নিমেষে তদন্তের শেষ পর্যায়ে পৌঁছোনো সম্ভব নয়। ইডি আধিকারিকেরা ‘সুপার হিউম্যান’ বা অতিমানব নন যে, মুহূর্তের মধ্যে তদন্ত শেষ করে ফেলবে। সমস্ত নথি খতিয়ে দেখেই তদন্ত চলছে। এই যুক্তিতে নিয়োগ মামলায় ধৃত তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার জামিনের আর্জির বিরোধিতা করল ইডি।
নিয়োগ মামলায় জীবনকে প্রথম গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। পরে তিনি সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পান। সম্প্রতি তৃণমূলের সেই জীবন আবার গ্রেফতার হন। এ বার ইডির হাতে। বর্তমানে তিনি জেল হেফাজতে রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে কলকাতার বিচারভবনে জামিনের আর্জি জানিয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক। বৃহস্পতিবার সেই আবেদনেরই শুনানি ছিল।
আদালতে জীবনের আইনজীবী জানান, সিবিআই যে অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর মক্কেলকে গ্রেফতার করেছিল, ইডিও সেই একই অভিযোগেই গ্রেফতার করেছে। কিন্তু সিবিআইয়ের মামলা জীবন ইতিমধ্যেই জামিন পেয়ে গিয়েছিলেন। জীবনের আইনজীবীর আরও যুক্তি, তাঁর মক্কেল বিধানসভার সদস্য। তাঁর অনেক কাজকর্ম রয়েছে। সেই কারণেও তাঁকে জামিন দেওয়া হোক।
পাল্টা ইডির যুক্তি, জীবনকে হাজিরা দেওয়ার জন্য সমন পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি হাজিরা দেননি। এর প্রেক্ষিতে বিচারক বলেন, ‘‘আর্থিক দুর্নীতির তদন্তে কোনও বাধা দেওয়া যায় না।’’
জামিনের বিরোধিতা করে আর এক তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন ইডির আইনজীবী। সুপ্রিম কোর্টের রায় উল্লেখ করে তাঁর যুক্তি, মানিক সিবিআইয়ের মামলায় রক্ষাকবচ পেয়ে থাকলেও, আর্থিক দুর্নীতি স্বতন্ত্র বিষয়। ইডির হাতে মানিকের গ্রেফতারিতে কিন্তু ওই রক্ষাকবচ বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি।
ইডির আইনজীবী জানিয়েছেন, ধৃতের পরিবারের বয়ান সংগ্রহ করা হয়েছে। একে অপরের সঙ্গে যুক্ত কিছু লেনদেনের হদিসও মিলেছে। পাশাপাশি কিছু ব্যাঙ্কিং লেনদেন খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিয়োগ দুর্নীতির টাকা কোন কোন হাতে গিয়েছে, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে তা।
শুনানিতে বিচারক জানতে চেয়েছিলেন, জীবন সিবিআইয়ের ক’টি মামলায় অভিযুক্ত? জবাবে ইডির আইনজীবী জানান, জীবন বর্তমানে সিবিআইয়ের একটি মামলায় অভিযুক্ত। আর একটি মামলায় জামিনে মুক্ত। আইনজীবীর কথায়, ‘‘নগদ লেনদেনের অজুহাত দিচ্ছেন উনি। কিছু টাকা উপহার হিসাবে পেয়েছেন বলেও দাবি করেছেন। আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়াদের সাহায্য না করেই টাকা দিয়েছেন।’’