বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা মালদহে কমিশন-কর্তাদের বৈঠকের দিন, বৃহস্পতিবার দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে চিঠি দিয়ে এসআইআর স্থগিত রাখার আর্জি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও এ দিনই এসআইআরের কাজের অগ্রগতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করছেন জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে থাকা কমিশন-কর্তারা। মালদহ জেলা প্রশাসনের সঙ্গে ওই বৈঠক করেন সিনিয়র উপ-নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ ভারতী, সিইও মনোজ আগরওয়াল, উপ নির্বাচন কমিশনার অভিনব আগরওয়াল, কমিশনের প্রধান সচিব এস বি জোশী এবং মলয় মল্লিক। বৈঠকে প্রস্তুতির সব দিক খতিয়ে দেখার পাশাপাশি তাঁদের আশ্বাস, সর্বশেষ ভোটার তালিকায় থাকা কোনও ব্যক্তি ফর্ম পাওয়া থেকে বাদ পড়বেন না। দুই বিএলও-র মৃত্যু প্রসঙ্গে রিপোর্টও চেয়েছে কমিশন।
বিএলও-দের সমস্যা নিয়েও বিভিন্ন প্রান্তে নানা অভিযোগ উঠছে। মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে লেখা চিঠিতে সেটারও উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিনের বৈঠকে সেই সমস্যা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে খবর। বুধবারই জলপাইগুড়িতে এক বিএলও-র মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। বৈঠকের পরে সিইও বলেন, “জলপাইগুড়িতে এক মহিলা বিএলওর মৃত্যু হয়েছে বলে শুনেছি। কী ভাবে মারা গেলেন, কী হয়েছিল, সমস্ত কিছুর রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট জেলার নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে চাওয়া হয়েছে। জেলাতে এসআইআর-এর কাজ ভাল ভাবেই চলছে।”
মালদহ রাজনৈতিক এবং ভৌগোলিক সমীকরণের দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২০০২ সালের এসআইআর-এ নিজের বা নিকটাত্মীয়ের নাম থাকা ভোটারদের এমনিতেই কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু যাঁদের মিল সেখানে থাকবে না, আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে তাঁদের মধ্যে। কমিশনের আশ্বাস, যোগ্য কোনও বাসিন্দারই সমস্যা হবে না এই পদ্ধতিতে। মিল না থাকা ভোটারদের থাকতে হবে শুনানিতে। দিলেই চলবে ১২-১৩টির মধ্যে যে কোনও একটি নথি। যাঁদের কোনও কারণে নথিপত্র সব নষ্ট হয়ে গিয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে খোঁজখবর করে সিদ্ধান্ত নেবেন ইআরও-রা। ফলে ইআরও-দের উপর যোগ্য-যাচাইয়ের প্রবল দায়িত্ব থেকে যাচ্ছে। মালদহে ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষজন এসআইআর নিয়ে উদ্বেগে। সিইও বলেন, “জেলা প্রশাসন সক্রিয় রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে থাকলে তাঁদের কোনও চিন্তার ব্যাপারই নেই।”
১৬টি বুথের প্রায় ১০-১২ হাজার বাসিন্দার নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিএলও অ্যাপে ওই সমস্যা তৈরি হয়েছে পুরুলিয়ায়। গোল বেধেছে বিএলও অ্যাপের তালিকায় বিএলওদের নাম না থাকায়। পুরুলিয়ার জেলাশাসক কোন্তম সুধীর বলেন, “যাতে বিএলও অ্যাপে ওই এলাকার ২০০২ সালের ভোটার তালিকা সংযোজিত হয়, তা নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে।”
আজ, শুক্রবার ইলেক্ট্রনিক ভোটযন্ত্রের প্রথম পর্যায়ের যাচাই এবং ব্যবহারবিধি নিয়ে জেলাশাসকদের বৈঠকে ডেকেছে কমিশন। ইভিএম যাচাই, কার্যকারিতার পরীক্ষা, কোনও ত্রুটি থাকলে তা ধরার পদ্ধতি, পরীক্ষার বিধি, স্ট্রং-রুম এবং মকপোল বিধি-সহ বিভিন্ন বিষয় ব্যাখ্যা করা হবে বলে সূত্রের খবর।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)