প্রথাগত ভাবে ভোটার তালিকা সংশোধন তথা নতুন নাম তোলা বা নাম বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে নির্ধারিত আধিকারিকদেরই দায়বদ্ধ করল নির্বাচন কমিশন। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, এ ক্ষেত্রে বলে দেওয়া হয়েছে, ইলেকশন রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ইআরও) বা অতিরিক্ত ইলেকশন রেজিস্ট্রেশন অফিসার (এইআরও) ছাড়া অন্য কেউ সে কাজে
হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। প্রসঙ্গত, অবৈধ ভাবে এ কাজে হস্তক্ষেপের অভিযোগে সম্প্রতি দক্ষিণ ২৪ পরগনার একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট সিস্টেম ম্যানেজারকে নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করেছে কমিশন। কমিশনের সাম্প্রতিক বার্তা সেই ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকদের একাংশ।
শনিবার নির্বাচনী কাজের সঙ্গে যুক্ত গোটা রাজ্যের ২৪টি জেলার ১১৬ জন আধিকারিককে নিয়ে বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) মনোজ আগরওয়াল। তার মধ্যে ছিলেন ১২ জন সিস্টেম ম্যানেজার, ৪৯ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সিস্টেম ম্যানেজার এবং ৫৫ জন ডেটা এন্ট্রি অপারেটর। সূত্রের দাবি, সেই বৈঠকেই কমিশন জানিয়ে
দিয়েছে, আবেদন যাচাই করে ভোটার তালিকায় নতুন নাম তোলা বা সেই তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন একমাত্র ইআরও অথবা এইআরও। এখন যেহেতু সব কাজটাই অনলাইনে হয়ে থাকে, ফলে এই দুই স্তরের আধিকারিকদের কাছে ‘ইউজ়ার নেম’ এবং পাসওয়ার্ড থাকে। ফলে তাঁরাই এ কাজ করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত। সংশ্লিষ্ট তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার দায়িত্ব তাঁদেরই। সিস্টেম ম্যানেজার বা অ্যাসিস্ট্যান্ট সিস্টেম ম্যানেজারেরা শুধুমাত্র তাঁদের কারিগরি দিক থেকে সহযোগিতা করতে পারেন।
প্রসঙ্গত, একটি অভিযোগের ভিত্তিতে কমিশন জানতে পেরেছিল, কাকদ্বীপ মহকুমায় কর্মরত একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট সিস্টেম ম্যানেজার অবৈধ ভাবে এক এইআরও-র ‘ইউজ়ার নেম’ এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে ভোটারদের কিছু আবেদন অনুমতি ছাড়াই নিষ্পত্তি করেছিলেন। সেই ঘটনা নিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসকের রিপোর্টের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট সিস্টেম ম্যানেজারকে সাসপেন্ড করেছে
সিইও কার্যালয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাচ্ছেন, এই শাস্তি দৃষ্টান্ত তৈরি করার জন্যই। যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। বস্তুত, ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ গোটা বছর ধরেই চলে। আগামী নভেম্বর থেকে বিশেষ ভাবে গোটা রাজ্যে সেই কাজ হবে। জানুয়ারি নাগাদ সংশোধিত ভোটার তালিকা প্রকাশ হওয়ার কথা। তার ভিত্তিতেই আগামী বছর বিধানসভার ভোট হবে। ফলে ভোটার তালিকা ত্রুটিমুক্ত রাখাই কমিশনের উদ্দেশ্য বলে দাবি
করছে তারা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)