা হবে কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে। জোড়াতালি দিয়ে পড়াশোনা চললেও তাতে গুণমান রক্ষা হয় কি না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন শিক্ষকদের অনেকে।

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার জয়নগর-২ ব্লকের ঘটিহারানিয়া হাই স্কুলে মোট চার হাজার পড়ুয়া আছে। রয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগও। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ব্রহ্মপদ মণ্ডল বলেন, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ১৪টি বিষয় পড়ানোর জন্য রয়েছেন তিন জন স্থায়ী শিক্ষক। মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক এবং আংশিক সময়ের শিক্ষক নিয়োগ করে কোনও রকমে সামাল দিতে হচ্ছে।’’ দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কুমিরমারি হাই স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে কলা বিভাগে পড়ানো হয়। তবে প্রধান শিক্ষক প্রণয় মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে এক জন শিক্ষকও নেই। অথচ কলা বিভাগ চলছে। আংশিক সময়ের শিক্ষক দিয়েই চালাতে হচ্ছে। অনেকেই বিজ্ঞান শাখায় পড়তে চায়। কিন্তু সেই সুযোগ নেই।’’ ওই স্কুলে ইংরেজির শিক্ষকও নেই, জানান প্রণয়।

শিক্ষকের আকাল শুধু গ্রামে নয়, শহরাঞ্চলেও আছে বলে দাবি শিক্ষকদের। প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক তথা শিক্ষক নেতা নবকুমার কর্মকার বলেন, ‘‘বীরভূমের নিত্যানন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ে দর্শন ও ভূগোলের শিক্ষক উৎসশ্রীর মাধ্যমে বদলি হয়ে গেছেন। ওই স্কুলে জীববিদ্যার শিক্ষক নেই। খাস কলকাতার সারদাপ্রসাদ ইনস্টিটিউশনে বাণিজ্য শাখার কোনও শিক্ষক নেই।’’ মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদার বলেন, “গ্রামাঞ্চলে তো পড়ুয়াদের ভরসা এই সব সরকারি স্কুলই। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে মনের মতো বিষয় না পেয়ে অনেকের উচ্চ শিক্ষায় নিজের মনের মতো বিষয় নিয়ে পড়ার স্বপ্ন অধরাই থেকে যাচ্ছে।’’

এই শিক্ষকের-আকালের পিছনে উৎসশ্রীকেই দুষছে শিক্ষক মহল। বর্তমানে বদলি করে আকাল পূরণের চেষ্টায় লাভ হবে না বলে তাঁদের দাবি। শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, ‘‘উৎসশ্রীর মাধ্যমে অনেক শিক্ষক শহরে চলে গিয়েছেন। শহর থেকে গ্রামে বদলি করে আখেরে লাভ হবে না। দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ প্রয়োজন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE