Advertisement
E-Paper

বঙ্গ পর্যটনে বাহন এ বার কর্নাটকি হাতি

রবি ঠাকুরের কবিতায় হাতির হাঁচি শোনার জন্য কেষ্টা নেপালকে বনে বনে ঘুরতে হয়েছিল। তার হাঁচি শোনা হয়েছিল কি না, তা জানা যায়নি।তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের বনকর্তারা ‘শিক্ষিত’ হাতির খোঁজে বিভিন্ন রাজ্য সফরে বেরিয়ে বিফল হননি।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৭ ০৩:১৬

রবি ঠাকুরের কবিতায় হাতির হাঁচি শোনার জন্য কেষ্টা নেপালকে বনে বনে ঘুরতে হয়েছিল। তার হাঁচি শোনা হয়েছিল কি না, তা জানা যায়নি।

তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের বনকর্তারা ‘শিক্ষিত’ হাতির খোঁজে বিভিন্ন রাজ্য সফরে বেরিয়ে বিফল হননি। সিদ্দারামাইয়ার কর্নাটক সরকার বাংলাকে ১৫টি হাতি উপহার দেবে বলে আশ্বস্ত করেছে। এবং সেই দক্ষিণিদের থেকে এ রাজ্যের ‘বাঙালি’ হাতিরা কিছু শিখে-পড়ে নেবে বলে আশা করছেন বনকর্তারা।

ক্ষমতাসীন হওয়ার পরে অন্তত একশো দিন উত্তরবঙ্গে কাটিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। ঘুরে দেখেছেন, থেকেছেন ডুয়ার্সের প্রায় প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্রে। পর্যটকদের কাছে উত্তরবঙ্গের জঙ্গলকে আরও আকর্ষক করে তোলার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাব ছিল, হাতি চড়ানোর ব্যবস্থা করা হোক। কিন্তু সেটা করতে হলে ঠিক যে-ধরনের হাতি দরকার, তার জোগান নেই রাজ্যে। অগত্যা শিক্ষিত হাতি কেনার প্রস্তাব দেন মমতা। তার পরেই হাতি খুঁজতে বিভিন্ন রাজ্য সফরে বেরিয়ে পড়েন বনকর্তারা।

রাজ্যের মুখ্য বনপাল প্রদীপ ব্যাসের কথায়, ‘‘কর্নাটক ১৫টি হাতি দিতে রাজি হয়েছে। বিনা পয়সাতেই দেবে। তবে কিছু খরচ করতে হলে তাতেও অসুবিধে নেই।’’ মুখ্যমন্ত্রীও জানিয়ে দিয়েছেন, হাতি পোষার খরচ জোগাতে অর্থের অভাব হবে না।

বাংলার হাতি-চিত্রটি বেশ রোমাঞ্চকর। উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ মিলিয়ে এ রাজ্যে প্রায় ৭০০ হাতি রয়েছে। দলমা বা নেপাল থেকে হাতি এলে সংখ্যা বাড়ে, তারা চলে গেলে যে-কে-সেই। হাতির আক্রমণে বছরে ৭০-৭৫ জনের মৃত্যু হয়। তাই এক দিকে উপদ্রব থামানো, অন্য দিকে প্রশিক্ষিত হাতিদের দিয়ে বন পাহারা বা পর্যটকদের মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করতে হয়। এবং সে-দিক থেকে এই রাজ্য এখনও কিছুটা পিছিয়ে।

কী রকম?

বনকর্তারা জানাচ্ছেন, এখন জলদাপাড়ায় পাঁচটি এবং গরুমারায় দু’টি হাতি পিঠে সওয়ারি নিতে পারে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী চান বলে এখন বেঙ্গল সাফারি, ডুয়ার্সের প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্র, ঝাড়গ্রাম, এমনকী নিউ টাউনের ইকো পার্কেও হাতির পিঠে চড়ার বন্দোবস্ত করার আবেদন জমা পড়েছে বন দফতরে। কর্তারা বলছেন, পিঠে চড়িয়ে ঘোরানোর জন্য লাগে পূর্ণবয়স্ক শান্ত স্বভাবের হাতি। বড় হাতি না-হলে পিঠে কাঠের পাটাতন পাতা যায় না। রাজ্যের হাতে যে-তিরিশটি প্রশিক্ষিত হাতি আছে, তারা বিভিন্ন বয়সের। তাদের মূলত বনে তল্লাশি ও চোরাশিকারিদের উপরে নজরদারি চালানো এবং মত্ত হাতিদের মোকাবিলায় ব্যবহার করা হয়। কন্নড় হাতিদের লাগানো হবে পর্যটক-সওয়ারির বহন ও বিনোদনের কাজে।

বনকর্তাদের আশা, মাসখানেকের মধ্যেই এসে পড়বে শিক্ষিত হাতির পাল। এক বনকর্তার রসিকতা, ‘‘চাকরির জন্য এ রাজ্যের শিক্ষিত বাঙালির অন্যতম গন্তব্য বেঙ্গালুরু। আর বেঙ্গালুরু-মহীশূরের শিক্ষিত হাতিরা ‘চাকরি’ নিয়ে আসছে এই বঙ্গে। আক্ষরিক অর্থেই উলটপুরাণ।’’

Karnataka Elephants West Bengal Tourism Dooars Tourist Place
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy