Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

রকমারি আম সংরক্ষণের দাবি উৎসবে

প্রকাণ্ড মাঠটার এক কোনে মঞ্চ। মঞ্চের সামনে একটু উঁচুতে সার দিয়ে ডালপালা সমেত ঝুলছে হিমসাগর, গোলাপখাস আর ফজলি, মিঠুয়া, মধুকুলকুলি, আম্রপালি কিংবা মিছরিখাস, লালমণি, ল্যাংড়ার মতো প্রায় চোদ্দো রকমের কুলীন আম। গাছ থেকে সদ্য ছিঁড়ে আনা সে সব আমের গা বেয়ে তখনও আঠা গড়াচ্ছে।

উৎসব মঞ্চের পিছনে কাটা হচ্ছে নানা জাতের আম।—নিজস্ব চিত্র।

উৎসব মঞ্চের পিছনে কাটা হচ্ছে নানা জাতের আম।—নিজস্ব চিত্র।

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়
পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৫ ০২:০৯
Share: Save:

প্রকাণ্ড মাঠটার এক কোনে মঞ্চ। মঞ্চের সামনে একটু উঁচুতে সার দিয়ে ডালপালা সমেত ঝুলছে হিমসাগর, গোলাপখাস আর ফজলি, মিঠুয়া, মধুকুলকুলি, আম্রপালি কিংবা মিছরিখাস, লালমণি, ল্যাংড়ার মতো প্রায় চোদ্দো রকমের কুলীন আম। গাছ থেকে সদ্য ছিঁড়ে আনা সে সব আমের গা বেয়ে তখনও আঠা গড়াচ্ছে। মঞ্চের ঠিক পিছনে বড় দালানে চার-পাঁচ জনে নাগাড়ে কেটে চলেছেন ওই সব আম। জ্যৈষ্ঠ সন্ধ্যার পাগল হাওয়ায় পূর্বস্থলী স্টেশন লাগোয়া মাঠ তখন পাকা আমের গন্ধে ম ম করছে।

এমন মনকাড়া পরিবেশে শনিবার সন্ধ্যায় পূর্বস্থলীতে আম উৎসবের সূচনা করলেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। পূর্বস্থলী সাংস্কৃতিক মঞ্চের উদ্যোগে এই উৎসব দক্ষিণবঙ্গের প্রথম আম উৎসব বলে দাবি করেছেন আয়োজকেরা। ওই উৎসবের উদ্বোধন করে স্বপন দেবনাথও উদ্যোক্তাদের দাবিকে সমর্থন জানিয়েছেনছেন। তিনি বলেন, ‘‘পূর্বস্থলীতে ফি-বছর প্রচুর আম হয়। ক্রমশ তার পরিমাণ বাড়ছে। আশপাশের রাজ্যগুলিতে যত আম সরবরাহ করা হয়, তার একটা বড় অংশই যায় পূর্বস্থলী থেকে।’’ আগামী দিনে এই উৎসব আরও বড় আকারে হবে বলেই তাঁর আশা।

কিন্তু হঠাৎ আম উৎসব কেন?

পূর্বস্থলী সাংস্কৃতিক মঞ্চের তরফে সভাপতি অসিত ভট্টাচার্যের কথায়, কৃষিপ্রধান পূর্বস্থলীর অর্থনীতিতে আমের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এলাকার অর্ধেকের বেশি লোক গরমের মরসুমে আমচাষের সঙ্গে যুক্ত। অত্যন্ত ভাল মানের এবং নানা প্রজাতির আমের জন্য পূর্বস্থলী যে বিখ্যাত সে কথা অনেকেই জানেন না। তিনি বলেন, ‘‘সে কথা জানাতে এবং এলাকার আমচাষিদের সুবিধা অসুবিধার কথা তুলে ধরতেই উৎসবের পরিকল্পনা।’’ মঞ্চের সম্পাদক অভিজিৎ চক্রবর্তীর দাবি, আসানসোল-দুর্গাপুর-রানিগঞ্জে আমের প্রধান যোগানদার স্থানীয় বাগানগুলি। তবে এ বারের অধিক ফলনে দাম পাচ্ছেন অনেকে। তিনি বলেন, ‘‘পূর্বস্থলীতে আমের সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র গড়ে উঠুক। এই উৎসবের মাধ্যমে আমরা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই।’’

বর্ধমানের সহকারী কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষের কথায়, শুধু আম নয় এখানে পেয়ারা, কুল, ফুল প্রচুর পরিমাণে হয়। সংরক্ষণ কেন্দ্র হলে এই এলাকার অর্থনীতি আমূল বদল যাবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন স্বপনবাবু। তাঁর কথায়, “কৌটোয় রসগোল্লা যদি বিদেশ যেতে পারে, আমরা পিছিয়ে থাকব কেন?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE