Advertisement
০৫ মে ২০২৪

আর্থিক বিধির বদল হোক, চান প্রযুক্তিবিদরা

ইঞ্জিনিয়ার মহলের একটি অংশের ব্যাখ্যা, পাঁচ লক্ষের বেশি টাকার প্রকল্পের ক্ষেত্রে ই-টেন্ডার ডাকতে হয়। পাঁচ লক্ষ পর্যন্ত টাকার প্রকল্পে দিতে হয় সাত দিনের নোটিস।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৮ ০২:১৪
Share: Save:

রাজ্য সরকারের আর্থিক নিয়মবিধির বাঁধন তো আছেই। তার উপরে রয়েছে দ্রুত কাজ করতে না-পারলে শাস্তি পাওয়ার আশঙ্কা। কাজের চাপের মধ্যে এই জোড়া আতঙ্ক থেকে রেহাই পেতে অর্থ দফতরের আর্থিক নিয়মবিধি সংশোধনের দাবি তুলছেন সরকারি ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ।

মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয়ের পরে সংলগ্ন এলাকায় যে-আপৎকালীন তৎপরতায় কাজ করতে হয়েছে, তাতে আর্থিক নিয়মবিধি মানা সম্ভব হয়নি। সেতু সংলগ্ন এলাকার প্রায় ন’কিলোমিটার রাস্তা আপৎকালীন দ্রুততায় সারাতে হয়েছে কলকাতা পুরসভাকে। কয়েক কোটি টাকার ওই কাজ করতে গিয়ে অর্থ দফতরের নিয়ম মানা যায়নি। সেতুভঙ্গের পরে শাস্তির খাঁড়া ঘাড়ের এসে পড়ার আশঙ্কায় সরকারি ইঞ্জিনিয়ারেরা তো ভুগছেনই। সেই সঙ্গে অডিটের দুশ্চিন্তাও ভোগাচ্ছে তাঁদের।

ইঞ্জিনিয়ার মহলের একটি অংশের ব্যাখ্যা, পাঁচ লক্ষের বেশি টাকার প্রকল্পের ক্ষেত্রে ই-টেন্ডার ডাকতে হয়। পাঁচ লক্ষ পর্যন্ত টাকার প্রকল্পে দিতে হয় সাত দিনের নোটিস। ১০ লক্ষ থেকে এক কোটি টাকার প্রকল্পে নোটিসের সময়সীমা ১৪ দিন। এক কোটির বেশি টাকার প্রকল্পের ক্ষেত্রে ২১ দিনের নোটিস দিতে হয়। ন্যূনতম তিনটি সংস্থা দরপত্র প্রক্রিয়ায় যোগ দিলে তবেই তা বৈধ বলে গণ্য হয়। নইলে ফের দরপত্র আহ্বান করতে হয়। ঠিকাদার দরপত্রে নির্ধারিত মূল্যের থেকে পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত বেশি অর্থ দাবি করলে তা মানা হবে কি না, সেটা নির্ভর করে টেন্ডার কমিটির উপরে। সেই টাকার পরিমাণ পাঁচ থেকে ১০ শতাংশ হলে সরকার অনুমোদিত টেন্ডার কমিটির অনুমোদন দরকার। তার বেশি হলে অর্থ দফতরের অনুমোদন দরকার।

নতুন প্রকল্প আর তার রক্ষণাবেক্ষণ— দুই ক্ষেত্রেই এই আর্থিক নিয়মবিধি মেনে চলতে হয়। ইঞ্জিনিয়ারদের একটা বড় অংশ প্রশ্ন তুলছেন, নতুন প্রকল্প বা দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারমূলক কাজের ক্ষেত্রে এই নিয়মবিধি মানা যুক্তিযুক্ত। কিন্তু আপৎকালীন পরিস্থিতিতে কী ভাবে তা মানা সম্ভব?

এক ইঞ্জিনিয়ারের কথায়, ‘‘এই নিয়ম মানতে গিয়ে দেরি হলে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ তোলা সহজ। নিয়ম না-মানলে চেপে ধরবে অডিট। সমস্যা হল, এই দুইয়ের কোনওটির ক্ষেত্রেই দফতরের অভিভাবক তথা শীর্ষ কর্তাদের পাশে পাওয়া যাবে না। তখন তাঁরা নিজেরা দায় ঝেড়ে ফেলতে ব্যস্ত থাকবেন।’’

তবে আধিকারিকদের একাংশের ধারণা, সময়ের গুরুত্ব এবং চাহিদা মানতে গিয়ে যে-সব কাজ নিয়ম না-মেনে দরপত্র ছাড়া এখন করতে হচ্ছে, আগামী দিনে রাজ্য মন্ত্রিসভা সেগুলির অনুমোদন দিয়ে দেবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bridge Financial Rules Engineers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE