Advertisement
E-Paper

‘নারদকাণ্ড একটা চক্রান্ত! তৃণমূলের নেতারা সকলেই তার শিকার’! রায় দিলেন পদ্মমুখী প্রাক্তন বিচারপতি

নারদ-প্রসঙ্গ উঠতেই অভিজিৎ জানিয়ে দিলেন, শুভেন্দু অধিকারী চক্রান্তের শিকার! আর বাকি তৃণমূল নেতারা, যাঁদের নারদের ভিডিয়োতে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল? সে জবাবও দিয়েছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৪ ১৫:৪৩
image of Abhijit Gangopadhyay

অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নারদকাণ্ডে তৃণমূলের নেতারা সকলেই চক্রান্তের শিকার ছিলেন। মঙ্গলবার ঘোষণা করে দিলেন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নিজেই সাংবাদিক বৈঠক ডেকে তিনি নিজের বিজেপিতে যোগদানের কথা জানান। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করেই তিনি নাম করেছেন। সেই প্রসঙ্গেই তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তাঁর দল বিজেপির নেতা শুভেন্দু অধিকারীর নারদকাণ্ডে অভিযুক্ত থাকা নিয়ে। অভিজিৎ বলেন, শুভেন্দুর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হয়েছিল।

আর বাকি তৃণমূল নেতারা, যাঁদের নারদের ভিডিয়োতে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল? প্রাক্তন বিচারপতি জানালেন, তাঁরাও চক্রান্তেরই শিকার!

কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর বাড়ি ফিরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন অভিজিৎ। অতীতে এজলাসে বার বার দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছেন। বিচারপতি পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরেও সেই দুর্নীতি নিয়ে আবার সরব হন অভিজিৎ। সে সময়ই সাংবাদিকেরা নারদকাণ্ডের প্রসঙ্গ তোলেন। প্রশ্ন করেন, শুভেন্দুকে নারদকাণ্ডে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল, সেই বিষয়ে তিনি কী বলবেন? এই প্রশ্নের জবাবে অভিজিৎ বলেন, ‘‘শুভেন্দু চক্রান্তের শিকার।’’ তাঁকে পাল্টা প্রশ্ন করা হয়, ‘‘তবে কি যে তৃণমূল নেতাদের দেখা গিয়েছিল, তাঁরাও চক্রান্তের শিকার?’’ জবাবে অভিজিৎ বলেন, ‘‘অবশ্যই তাঁরাও চক্রান্তের শিকার।’’

একই সঙ্গে অভিজিৎ জানিয়েছেন, নারদকাণ্ডের চক্রান্ত করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও তিনি অভিষেকের নাম নেননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে ওই চক্রান্ত করেছিল এক তালপাতার সেপাই।’’ ঘটনাচক্রে, অভিজিৎ তাঁর সাংবাদিক বৈঠকে অভিষেকের নাম না-নিয়ে তাঁকে আগাগোড়া ‘তালপাতার সেপাই’ বলেই অভিহিত করেছেন। অর্থাৎ, প্রাক্তন বিচারপতির বক্তব্য, অভিষেক চক্রান্ত করে তৃণমূলের সিনিয়র নেতাদের (শুভেন্দু-সহ) ফাঁসানোর জন্য নারদকাণ্ড ঘটিয়েছিলেন।

প্রসঙ্গত, অভিজিৎ সম্প্রতি এমনও দাবি করেছেন যে, শুভেন্দুর যে ছবি নারদকাণ্ডের ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছিল (খবরের কাগজে মুড়ে তাঁকে টাকা দেওয়া হচ্ছে), তাতে তিনি টাকা নিচ্ছিলেন, তার কী প্রমাণ আছে? অভিজিৎ প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘খবরের কাগজের মধ্যে যে টাকা আছে, তা কী করে জানা গেল?’’

প্রসঙ্গত, নারদ-কাণ্ডে রাজ্যের ১৩ জন প্রভাবশালী মন্ত্রী, নেতা, পুলিশকর্তার নামে সরাসরি ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। স্টিং অপারেশনের ভিডিয়ো প্রকাশ করেছিলেন সাংবাদিক ম্যাথু স্যামুয়েল। লুকিয়ে তোলা ভিডিয়োতে রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীদের টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল। অভিযুক্তের তালিকায় ছিলেন শুভেন্দু, প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মুকুল রায়, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, অপরূপা পোদ্দার, শোভন চট্টোপাধ্যায়, কাকলি ঘোষদস্তিদার, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, প্রাক্তন সাংসদ সুলতান আহমেদ। সিবিআই দাবি করেছিল, সেই টাকা লেনদেনের ঘটনার সত্যতা মিলেছে। সিবিআইয়ের আরও দাবি, ম্যাথুর কাছ থেকে নির্বাচনী তহবিলে ওই টাকা নেওয়ার কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন নেতা-মন্ত্রী-সাংসদ ও পুলিশকর্তারা। সেই ঘটনা নিয়েই প্রশ্ন করা হয় অভিজিৎকে, যার জবাবে তিনি জানান, শুভেন্দু-সহ সকল তৃণমূল নেতা ‘চক্রান্তের শিকার’ হয়েছিলেন। ঘটনাচক্রে, যে বিজেপিতে অভিজিৎ যোগ দেবেন বলে ঘোষণা করলেন, তার রাজ্য সংগঠনে শুভেন্দু একেবারে সামনের সারির নেতা তো বটেই, রাজ্যের বিরোধী দলনেতাও তিনি।

মঙ্গলবার অভিজিৎ জানিয়ে দেন, আগামী ৭ মার্চ বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন তিনি। কেন তিনি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন, সে কথাও জানান অভিজিৎ। তাতেই তুলে ধরেন দুর্নীতির প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি তৃণমূলের মতো দুষ্কৃতী দলের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। তাই সেখানে যোগ দিচ্ছি।’’ কেন সিপিএম বা কংগ্রেসে যাচ্ছেন না, তা-ও জানান। তাঁর কথায়, ‘‘সিপিএমে যোগ দেব না কারণ আমি ঈশ্বরবিশ্বাসী। ধর্মে বিশ্বাস করি। তাদের সঙ্গে আমার মিল হবে না। কংগ্রেস হল পারিবারিক জমিদারির একটা দল। এখানে জয়রাম রমেশের মতো শিক্ষিত মানুষেরা থাকেন। কিন্তু তাঁরা পদ পান না। রাহুল গান্ধীর মতো নেতাদের পিছনে থেকে যেতে হয়।’’

BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy