Advertisement
E-Paper

ইমরান আবার ইডি-র মুখে, মিঠুন-অর্পিতাও

সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে তৃণমূল সাংসদ আহমেদ হাসান ইমরানকে আবার তলব করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সূত্রের খবর, একই সঙ্গে ডাকা হয়েছে রাজ্যের শাসক দলের আরও দুই সাংসদ মিঠুন চক্রবর্তী ও অর্পিতা ঘোষকেও। রাজ্যসভার তৃণমূল সদস্য ইমরান অধুনা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অব ইন্ডিয়া (সিমি)-র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। সারদার টাকা বাংলাদেশে জঙ্গিদের কাছে পাঠানোয় তাঁর হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সারদা কাণ্ডে জেলবন্দি তৃণমূলের আর এক সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ কুণাল ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৫ ০৩:৩৭

সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে তৃণমূল সাংসদ আহমেদ হাসান ইমরানকে আবার তলব করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সূত্রের খবর, একই সঙ্গে ডাকা হয়েছে রাজ্যের শাসক দলের আরও দুই সাংসদ মিঠুন চক্রবর্তী ও অর্পিতা ঘোষকেও।

রাজ্যসভার তৃণমূল সদস্য ইমরান অধুনা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অব ইন্ডিয়া (সিমি)-র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। সারদার টাকা বাংলাদেশে জঙ্গিদের কাছে পাঠানোয় তাঁর হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সারদা কাণ্ডে জেলবন্দি তৃণমূলের আর এক সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ কুণাল ঘোষ। সিমি নিষিদ্ধ হওয়ার পরে ওই সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার কথা ইমরান অস্বীকার করলেও বাংলাদেশ, উত্তর ভারত ও অসম থেকে আসা জঙ্গিদের তিনি নিয়মিত কলকাতায় আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছেন তাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এনে দিল্লিকে একাধিক রিপোর্ট দিয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। রাজ্যের কয়েকটি এলাকায় দাঙ্গা বাধানোয় তাঁর হাত ছিল বলে রাজ্য পুলিশও ইমরানের বিরুদ্ধে রিপোর্ট দিয়েছিল। তিনি রাজ্যসভায় প্রার্থী হওয়ায় বাংলাদেশ সরকার ডসিয়ের পাঠিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিল ভারত সরকারের কাছে। বাংলাদেশে মৌলবাদী ও জঙ্গিদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগের তথ্যপ্রমাণও দিল্লির হাতে তুলে দিয়েছে ঢাকা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী পীযুষ গয়াল সম্প্রতি জানিয়েছেন, সেই সব তথ্য রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো হয়েছে।

ইমরানের একটি বাংলা ও একটি উর্দু সংবাদপত্র কিনে নিয়েছিল সারদা। পরে সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন সিবিআইয়ের কাছে দাবি করেন, তৃণমূলের চাপেই তাঁকে এই দু’টি সংবাদপত্র কিনতে হয়। এ জন্য বিপুল অর্থব্যয় করার পরেও সংবাদপত্র দু’টির মালিকানা সারদার কাছে হস্তান্তর করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন সুদীপ্ত।


ইডি অফিসে একটি বৈদ্যুতিন চ্যানেলের প্রাক্তন কর্তা
রতিকান্ত বসু। বৃহস্পতিবার।—নিজস্ব চিত্র।

ইতিমধ্যে ইডি দু’বার ওই সাংসদকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। সংবাদপত্রগুলির মালিকানা ও বিক্রির বিষয়ে ইমরান বেশ কিছু নথিপত্রও ইডি-কে দিয়েছেন। কিন্তু তদন্তকারী সূত্রের খবর, সাংসদের জমা দেওয়া নথিপত্রে অনেক অসঙ্গতি রয়েছে। এ বিষয়ে জবাবদিহি চাইলেও তা এড়িয়ে গিয়েছেন তৃণমূলের এই সাংসদ। তাই তাঁকে ফের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিস পাঠানো হয়েছে বলে ইডি সূত্রের খবর। যদিও নোটিস প্রসঙ্গে ওই সাংসদের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। এসএমএসেরও কোনও জবাব দেননি ইমরান।

মাস আটেক আগে ২০১৪ সালের জুলাইয়ে মিঠুনকে মুম্বইয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন ইডি-র তদন্তকারীরা। সারদার একটি বৈদ্যুতিন চ্যানেলের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তার জন্য ওই সাংসদ প্রায় দু’কোটি টাকা পেয়েছিলেন বলে তদন্তে জানা যায়। এই ব্যাপারে সারদা গোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁর কোনও চুক্তি হয়েছিল কি না, চুক্তি হলে তার শর্ত কী ছিল ইত্যাদি জানতে চাওয়া হয়েছিল মিঠুনের কাছে। চুক্তির আর্থিক অঙ্কের বিষয়ে প্রাথমিক ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের পরে ওই সাংসদকে নথিপত্র জমা দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ওই সাংসদ সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দেননি বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।

মিঠুনের আইনজীবী বিমান সরকার জানান, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ইডি-র কোনও নোটিস পাননি তাঁর মক্কেল। নথির বিষয়েও ইডি-র তরফে কোনও ভাবে যোগাযোগ করা হয়নি। সাংসদ তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করেছেন। ওই আইনজীবীর বক্তব্য, তাঁর মক্কেল সারদার বৈদ্যুতিন চ্যানেলে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। তার জন্য টাকা পান। যদিও সেই অনুষ্ঠানে প্রাপ্য টাকার পুরোটা পাননি তাঁর মক্কেল।

কোনও চুক্তিও হয়নি। ইডি-কে সবই জানানো হয়েছিল। যদিও ইডি-র দাবি, তথ্য চাওয়া হলেও ওই সাংসদ তা দেননি। নথির জন্যই তাঁকে ফের তলব করা হয়েছে।

মিঠুন-ইমরানের মতোই তৃণমূল সাংসদ অর্পিতা ঘোষের কাছেও ফের নোটিস পাঠানো হয়েছে বলে ইডি সূত্রের খবর। সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে এ রাজ্যে প্রথম অভিযোগ দায়ের করেছিলেন অর্পিতা। সেই সময় তিনি সারদারই একটি চালু না-হওয়া চ্যানেলে কাজ করতেন। তাঁকে এর আগেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। সম্প্রতি তাঁর কাছে নতুন করে নোটিস পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু অর্পিতাদেবী ব্যস্ত থাকায় হাজির হতে পারেননি। তিনি তা ইডি-কে জানিয়েও ছিলেন। তাই ফের নতুন করে তাঁর কাছে নোটিস পাঠিয়েছেন তদন্তকারীরা। তবে ওই সাংসদ জানান, এমন কোনও নোটিস এখনও তিনি পাননি।

ইডি সূত্রের খবর, ‘প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট’-এই শাসক দলের তিন সাংসদকে একযোগে তলব করা হয়েছে। তবে কবে তাঁদের ইডি-র দফতরে হাজির হতে হবে, তা জানা যায়নি।

তিন তৃণমূল সাংসদকে তলবের পাশাপাশি বৃহস্পতিবার একটি বৈদ্যুতিন চ্যানেলের প্রাক্তন কর্তা রতিকান্ত বসুকেও ফের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন ইডি-র তদন্তকারীরা।

saradha scam

ED

Saradha Scam Trinamool Mithun Chakraborty Arpita Ghosh Ahmed Hassan Imran ED CID CBI
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy