অনুব্রত মণ্ডল। ফাইল চিত্র।
গরু পাচার মামলায় অনুব্রত ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা, চালকল মালিক রাজীব ভট্টাচার্যকে এ নিয়ে পরপর তিন দিন দিল্লিতে নিজেদের সদর দফতরে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি)-র অফিসারেরা। আজ রাত সাতটা নাগাদ ইডি দফতর ছেড়ে বেরিয়ে যান রাজীব। তাঁকে সোমবারও হাজিরা দিতে বলা হয়েছে বলে তাঁর আইনজীবী সূত্রে খবর। গতকাল হাজিরা দিলেও, আজ তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত, সিউড়ির পাথর ব্যবসায়ী টুলু মণ্ডল অবশ্য ইডি দফতরে যাননি। তবে টুলুকে সোমবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিল্লিতে ইডি সদর দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
গতকাল রাত প্রায় ন’টা পর্যন্ত দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় রাজীব ও টুলুকে। ইডি-র দাবি, কিছু বিষয়ে অসঙ্গতি পাওয়ায় আজ ফের সকালে ডেকে পাঠানো হয় রাজীবকে। সারাদিনে তিনি দু’বার বাইরে আসেন। পরে বিকাল থেকে তৃতীয় দফার জেরা শুরু করেন তদন্তকারী অফিসারেরা। যা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। পরে সাতটা নাগাদ হাসিমুখে ইডির দফতর থকে বেরিয়ে আসেন তিনি।
সূত্রের মতে, আজ মূলত অনুব্রত মণ্ডলকে ৬৬ লক্ষ টাকা দেওয়া নিয়েই রাজীবকে প্রশ্ন করা হয়। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিনি কি জানতেন যে ওই সময়ে অনুব্রতের স্ত্রী হাসপাতালে ভর্তি? তাঁর দেওয়া টাকা কি অনুব্রতের স্ত্রীর চিকিৎসায় ব্যবহার হয়েছিল? রাজীবের আইনজীবী সঞ্জীবকুমার দাঁ বলেন, “আমার মক্কেল তদন্তে প্রথম থেকেই সহযোগিতা করে আসছেন। দিল্লিতে এসেও উনি তদন্তকারীদের সহযোগিতা করছেন।”
একাধিক সূত্রে জানা গিয়েছে, অনুব্রত-কন্যা সুকন্যা মণ্ডল ও অনুব্রতর হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারিকেও ইডি প্রাথমিকভাবে দিল্লি সদর দফতরে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাঁদের কাছ থেকে বেশ কিছু নথিপত্র জমা নেওয়া হয়েছে। আগামী দু-একদিনের মধ্যে তাঁদের জেলায় ফেরার কথা রয়েছে বলে সূত্রের খবর।
গরু পাচার মামলায় অন্যতম ধৃত অনুব্রতের দেহরক্ষী সেহগাল হোসেনের সঙ্গে টুলুর কী সম্পর্ক ছিল, গরু পাচার সংক্রান্ত কোনও লেনদেন হয়েছিল কি না, সে সবই বিশদে তদন্তকারীরা টুলুর কাছে জানতে চান বলে সূত্রে খবর। তদন্তকারীদের দাবি, সেহগালকে জেরা করে জানা যায়, পাথর-বালি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও লাভের যে অংশ সেহগালের কাছে পৌঁছত, তা বীরভূম ও কলকাতার কয়েক জন প্রভাবশালীর কাছে যেত। সেই ঘটনাতেও টুলুর নাম উঠে এসেছে। তদন্তকারীরা সেহগালের সঙ্গে টুলুর একাধিক আর্থিক লেনদেনের যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন বলে ইডির সূত্রে দাবি। গত অগস্ট মাসে টুলুর সিউড়ির দু’টি বাড়িতেও তল্লাশি চালান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা। সেখান থেকে বেশ কিছু নথি সংগ্রহ করা হয় বলে দাবি সিবিআইয়ের। পরে সেই নথি ইডির হাতে তুলে দেওয়া হয়। এর পর ইডি টুলুকে একাধিকবার জিজ্ঞাসা করেছে। শুক্রবার তাঁকে দিল্লিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়। সেই মতো শুক্রবার ইডির সদর দফতরে হাজিরা দেন টুলু মণ্ডল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy