একই দিনে বা স্বল্প সময়ের মধ্যে একগাদা নতুন ভোটারের আবেদনপত্র গৃহীত হচ্ছে কি না, জেলাশাসকদের তা অডিট করার বার্তা দিল নির্বাচন কমিশন। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) দফতরের মাধ্যমে সেই বার্তায় এ-ও বলা হয়েছে, বুথ লেভেল অফিসারদের (বিএলও) রিপোর্ট এড়িয়ে এমন ঘটনার নজির মিলছে। যা করার কথা নয় ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসারদের (ইআরও)। তাই গত এক বছরে নতুন ভোটার আবেদনের নমুনা যাচাইয়ের পাশাপাশি, এই অডিট করে রিপোর্ট দিতে হবে জেলা নির্বাচনী আধিকারিক তথা জেলাশাসকদের।
কমিশন কর্তাদের বক্তব্য, ভোটার তালিকায় নাম তোলাতে যে নতুন আবেদন (ফর্ম-৬) জমা পড়ে, তার প্রেক্ষিতে বিএলও প্রাথমিক যাচাই করে একটি রিপোর্ট দেন। তাতে সংশ্লিষ্ট আবেদনকারীর নাম তালিকাভুক্ত হওয়া ন্যায্য কি না, তা বলা থাকে। কমিশন জেলাশাসকদের জানিয়েছে, এমন প্রমাণ রয়েছে, যেখানে বিএলও-দের রিপোর্টকে গুরুত্ব দেওয়াই হয়নি। বরং এক জন ইআরও একসঙ্গে ৪১টি নতুন আবেদনপত্র মেনে নিয়েছেন, বাস্তবে যেগুলির ব্যক্তি-অস্তিত্ব নেই। আবার আর এক জন ইআরও একসঙ্গে এমনই ৫৯টি আবেদনপত্র মেনে নিয়েছেন! এই সব ক্ষেত্রে বিএলও-দের এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। এমনকি, এত সংখ্যক আবেদনপত্র একই দিনে আধ-এক ঘণ্টার মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে। সাধারণ নিয়মে যা হওয়ার কথা নয়। তাই স্বল্প সময়ে বা একই দিনে একলপ্তে বিপুল সংখ্যক আবেদন অনুমোদনের ঘটনাগুলি অডিট করে জেলাশাসকদের রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।
এই অবস্থায় ইআরও-দের জানানো হয়েছে, তাঁরা যেন কোনও ভাবেই বিএলও-দের রিপোর্ট ছাড়া আবেদনপত্র অনুমোদন না করেন। জেলাশাসকদেরও বলা হয়েছে, তাঁরা কোনও সংস্থার মাধ্যমে ডেটা-এন্ট্রি অপারেটরদের চুক্তিভিত্তিতে নিয়োগ করে থাকলে সেই তথ্যও (গত পাঁচ বছরের) যেন জমা করা হয় সিইও কার্যালয়ে। প্রসঙ্গত, এই তথ্য নথিবদ্ধ করার দায়িত্বপ্রাপ্তরা কমিশনের নজরে এসেছেন। জেলাশাসকদের সঙ্গে গত বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁদের এ বিষয়ে চোখ-কান খোলা রাখতে বলেছিলেন বলে সূত্রের দাবি।
ভোটার তালিকায় অসাধু হস্তক্ষেপের অভিযোগে দুই ইআরও এবং দুই এইআরও-কে সাসপেন্ড করে শৃঙ্খলাভঙ্গের বিভাগীয় তদন্ত করতে বলেছে কমিশন। তাঁদের এবং একজন ডেটা-এন্ট্রি অপারেটরের বিরুদ্ধে এফআইআর-ও করতে বলা হয়েছে রাজ্যকে। মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে ২১ অগস্টের মধ্যে কমিশনের নির্দেশ কার্যকর করতে বলা হয়েছে বলে খবর। প্রশাসনিক সূত্রের অনুমান, আগামী সপ্তাহের গোড়াতেইএ ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত নিতেপারে নবান্ন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)