E-Paper

সংগঠনে মহিলা মুখ বৃদ্ধির জন্য তৎপর বিজেপি

রাজ্যে মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিরোধী দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বে মহিলা মুখ আনা যায় কি না, এই নিয়ে দলের অন্দরে দীর্ঘদিন ধরে চর্চা চলছে। কিন্তু শুধু শীর্ষ নেতৃত্বের জায়গায় মহিলা মুখ আনা যথেষ্ট নয় বলেই এই মুহূর্তে মনে করছেন পদ্ম শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্ব।

বিপ্রর্ষি চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ ০৬:২২

— প্রতীকী চিত্র।

‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে’র উল্টো দিকে নারী নির্যাতন!

এই ‘আখ্যান’কে সামনে রেখেই বিধানসভা নির্বাচনের আগে ঝাঁপাতে চাইছে বিজেপি। আর তার জন্য দলে মহিলা প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোয় গুরুত্ব দিচ্ছে তারা। বিজেপি সূত্রে খবর, দোলের আগেই মিটে যেতে পারে সংগঠন পর্ব। আর তার পরেই বাংলাদেশকে সামনে রেখে হিন্দুত্ব, মেদিনীপুরের প্রসূতি-মৃত্যুকে কেন্দ্র করে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়া এবং আর জি কর-কাণ্ডে আদালতের রায় নিয়ে রাজ্যে নারী নির্যাতনের অভিযোগকে সামনে রেখে বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে পারে বিজেপি।

রাজ্যে মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিরোধী দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বে মহিলা মুখ আনা যায় কি না, এই নিয়ে দলের অন্দরে দীর্ঘদিন ধরে চর্চা চলছে। কিন্তু শুধু শীর্ষ নেতৃত্বের জায়গায় মহিলা মুখ আনা যথেষ্ট নয় বলেই এই মুহূর্তে মনে করছেন পদ্ম শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্ব। তাঁদের একাংশের বক্তব্য, ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে’র সুবিধাভোগী একদম নিচু তলায় ছড়িয়ে রয়েছে। ফলে, সেই প্রচার ঠেকিয়ে পাল্টা প্রচার আখ্যান তৈরি করতে হলে নিচু তলাতেই মহিলা প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে হবে। তাঁরা দৃষ্টান্ত হিসেবে সন্দেশখালির ঘটনা তুলে ধরছেন। তাঁদের বক্তব্য, যখন পুলিশি ঘেরাটোপের কারণে বাইরে থেকে নেতারা সেখানে ঢুকতে পারেননি, এমনকি, স্থানীয় নেতাদের পুলিশ মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে ভরে দিয়েছিল, তখন স্থানীয় মহিলাদের নেতৃত্বে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে উঠেছিল। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী সন্দেশখালিতে সভা করে মহিলাদের জন্য রাজ্য সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি দিয়ে এসেছিলেন। পরের দিন গিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সেখানকার নারী নির্যাতন ও মহিলাদের পাল্টা লড়াইয়ের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে এসেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের বার্তার উল্টো দিকে নারী নির্যাতনের ‘বাস্তব চিত্র’— আগামী দিনে এই পদ্ধতিতেই লড়তে চাইছে বঙ্গ বিজেপি।

দলীয় সূত্রের খবর, নিচু তলায় মহিলা প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে। সংগঠন সম্পর্কিত দলীয় কর্মশালায় বলা হয়েছে, প্রতিটি মণ্ডলে এক জন মহিলা সদস্য রাখতেই হবে। আয়তন অনুযায়ী এক-একটি বিধানসভা কেন্দ্র বিজেপির দলীয় কাঠামোয় তিন থেকে পাঁচটি মণ্ডল নিয়ে গঠিত। বলা হয়েছে, প্রতিটি বিধানসভার অন্তত একটি মণ্ডল সভাপতিকে মহিলা হতেই হবে।

এরই পাশাপাশি বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বে মহিলা মুখ আসার সম্ভাবনাও রয়েছে। একটি সূত্রের খবর, বিরোধী দলনেতার মতও তেমনই। তবে একটি সূত্রের খবর, সভাপতি পদে সুকান্ত মজুমদার থেকে যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে তাঁকে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিতে হতে পরে। একটি অংশের বক্তব্য, বিধানসভা ভোটের আগে নতুন হাতে দায়িত্ব দিয়ে ফের সংগঠন সাজানোর পর্যাপ্ত সময় নেই, এই যুক্তিতে রাজ্য বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুনীল বনসল চাইছেন না সভাপতি পদে বদল হোক। তবে এই প্রসঙ্গে সুকান্তের বক্তব্য, “এই সংক্রান্ত কোনও নির্দেশ বা কোনও ইঙ্গিত আমি শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে পাইনি। আমার কোনও পছন্দ-অপছন্দ নেই। দল আমায় বুথ সভাপতি হয়ে কাজ করতে বললে, আমি সেটাই করব! কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হতে বললে সেটাই হব।”

যদিও দলের ওই অংশের দাবি, সুকান্ত উত্তরসূরি হিসেবে দু’বারের সাধারণ সম্পাদক, জনজাতি সম্প্রদায়ের এক সাংসদের পক্ষে তাঁর মত কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে জানিয়েছেন। তবে শেষ পর্যন্ত রাজ্য বিজেপির সভাপতি নির্বাচনে সঙ্ঘের মতামত নির্ণায়ক হয়ে উঠলে বঙ্গ বিজেপির এক পুরনো মুখকেই সভাপতি পদে দেখার সম্ভাবনা রয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

BJP Women Empowerment

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy