E-Paper

বয়ানের ফারাকেই গ্রেফতার সহপাঠী

শুক্রবার রাতে সহপাঠীর সঙ্গে কলেজ থেকে বেরিয়ে ওই ছাত্রী গণধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ।

সুব্রত সীট , অভিজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৫ ০৯:১১
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

দুর্গাপুর ও মালদহ: রাজ্য সড়কের পাশে দোতলা বাড়ি কংগ্রেসের দু’বারের পঞ্চায়েত সদস্যের। একতলায় নির্মাণ সামগ্রীর দোকান। বুধবার বন্ধ ছিল। তবু বাড়ির সামনে জটলা। মালদহের এক গ্রামের ওই পঞ্চায়েত সদস্য দুর্গাপুরের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে সহপাঠী তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় ধৃত ছাত্রের বাবা। বুধবার ওই ছাত্রকে দুর্গাপুর আদালতের বিচারক সাত দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

প্রায় গোড়া থেকেই এই সহপাঠীকে ধরার দাবি জানিয়ে আসছিলেন নির্যাতিতার বাবা। শেষে ছাত্রটিকে ঘরা হলে এ দিন তিনি বলেন, ‘‘এখনও বলছি, সিবিআই তদন্ত হলে ভাল হবে। তবে সেটা বাংলার সরকারের উপরে নির্ভর করছে।’’ তাঁর সংযোজন: ‘‘অনেক আশা নিয়ে মেয়েকে পাঠিয়েছিলাম। তার ভবিষ্যৎ যা নষ্ট হওয়ার, হয়েছে। সোনার বাংলা সোনার থাকুক। মেয়েকে নিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওড়িশা চলে যাব। আর আসব না।’’ পাশাপাশি, তিনি এ-ও বলেন, ‘‘মমতাদিদি (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) মায়ের মতো। তাঁকে প্রণাম। যদি তাঁর বিরুদ্ধে ভুল কিছু বলে থাকি, ক্ষমা করে দিন। মেয়েকে ন্যায়বিচার দেওয়ার চেষ্টা করবেন।’’

শুক্রবার রাতে সহপাঠীর সঙ্গে কলেজ থেকে বেরিয়ে ওই ছাত্রী গণধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ। শনিবার থেকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ওই ছাত্রকে। কলেজ লাগোয়া গ্রামের পাঁচ যুবককে ধরা হয়। পুলিশ সূত্রের দাবি, ধৃতদের জেরা করে পাওয়া তথ্য এবং নির্যাতিতার বয়ানের সঙ্গে সহপাঠীর বয়ানে ফারাক মেলে। তাই ধৃতদের পোশাকের সঙ্গে তাঁর জামাকাপড়ও ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়। মঙ্গলবার সকালে ধৃতদের সঙ্গে তাকেও ঘটনার পুনর্নির্মাণে নিয়ে যায় পুলিশ। সূত্রের দাবি, সেখানেও তার কথায় অসঙ্গতি মেলে। এর পরে, সন্ধ্যায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার যদিও এ নিয়ে মুখ খোলেননি পুলিশকর্তারা।

ধৃত ছাত্রের হয়ে সওয়াল করতে চাননি আইনজাবীরা। শেষে ‘স্টেট লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটি’র তরফে আইনজীবী পূজা কুড়মি তাঁর হয়ে দাঁড়ান। ধৃত ছ’জনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ, একই উদ্দেশ্যে সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে অপরাধ ঘটানো, সম্পত্তি ছিনতাই, ভয় দেখিয়ে জোর করে অর্থ, সম্পত্তি বা সুবিধা আদায়ের ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।

মালদহের বাড়িতে ধৃতের বাবা-মায়ের দেখা মেলেনি। পড়শিরা জানান, নির্মাণ সামগ্রী, মাছ ও আমের ব্যবসা তাদের। ছেলেটি মুর্শিদাবাদের স্কুলে পড়েছে। তাঁদের এক আত্মীয় বলেন, ‘‘সবার আশা, বাড়ির ছেলে ডাক্তার হবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করানো হয়েছিল। কী ভাবে এমন হল, ভাবতে পারছি না!” তিনি জানান, ওই ছাত্রের বাবা-মা দুর্গাপুরে গিয়েছেন। ফোনে ধৃতের বাবা শুধু বলেন, “আমরা বাইরে আছি।” দক্ষিণ মালদহের সাংসদ, কংগ্রেসের ইশা খান চৌধুরী বলেন, “দুর্গাপুরের ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। দলের পঞ্চায়েত সদস্যের ছেলে যদি দোষী প্রমাণিত হয়, তবে কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Durgapur

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy