আর্থিক প্রতারণার মামলায় অভিযুক্ত ভুয়ো ‘ইডি আধিকারিক’ শেখ জিন্নার আলিকে নিজেদের হেফাজতে নিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। পূর্ব বর্ধমানের রায়নার বাসিন্দা জিন্নারকে বুধবারই গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বৃহস্পতিবার তাঁকে কলকাতায় বিচার ভবনে পেশ করা হলে বিচারক ১৬ জুলাই পর্যন্ত (১৪ দিনের) ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
নিজেকে ‘সিজিও কমপ্লেক্সের ইডি অফিসার’ পরিচয় দিয়ে এক বালি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দেড় কোটি টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে জিন্নারের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় মঙ্গলবার ইডির কাছে অভিযোগ দায়ের হয়। এর পরে বুধবারই রায়নায় জিন্নারের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযুক্তের বাড়িতে তল্লাশি চালান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা। বুধবারই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।
ইডির সন্দেহ, শুধু ওই বালি ব্যবসায়ী নন, একাধিক ব্যক্তিকে প্রতারণা করেছেন ওই ভুয়ো ‘ইডি আধিকারিক’। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, অভিযুক্তের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মোটা রাশির টাকা জমা পড়েছে। তা থেকেই তদন্তকারীদের অনুমান, একাধিক ব্যক্তিকে নিজের ফাঁদে ফেলে থাকতে পারেন জিন্নার। ওই প্রতারিত ব্যক্তিদের নিরাপত্তার প্রয়োজন রয়েছে বলেও মনে করছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি অভিযুক্তকে জেরা করে, এই প্রতারণার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত রয়েছেন কি না তা-ও নিশ্চিত করতে চাইছে ইডি।
আরও পড়ুন:
ইডির আইনজীবী আদালতে জানান, অভিযুক্ত সমাজমাধ্যমে নিজেকে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি কমিটির সদস্য বলে দাবি করেন। অনলাইনে অভিযুক্ত নিজের যে পরিচয় দিয়ে রেখেছেন, তা আদালতকে দেখার অনুরোধ করেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী। পাশাপাশি ধৃতের ব্যবহার করা লেটারহেডও দেখার জন্য বিচারকের কাছে আবেদন জানান তিনি।
যদিও জিন্নারের আইনজীবীর দাবি, অভিযোগকারী ব্যক্তি জিন্নারকে আগে থেকেই চিনতেন। একটি কাজের জন্য অভিযোগকারী ওই টাকা ধৃতকে দিয়েছিলেন। পরে সেই টাকা ফেরত চান তিনি। যে গাড়িটিকে অভিযুক্ত ‘ইডি’র গাড়ি বলে ব্যবহার করতেন বলে অভিযোগ, সেই গাড়ি অতীতেও ওই ব্যবসায়ীর থেকে টাকা নিতে ব্যবহার করেছেন বলে জানান আইনজীবী। জিন্নারের আইনজীবীর দাবি, ওই ব্যবসায়ী আগেও তাঁর মক্কেলের থেকে টাকা ফেরত চেয়ে নোটিস পাঠিয়েছিলেন। তবে সেই নোটিসে ‘ইডি আধিকারিক’ হিসাবে ভুয়ো পরিচয়ের কোনও উল্লেখ নেই বলে আদালতে জানান তিনি। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে অভিযুক্তকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত ইডি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত।