মোর্চার ডাকা দু’দিনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধর্মঘটের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার দার্জিলিং ও কালিম্পং এর অধিকাংশ স্কুল কলেজ বন্ধ ছিল। তাই পাহাড়ের মানুষ তাঁদের সঙ্গেই রয়েছেন বলে দাবি করলেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ।
তবে শিক্ষা দফতরে খবর, হুমকি-ফতোয়া উপেক্ষা করে আবাসিক কিছু স্কুলে এ দিন পড়াশোনা হয়েছে। সরকারি স্কুলেও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ উপস্থিত হয়েছেন। পাহাড়ের তৃণমূল নেতারা তাই পাল্টা দাবি করেন, কিছু স্কুলে পড়াশোনা হওয়াটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। তৃণমূল নেতা বিন্নি শর্মার মন্তব্য, ‘‘এতেই স্পষ্ট, স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা নিয়ে মোর্চার ফতোয়ায় ছাত্র-শিক্ষক ও অভিভাবক মহলে তুমুল ক্ষোভ দানা বেঁধেছে।’’
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটের ডাক দিলেও পিকেটিংয়ের রাস্তায় হাঁটেনি গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। অতীতে যে কোনও বন্ধ বা ধর্মঘটে মোর্চার ছাত্র সংগঠন স্কুল-কলেজের সামনে বিক্ষোভ, পিকেটিং করলেও এ বার তা দেখা যায়নি। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছিল, কোথাও পিকেটিং হলেই কড়া আইনি পদক্ষেপ করা হবে। সে কথা মাথায় রেখেই মোর্চা নেতারা কর্মীদের অবরোধ-বিক্ষোভে যেতে নিষেধ করেন বলে দল সূত্রের খবর। যদিও দিনের শেষে মোর্চার তরফে দাবি, তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেন, এটা বোঝাতেই অবরোধ, জবরদস্তির রাস্তায় হাঁটেননি। মোর্চা সভাপতি বলেন, ‘‘নেপালিভাষীদের ওপরে বাংলা জবরদস্তি চাপানোর চেষ্টা হলে গোটা পাহাড় যে একজোট হয়ে রুখবে সেটা স্কুল-কলেজ ধর্মঘটে সাড়া থেকেই স্পষ্ট।’’ যদিও পাহাড়ের স্কুলগুলিতে বাংলা আবশ্যিক করার পরিকল্পনা তাদের নেই বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার।
আজ, শুক্রবারও স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার ফতোয়া রয়েছে মোর্চার। পাহাড়ের একাধিক মিশনারি স্কুলের পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কর্তাব্যক্তিদের কয়েক জন একান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করে জানান, দু’দিন পড়াশোনা বন্ধ থাকায় সমস্যা হবে। একাধিক শিক্ষক জানান, পড়াশোনা বন্ধ রেখে আন্দোলনের ফল যে ভাল হয় না তা অতীতেও অনেক দল বুঝেছে। শিক্ষকদের একাংশের ধারণা, পুলিশ-প্রশাসন আরও কড়া মনোভাব নিলে আগামী দিনে যখন-তখন স্কুল বন্ধ করার প্রবণতা কমবে।