E-Paper

ভাতায় চলে না, মোটর-ভ্যান চালান তৃণমূলের প্রধান

২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের প্রতীকে কদমাগড় সংসদ থেকে জিতে পঞ্চায়েত প্রধান হন স্বপন। এলাকাবাসীর একটা বড় অংশের দাবি, মোটর-ভ্যানের আসন থেকে সটান প্রধানের চেয়ার পেলেও, টলে যাননি।

তন্ময় চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:১০
ইঞ্জিন ভ্যান চালাচ্ছেন রাইপুরের সোনাগাড়া পঞ্চায়েতের প্রধান স্বপন রজক।

ইঞ্জিন ভ্যান চালাচ্ছেন রাইপুরের সোনাগাড়া পঞ্চায়েতের প্রধান স্বপন রজক। ছবি: শুভেন্দু তন্তুবায়।

অফিসে ঢুকলে বসেন প্রধানের আসনে। কিন্তু মোটরচালিত ভ্যানের আসনেও সমান স্বচ্ছন্দ বাঁকুড়ার রাইপুরের সোনাগাড়া পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান স্বপন রজক। পঞ্চায়েতের প্রধান হলেও মোটর-ভ্যানে মাল বওয়ার কাজ করেন তিনি। সংসার চালাতেই নিজের পেশা ছাড়েননি স্বপন। তিনি বলেন, ‘‘প্রধান হিসাবে মাসে পাঁচ হাজার টাকা সাম্মানিক পাই। তাতে সংসার চলে না। ভ্যান চালিয়ে আরও হাজার দশেক টাকা হয়। তাই ভ্যান চালানো ছাড়তে পারিনি।’’

২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের প্রতীকে কদমাগড় সংসদ থেকে জিতে পঞ্চায়েত প্রধান হন স্বপন। এলাকাবাসীর একটা বড় অংশের দাবি, মোটর-ভ্যানের আসন থেকে সটান প্রধানের চেয়ার পেলেও, টলে যাননি। শাসক দলের নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের একাংশের বিরুদ্ধে যেখানে ‘আঙুল ফুলে কলাগাছ’ হওয়ার অভিযোগ ওঠে, সেখানে
স্বপন আলাদা।

উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা। তার পরে, শালপাতার ব্যবসা করে বছর সাতেক আগে মোটর-ভ্যান কেনেন স্বপন। বছর পঁয়ত্রিশের এই প্রধান জানালেন, রোজই পঞ্চায়েত অফিসে যান। দলের সব কর্মসূচিতেও হাজির থাকেন। তার বাইরে সকাল-বিকেল নিজের ভ্যানে ভাড়ায় ইমারতি সরঞ্জাম পরিবহণ করেন‌। ভ্যানে মালপত্র তোলা-নামানোর কাজও করেন নিজে হাতে। স্বপনের বাড়িতে রয়েছেন বাবা-মা, দুই সন্তান ও স্ত্রী। স্বপনের কথায়, ‘‘সংসার ঠেলতে ভ্যান চালাতেই হবে। প্রধান বলে তাতে লজ্জার কিছু নেই।’’

স্থানীয়দের মধ্যে তপন দে, তন্ময় হালদার বলেন, ‘‘স্বপনের পরিবর্তন নেই। প্রধান পদে থাকলেও এখনও ভ্যান চালান। অফিসও সামলান দক্ষতার সঙ্গে। এমনটা এখন দেখা যায় না।’’ বিজেপির স্থানীয় সোনাগাড়া অঞ্চল আহ্বায়ক দশরথ রায় জুড়লেন, ‘‘স্বপনের বিরুদ্ধে এখনও বেনিয়মের অভিযোগ নেই।’’ তবে তাঁর আমলে কোনও কাজ হয়নি বলেও এই বিজেপি নেতার দাবি।

সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য মধূসুদন মাহাতোর কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূলের নিচুতলা থেকে উপরতলা পর্যন্ত সবাই দুর্নীতিগ্রস্ত। সেখানে ওই তৃণমূল প্রধান যে নিজের পেশা ছাড়েননি, এটা ভাল।’’ তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা সাংসদ অরূপ চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘দলের সবাই সৎ। স্বপনও তেমনই মানুষ। ওঁকে দেখে বরং বিরোধীদের শেখা উচিত।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC bankura tmc panchayat motor van

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy