গ্রাফিক— সনৎ সিংহ
রেশন দুর্নীতির তদন্তে রাজ্য পুলিশের ভূমিকায় বিস্মিত ইডি! তদন্তে নেমে তারা জানতে পেরেছে, রেশন দুর্নীতি সংক্রান্ত ছ’টি এফআইআর রাজ্যের পুলিশের তদন্তাধীন থাকা সত্ত্বেও পুলিশ অপরাধীকে ধরা তো দূর তাদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপই করেনি। উপরন্তু কোনও কোনও ক্ষেত্রে তথ্য প্রমাণ হাতে থাকা সত্ত্বেও তদন্ত বন্ধ করে রেখেছে। শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টে এই মর্মে একটি আর্জি জানিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। হাই কোর্টকে তাদের অনুরোধ, রেশন সংক্রান্ত যে সমস্ত মামলা রাজ্য পুলিশের তদন্তাধীন ছিল, তা যেন সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
বাংলায় রেশন সংক্রান্ত আর্থিক দুর্নীতির তদন্ত করছে ইডি। তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই তারা গ্রেফতার করেছে রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। একই সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ব্যবসায়ী তথা চাল-গমের মিলের মালিক বাকিবুর রহমান এবং বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যকেও। রেশন কাণ্ডে তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা সন্দেশখালির শাহজাহান শেখকেও খুঁজছে ইডি। অথচ রেশন দুর্নীতি সংক্রান্ত ছ’টি এফআইআর ২০১৬ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে পুলিশের কাছে দায়ের হওয়া সত্ত্বেও তারা এ ব্যাপারে কোনও রকম পদক্ষেপ করেনি। হাই কোর্টকে ইডি বলেছে, ‘‘রাজ্যের তরফে রেশন দুর্নীতির তদন্ত এগিয়েছে এক তরফা ভাবে। কারণ রেশন বণ্টন এবং ধান কেনার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং মন্ত্রী জড়িত ছিলেন। অথচ তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। উপযুক্ত নথি ও তথ্যপ্রমাণ থাকা সত্ত্বেও বন্ধ করে রাখা হয়েছিল তদন্ত।’’
শুধু তা-ই নয়, রেশন সংক্রান্ত মামলাগুলির ব্যাপারে রাজ্য পুলিশের কাছ থেকে উত্তর চেয়েও পাওয়া যায়নি বলে হাই কোর্টকে জানিয়েছে ইডি। রেশন সংক্রান্ত ছ’টি মামলার মধ্যে দু’টি এফআইআর দায়ের হয়েছিল কলকাতায়। বাকি চারটি দায়ের হয় নদিয়া জেলায়। ইডি এই এফআইআরের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু করেছিল। শুক্রবার হাই কোর্টকে তারা জানিয়েছে, ‘‘মামলাগুলির কি অগ্রগতি হয়েছে, তা জানতে চেয়ে রাজ্য পুলিশের ডি়জিকে চিঠি দিয়েছিল তারা। একই সঙ্গে এই মামলায় যুক্ত থাকা ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও চিঠি দেওয়া হয়েছিল ডিজিপিকে। কিন্তু কোনও প্রশ্নেরই জবাব আসেনি।’’ হাই কোর্টে তাই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি জানিয়েছে, রেশন দুর্নীতির তদন্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে রাজ্যের পুলিশ। আর এই যুক্তিতেই রেশন দুর্নীতি নিয়ে রাজ্য পুলিশের সমস্ত মামলার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে বলেছে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy