Advertisement
E-Paper

সবুজের হাত ধরে ফিরছে লাল বাতি, গর্বিত রেজ্জাক

তিনি লাল ছেড়েছেন। কিন্তু লাল তাঁকে ছাড়ছে না! পাঁচটা বছর শুধু লালবাতি গাড়ি ছাড়া ছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে ফের লালবাতি ফিরছে আব্দুর রেজ্জাক মোল্লার জীবনে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৬ ০৩:৪৩
আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা

আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা

তিনি লাল ছেড়েছেন। কিন্তু লাল তাঁকে ছাড়ছে না!

পাঁচটা বছর শুধু লালবাতি গাড়ি ছাড়া ছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে ফের লালবাতি ফিরছে আব্দুর রেজ্জাক মোল্লার জীবনে।

সেই ১৯৮২ সাল থেকে ২০১১ পর্যন্ত রাজ্যে মন্ত্রিত্বে ছিলেন। বামফ্রন্ট হেরে যাওয়ার বছরেও তিনি বিধায়ক। এ বার রাজনৈতিক পট বদলে মন্ত্রিসভায় প্রত্যাবর্তন! ১৯৮২ থেকে ২০১১, আট বার তিনি বামফ্রন্ট মন্ত্রিভার সদস্য ছিলেন। ১০ বারের বিধায়ক রেজ্জাক এ বার তৃণমূলের মন্ত্রিসভার সদস্য।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টিভিতে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা শুনেছেন। তিনি মন্ত্রীর তালিকায় রয়েছেন। তবে কোনও সূত্রেই কোন দফতরের মন্ত্রী হবেন, তা জানতে পারেননি। ‘চাষার ব্যাটা’র প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমার ডবল সেঞ্চুরি হল!’’ ডবল সেঞ্চুরি কেন? ব্যাখাও দিয়েছেন। তবে তার আগে বলতে ছাড়ছেন না, ‘‘সিপিএম ছাড়লে নাকি কোনও নেতার কোনও রাজনৈতিক অস্তিত্ব থাকে না! আমি সিপিএম ছেড়ে নির্বাচনে লড়ে বিধায়ক হলাম। তার পরে মন্ত্রী। দম থাকলে করা যায়! সিপিএমকে বলছি, আয় এ বার দেখে নে আমাকে!’’

দলে থেকে বিদ্রোহের লম্বা পর্বের শেষে ২০১৩ সালে সিপিএম বহিষ্কার করেছিল রেজ্জাককে। মাঝে নতুন দল খুলেছেন, সেখানেও বহিষ্কার জুটেছে। তৃণমূলে যাওয়ার পরে আবার আরাবুল ইসলামদের কাঁটা! সে সব সামলে নিজে যখন জিতেছেন, তখন মনে পড়ছে— রাধিকারঞ্জন প্রামাণিক থেকে আবু আয়েশ মণ্ডল, সিপিএম ছেড়ে বেরিয়ে রাজনীতিতে হারিয়ে যাওয়ার উদাহরণ অতীতে বিস্তর। স্বভাবতই নিজেকে ব্যতিক্রম প্রমাণ করতে পেরে গর্বিত রেজ্জাক!

আর ডবল সেঞ্চুরির ব্যাখা, রাজনৈতিক জীবনে ১৯৭২ সালে ভাঙড় থেকে লড়েই প্রথম বিধায়ক হয়েছিলেন। সে বারের ভোটে জ্যোতি বসু পরাজিত হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি ভাঙড়ে জয়ী হয়েছিলেন। পরে ক্যানিং (পূর্ব) থেকে নির্বাচনে লড়াই করেছেন। রাজনৈতিক জীবনের প্রথম বিজয় ভাঙড় থেকেই এসেছিল। এখনও ভাঙড়ের মানুষের কাছে তাই তিনি কৃতজ্ঞ। রেজ্জাক বলছেন, ‘‘ভাঙড় আমার মাথা উঁচু রেখেছে সব সময়। এ বারের নির্বাচনে আমাকে হারানোর জন্য অনেক চক্রান্ত হয়েছিল। কিন্তু ভাঙড়ের মানুষ আমার পাশেই ছিল। ভাঙড় থেকে ফের বিজয়ী হওয়া আমার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি।’’

রেজ্জাক-ঘনিষ্ঠদের দাবি, দাদা ভাঙড় থেকে জয়ী হওয়ার পরে এখন সিপিএমের অনেক নিচু তলার কর্মীরা যোগাযোগ শুরু করেছেন। এমন দিনে রেজ্জাক সিপিএমকে কয়েক হাত নেবেন না, তা-ই কখনও হয়? নিজের কায়দাতেই তিনি বলেছেন, ‘‘ওই দলে আর নিচু তলার কর্মীরা কেউ থাকবে না বলে মনে হয়। শুধু নেতারা দলীয় কর্মীদের লেভির টাকায় গাড়ি চড়ে ঘুরে বেড়াবে! মানুষ ওদের পাশ থেকে চলে গিয়েছে। এখন শুধু পার্টি অফিসে ঘুরঘুর করা ছাড়া ওদের আর কোনও উপায় নেই। নেতারা পার্টি অফিসের ঘরে সলতে পাকাবে। কিন্তু সলতেয় আগুন দেওয়ার কোনও লোক সিপিএম আর পাশে পাবে না!’’

কোন দফতরে মন্ত্রী হবেন? সেই বিষয়ে তেমন কোনও আগ্রহ নেই রেজ্জাকের। তিনি বলেন, ‘‘ভাঙড় থেকে জয়ী হয়ে আমার প্রথম জয় হয়ে গিয়েছে। তবে মন্ত্রী হয়ে এমন কিছু করে যেতে চাই, ভাঙড়ের মানুষ যেন পরে বলতে পারে বুড়োটা শেষ বয়সেও আমাদের জন্য কিছু করে গিয়েছে!’’ তিনি বোঝাচ্ছেন, ভাঙড়ে উন্নয়নের পাশাপাশি শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা তাঁর প্রথম কাজ। ভাঙড়ের মানুষ খুব অশান্তিতে রয়েছেন, রেজ্জাক জানেন। নিজেই বলছেন, ১৯৭৫ সালে তিনি ভাঙড় ছাড়ার পরে সিপিএম সেখানে সন্ত্রাস শুরু করেছিল। তার পর তৃণমূলও সেই পথে হেঁটেছে। যত দিন বাঁচবেন, সন্ত্রাসমুক্ত ভাঙড় গড়ার চেষ্টা করে যাবেন।

assembly election 2016 abdur rezzak mollah
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy