E-Paper

কিরণ কুমারের দুর্নীতি, চার্জ গঠনে তোড়জোড়

ইডি সূত্রে খবর, ২০০৫ সালের ব্যাচের আইএএস অফিসার গোদালা কিরণ কুমার মেদিনীপুর রেঞ্জের ডিভিশনাল কমিশনারের দায়িত্বে রয়েছেন। কিরণ কুমার অবশ‍্য তিনি নির্দোষ এবং তাঁর বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া আইন-বিরুদ্ধ বলে দাবি করেন।

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৫ ০৬:০৪

—প্রতীকী চিত্র।

প্রায় ৭০ কোটি টাকার দুর্নীতির মামলায় রাজ্যের আমলা গোদালা কিরণ কুমার ও তাঁর পরিবারের লোক, শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়-সহ ন’জনের বিরুদ্ধে মামলার চার্জ গঠন করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করায় উদ্যোগী হল ইডি। এ রাজ্যে প্রথমকোনও আমলার বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলায় এত দূর এগোল ইডি। আজ, বুধবার বিচার ভবনের সিবিআই বিশেষ আদালতে মামলাটির চার্জ গঠনের শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে বলে ইডির আইনজীবী অভিজিৎভদ্র জানান।

ইডি সূত্রে খবর, ২০০৫ সালের ব্যাচের আইএএস অফিসার গোদালা কিরণ কুমার মেদিনীপুর রেঞ্জের ডিভিশনাল কমিশনারের দায়িত্বে রয়েছেন। কিরণ কুমার অবশ‍্য তিনি নির্দোষ এবং তাঁর বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া আইন-বিরুদ্ধ বলে দাবি করেন। তদন্তকারীদের দাবি, ২০১১ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত গোদালা কিরণ কুমার ‘শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন পর্ষদের’ চিফ এগজ়িকিউটিভ অফিসার পদে ছিলেন। ওই সময়ে ময়নাগুড়ি, মালবাজার ও বাগডোগরা এলাকায় নানা উন্নয়ন প্রকল্পেরবরাদ্দ অর্থে তিনি কারচুপিকরেছিলেন বলে ২০১৬ সালে রাজ্য পুলিশের সিআইডি তদন্ত শুরু করেছিল। শিলিগুড়ির প্রধান নগর থানায় এফআইআর রুজু করে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। পরে ওই মামলার চার্জশিট আদালতেজমা দেওয়া হয়। ওই মামলার এফআইআর এবং চার্জশিটের ভিত্তিতে ইসিআইআর দায়ের করে তদন্তশুরু করে ইডি।

ইডির দাবি, ২০১১ থেকে ২০১৩ গোদালা কিরণ কুমার এবং তাঁর দফতরের সহকারী বাস্তুকার সপ্তর্ষি পাল নামে আর এক আধিকারিকের যোগসাজসে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ প্রায় ৭০ কোটি টাকা তছরুপ করা হয়েছিল। বিভিন্ন প্রকল্পের টেন্ডার অর্থাৎ দরপত্র আহ্বান করা হয়। এবং নির্দিষ্ট নামের কয়েকটি সংস্থাকে ওই উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে বলে শীর্ষ মহলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবিক কোনও প্রকল্পের কাজ হয়নি বলে দাবি। বিভিন্ন ঠিকাদার সংস্থাকে বরাদ্দ অর্থ দিয়ে উন্নয়ন প্রকল্প রূপায়ণ করা হয়েছে বলে কাগজে-কলমে রিপোর্ট থাকলেও সরকারি বরাদ্দের টাকার বড় অংশ কিরণ কুমার, তাঁর পরিজন, শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়দের নামের‍ ব‍্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এবং সম্পত্তিতে বিনিয়োগ করা হয়েছিল বলে তদন্তে উঠে এসেছে। ওই সম্পত্তির বেশির ভাগ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে দাবি ইডির কর্তাদের। দুর্নীতির কালো টাকা কলকাতা থেকে দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে হাওলার মাধ্যমে পাচার করা হয়েছিল বলেও তদন্তে প্রকাশ। কালো টাকা পাচারের সমস্ত নথি এবং দুর্নীতির অন‍্য নথি আদালতে পেশ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন মামলার তদন্তকারী অফিসার।

ইডির আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র বলেন, “বছর সাতেক আগে ওই মামলার চার্জশিট বিচার ভবনের সিবিআই বিশেষ আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। গোদালা কিরণ কুমার ও সপ্তর্ষি পালের বিরুদ্ধে চার্জগঠন এবং বিচার প্রক্রিয়া শুরুরজন্য বার বার রাজ‍্যের সম্মতিরচেয়েও সাড়া মেলেনি। পরে রাজ্যপালের কাছ থেকে সম্মতিপত্র মেলে। আদালতে সম্প্রতি তা জমা দেওয়া হয়েছে। বিচারক চার্জ গঠনের শুনানির দিন ধার্য করেছেন।” কিরণ কুমারের দাবি, “রাজ্য সরকারের সম্মতি ছাড়া ওই মামলার চার্জশিট পেশ এবং চার্জ গঠন সম্ভব না। এ ক্ষেত্রে রাজ্যপালের সম্মতি আইনসঙ্গত‌ নয়। তা ছাড়া নিম্ন আদালতের নির্দেশের প্রেক্ষিতে হাই কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে। যা এখনও বিচারাধীন। আমি কোনও ভাবে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নই। ইডির তরফে মামলার সম্পূর্ণ নথি আদালতে পেশ করা হয়নি।”

ইডির আইনজীবী অভিজিৎ বলেন, “রাজ্যপালের সম্মতি অনুযায়ী ওই মামলার চার্জ গঠনের মান্যতা দিয়েছে বিচার ভবনের সিবিআই বিশেষ আদালতের বিচারক। তদন্ত সংক্রান্ত সব নথি আদালতে পেশ করা হয়েছে। পাশাপাশি অভিযুক্তদের আইনজীবীদের হাতে কয়েক মাস আগে ওই নথি তুলে দেওয়া হয়েছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Enforcement Directorate godala kiran kumar financial corruption

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy