E-Paper

বিএলও নিয়োগ নিয়ে জটিলতা, কড়া বার্তা কমিশনের

এ রাজ্যে বেশির ভাগ বিএলও-ই আগে ছিলেন আংশিক সময়ের বা চুক্তিভিত্তিক কর্মী। এখন কমিশনের অবস্থান— এই পদে স্থায়ী সরকারি কর্মীরাই নিযুক্ত হবেন। কোথাও সেই সংখ্যক কর্মী পাওয়া না গেলে লিখিত ভাবে তা কমিশনকে জানাতে হবে জেলা-কর্তাদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৫ ০৬:৫৪
বুথ লেভেল আধিকারিক (বিএলও) নিয়োগ নিয়ে জটিলতা দেখা দেওয়ায় বিদ‍্যালয় শিক্ষা দফতরকে কড়া বার্তা পাঠাল কমিশন।

বুথ লেভেল আধিকারিক (বিএলও) নিয়োগ নিয়ে জটিলতা দেখা দেওয়ায় বিদ‍্যালয় শিক্ষা দফতরকে কড়া বার্তা পাঠাল কমিশন। —প্রতীকী চিত্র।

নিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার কথা ছিল ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। কারণ, সেই প্রস্তুতি দেখেই এ রাজ্যে ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) কাজ শুরু করবে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। কিন্তু এর মধ্যেই বুথ লেভেল আধিকারিক (বিএলও) নিয়োগ নিয়ে জটিলতা দেখা দেওয়ায় বিদ‍্যালয় শিক্ষা দফতরকে কড়া বার্তা পাঠাল কমিশন। লিখিত সেই বার্তায় জানানো হয়েছে, শিক্ষকদের যাঁরা বিএলও হিসেবে যুক্ত হননি, তাঁদের দ্রুত সেই নিয়োগপত্র গ্রহণ করাতে হবে শিক্ষা দফতরকে। অন‍্যথায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।

কিছু দিন আগে ওই দফতরের সচিব বিনোদ কুমারকে রাজ্যের মুখ‍্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর জানিয়েছে, একাধিক জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিকের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা বিএলও-র নিয়োগপত্র গ্রহণ করছেন না। সেই প্রত‍্যাখ‍্যানের সাপেক্ষে কারণ দর্শানোর নোটিসেরও (শো-কজ়) জবাব দেওয়া হচ্ছে না। কমিশন শিক্ষাসচিবকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে, এই ধরনের আচরণ ভাল ভাবে গৃহীত হবে না। কারণ, বিএলও নিয়ে আদালতেরও সুনির্দিষ্ট রায় রয়েছে। যা সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এই আচরণের সঙ্গে মানানসই নয়। এই পরিস্থিতিতে সেই সব শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দ্রুত বিএলও-র কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিতে শিক্ষাসচিবকে দায়িত্ব দিয়েছে কমিশন। তার পরেও তাঁরা নির্দেশ অগ্রাহ্য করলে বিনা নোটিসেই আইনি পদক্ষেপ করবে কমিশন।

প্রসঙ্গত, এ রাজ্যে বেশির ভাগ বিএলও-ই আগে ছিলেন আংশিক সময়ের বা চুক্তিভিত্তিক কর্মী। এখন কমিশনের অবস্থান— এই পদে স্থায়ী সরকারি কর্মীরাই নিযুক্ত হবেন। কোথাও সেই সংখ্যক কর্মী পাওয়া না গেলে লিখিত ভাবে তা কমিশনকে জানাতে হবে জেলা-কর্তাদের। কমিশনের সিদ্ধান্ত মেনে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। এ ক্ষেত্রে বেশির ভাগ শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরই বিএলও হিসেবে নিয়োগ করছে জেলা প্রশাসনগুলি। তা নিয়ে যথেষ্ট আপত্তি রয়েছে শিক্ষকদের একাংশের। তারই ফলে এই নিয়োগপত্র প্রত‍্যাখ‍্যান। এ নিয়ে তাঁদের একাংশ মামলা করলেও লাভ হয়নি। অভিজ্ঞ কমিশন-কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, সরকারি কর্মীদের প্রয়োজন ভিত্তিতে নির্বাচনের কাজে নিযুক্ত হতে হয়। সেটাও তাঁদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। শারীরিক বা অতি জরুরি পারিবারিক কারণে কমিশনের কাছে আবেদন করলে অব্যাহতি দেওয়া হয় মানবিক দিক থেকে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সে সব কিছু ছিল না বলে দাবি কমিশন সূত্রের।

সংশ্লিষ্ট মহল জানাচ্ছে, এ বছর বিএলও নিয়োগের নতুন বিধি স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল জেলা প্রশাসনগুলিকে। তার পরে তারাই বিএলও নিয়োগ করতে থাকে। এ ক্ষেত্রে কোন ধরনের কর্মীদের নিয়োগ করা হবে, তা বলে দেয়নি কমিশন। শুধু নিযুক্ত বিএলও স্থায়ী সরকারি চাকুরিরত কি না, তা দেখে নিচ্ছে তারা। ফলে নিয়োগ এবং নিয়োগপত্রের প্রত্যাখ্যান—সবই দায়িত্ব থেকে যায় জেলা প্রশাসনগুলির উপর। সেই কারণে বিধি মেনে যাঁরা নিয়োগপত্র গ্রহণ করেননি, তাঁদের শো-কজ় করা হয়েছিল। কিন্তু তারও মান্যতা পায়নি।

অন্যদিকে, জেলা প্রশাসনগুলি জানাচ্ছে, এ বছর বুথ (ভোটকেন্দ্র) পুনর্বিন্যাসের কারণে ১৩,৮১৬টি বুথ বাড়ার কথা। এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে অত সংখ্যক বিএলও ফের নিয়োগ করতে হবে। এমনকি, ওই সংখ্যার কিছু অংশ ‘রিজ়ার্ভ’ রাখা এবং বিএলও সুপারভাইজ়ার পদে আরও কিছু নিয়োগ করতে হবে অতিরিক্ত। ফলে নিয়োগের চাপ ক্রমশ বাড়ছে। এই অবস্থায় চলতি জট না কাটলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে বলে জেলা-কর্তাদের একাংশের আশঙ্কা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Election Commission SIR

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy