Advertisement
E-Paper

ফের বাইরে প্রশ্ন, মোবাইলে খড়্গহস্ত পার্থ

অস্বস্তি এতটাই যে, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ তুললেন, সরকারকে কালিমালিপ্ত করার জন্যই এ-সব করা হচ্ছে। দফায় দফায় তলব করলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:১২

প্রথম দিনের পুনরাবৃত্তি হল দ্বিতীয় দিনেও। বাংলার মতো বুধবার পরীক্ষা চলাকালীন ইংরেজির প্রশ্নপত্রও চলে এল বাইরে। সৌজন্যে মোবাইল! পরপর দু’দিন মাধ্যমিকের প্রশ্ন বাইরে চলে আসায় অস্বস্তিতে রাজ্য সরকার।

অস্বস্তি এতটাই যে, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ তুললেন, সরকারকে কালিমালিপ্ত করার জন্যই এ-সব করা হচ্ছে। দফায় দফায় তলব করলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে। শিক্ষামন্ত্রী জানিয়ে দেন, কোনও ‘গ্যাজেট’ নিয়ে ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে পারবে না। কেউ যদি ঢোকে, তা হলে তার পরীক্ষা বাতিল হবে। কোনও শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীর কাছে মোবাইল পাওয়া গেলে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে তাঁর বিরুদ্ধেও।

মঙ্গলবার মোবাইলের মাধ্যমে বাংলার প্রশ্ন বেরিয়ে যাওয়ার পরে পর্ষদ-প্রধানের দাবি ছিল, এটাকে প্রশ্ন ফাঁস বলা যায় না। হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ইংরেজির প্রশ্ন এ দিন বাইরে চলে আসার পরে শিক্ষামন্ত্রী তাঁকে আর কিছু বলতে দেননি। এই বিষয়ে বলার দায়িত্ব নেন নিজেই। পরীক্ষার পরে পর্ষদ-প্রধানকে নিজের দফতরে ডাকেন পার্থবাবু। কল্যাণময়বাবু কথা বলে ফিরে যাওয়ার পরে রাতে আবার তাঁকে ডেকে পাঠান। তাঁকে মাধ্যমিক নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করতে বারণ করে দেন। তবে পার্থবাবুর মন্তব্য, দু’দিন ধরে যা হচ্ছে, সেটা প্রশ্ন ফাঁস নয়। প্রশ্ন ফাঁস তখনই বলা যায়, যখন পরীক্ষা শুরুর আগে প্রশ্ন বেরিয়ে যায়।

নিরাপত্তায় বজ্র আঁটুনির দাবি করছে পর্ষদ। তবু যে বারবার প্রশ্ন বেরিয়ে যাচ্ছে, তার জন্য আঙুল উঠছে মোবাইলের দিকেই। পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল নিষিদ্ধ করা সত্ত্বেও নির্দেশ মানা হচ্ছে না এবং সরকারকে কালিমালিপ্ত করতেই এটা করা হচ্ছে বলে শিক্ষামন্ত্রীর অভিযোগ। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় যে গাফিলতি আছে, তা-ও স্বীকার করে নেন পার্থবাবু। বলেন, ‘‘আমাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। যদি থাকত, পুলিশ যদি সকলকে তল্লাশ করত, তা হলে হয়তো অনেক কিছু করা যেত। সেখানেও সমস্যা আছে। যেই না সকলকে তল্লাশ করা হবে, অভিযোগ উঠবে, পুলিশকে দিয়ে সার্চ হচ্ছে!’’

‘‘পর্ষদ-সভাপতিকে বলে দিয়েছি, ‘মোবাইল নিয়ে ঢুকবেন না’ এই কথাটা মুখে বললে চলবে না, এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করতে হবে। পর্ষদকে আরও কঠোর হতে হবে,’’ বলেন শিক্ষামন্ত্রী। পার্থবাবু জানান, ভেনু সুপারভাইজার, ডিএম, এসপি-সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে তিনি বলে দিয়েছেন, কেউ মোবাইল নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকছে কি না, সেটা ভাল করে দেখতে হবে। এই বিষয়ে পর্ষদের রিপোর্টও চেয়েছেন তিনি।

পার্থবাবু জানান, যাঁরা পরীক্ষার দায়িত্বে আছেন, তাঁরা দায় এড়াতে পারেন না। গাফিলতি প্রমাণিত হলে তাঁদের বিরুদ্ধেও কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মোবাইল থাকার কথা ভেনু সুপারভাইজার অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা ভারপ্রাপ্ত প্রধান, ভেনু ইনচার্জ অর্থাৎ সরকারের প্রতিনিধি, অ্যাডিশনাল ভেনু সুপারভাইজার অর্থাৎ অন্য স্কুলের শিক্ষক (যে-স্কুলে পরীক্ষা হচ্ছে না), পর্ষদ থেকে আসা সেন্টার সেক্রেটারি ও সেন্টার ইনচার্জের কাছে।

পার্থবাবু জানান, মালদহে মোবাইল-সহ এক জন ধরা পড়েছে। এ ছাড়াও বেশ কয়েক জনের কাছে মোবাইল পাওয়া গিয়েছে। কেউ হয়তো দু’‌টো মোবাইল নিয়ে গিয়ে একটা জমা দিচ্ছে। অন্যটা দিচ্ছে না।

এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় পর্ষদের ভূমিকায় তিনি যে আদৌ খুশি নন, পার্থবাবু এ দিন সেটা স্পষ্ট বুঝিয়ে দেন। এ বারের পরীক্ষা পরিচালনায় শিক্ষকদের ভূমিকা কার্যত না-থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। পশ্চিম মেদিনীপুরে ডেবরার পাঁচবেড়িয়া হাইস্কুলে ঘর না-থাকায় প্যান্ডেলে পরীক্ষা দিতে হয়েছে পড়ুয়াদের। মন্ত্রী তাতেও ক্ষুব্ধ। তাঁর মতে, মাধ্যমিকের মতো বড় পরীক্ষায় কোথায় কোন স্কুলের পরিকাঠামো কেমন, পর্ষদের সেটা জানা উচিত। পর্ষদ এটা জানলে এমন সমস্যা হত না।

আজ, বৃহস্পতিবার পরীক্ষা নেই। কাল, শুক্রবার হবে ইতিহাস পরীক্ষা।

Madhyamik Pariksha Mobile Phone School education Department Partha Chatterjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy