Advertisement
E-Paper

গলায় দড়ি প্রাক্তন কাউন্সিলরের

দেনার দায়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন শিলিগুড়ি পুরসভার প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর চিরঞ্জীব দাস (৪৩)।সোমবার রাত ১১টা নাগাদ শিলিগুড়ি থানার ভারতনগরের কালীমন্দির লাগোয়া একটি ক্লাব প্রাঙ্গণ থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। রবিবার রাতে ওই ক্লাব চত্বরে বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠান হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:৫১
নিয়ে আসা হচ্ছে চিরঞ্জীববাবুর দেহ।মঙ্গলবার বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।

নিয়ে আসা হচ্ছে চিরঞ্জীববাবুর দেহ।মঙ্গলবার বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।

দেনার দায়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন শিলিগুড়ি পুরসভার প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর চিরঞ্জীব দাস (৪৩)।

সোমবার রাত ১১টা নাগাদ শিলিগুড়ি থানার ভারতনগরের কালীমন্দির লাগোয়া একটি ক্লাব প্রাঙ্গণ থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। রবিবার রাতে ওই ক্লাব চত্বরে বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠান হয়। সোমবারও তার বাঁশ , কাপড়ের কাঠামো থেকে গিয়েছিল। ক্লাবের কেয়ারটেকার প্রাণবল্লব মণ্ডল বলেন, ‘‘রাত ১০টায় ক্লাবঘর বন্ধ করে চলে যাই। তার আগে একটি চেয়ার রেখে দেন চিরঞ্জীববাবু। বলেছিলেন , এক বন্ধু আসবে। তাই তিনি বাইরে অপেক্ষা করবেন । ’’

উল্টো দিকেই ক্লাব সভাপতি দেবাশিস ঘোষের বাড়ি। দেবাশিসবাবু জানান , রাত ১২টার পর মোটরবাইকটি ক্লাবের পাশে দেখে লোকজনের সন্দেহ হয়। খবর পেয়ে এলাকার তৃণমূল নেতা প্রতুল চক্রবর্তী , কৃষ্ণ পাল, মদন ভট্টাচার্যরা, বাসু শিকদাররা সেখানে যান। তখন খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, প্যান্ডেলের কাঠামোর একটি বাঁশে গলায় দড়ি দিয়েছেন তিনি।

চিরঞ্জীবের পকেটে মেলে সাড়ে তিন পৃষ্ঠার সুইসাইড নোট। কোন সহকর্মীর কাছ থেকে কত টাকা নিয়েছেন , কোন নেতা লক্ষ টাকা ধার দিয়ে সমপরিমাণ সুদ নিয়েছেন , এমনকী দলের কোন নেতা কত টাকা পাবেন এবং কাকে কত টাকা সুদ দিতে হবে— সবই তিনি লিখে রেখে গিয়েছেন এই নোটে।

চিরঞ্জীব দাস। মঙ্গলবার বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।

চিঠির শেষে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব ও জেলা যুব সভাপতি বিকাশ সরকারের প্রতি লিখেছেন, তাঁরা যেন তাঁর স্ত্রীয়ের দ্রুত পেনশনের ব্যবস্থা করে দেন। স্ত্রীকে একটা কাজের বন্দোবস্ত করে দেওয়ার অনুরোধও করেছেন চিঠিতে, যাতে একমাত্র মেয়েকে নিয়ে তিনি সংসার চালাতে পারেন। ১৯৯৯ সালে কাউন্সিলর হয়েছিলেন চিরঞ্জীব। পরে অবশ্য টিকিট পাননি। তবে আমৃত্যু পুরসভার কর্মী ছিলেন তিনি। বাবা-মায়ের প্রতি লেখা চিঠিতে নিজের ভুলের জন্যও বারবার ক্ষমা চেয়ে গিয়েছেন চিরঞ্জীব।

পর্যটনমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা একসঙ্গে কাউন্সিলর ছিলাম। ভাবতেই পারছি না। দল ওঁর পরিবারের পাশে আছে।’’ মেয়র অশোক ভট্টাচার্য জানান, বিষয়টি দুর্ভাগ্যের। কেন এমন ঘটনা ঘটল, তা বিশদে তদন্তের জন্য পুলিশকে অনুরোধ করেছেন মেয়র। শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি (পূর্ব) গৌরব লাল বলেন, ‘‘সুইসাইড নোটও মিলেছে। তদন্ত হচ্ছে।’’

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের বক্তব্য, চিরঞ্জীববাবু লটারির টিকিট কাটতে রোজই বহু টাকা খরচ করতেন। বিভিন্ন প্রয়োজনে বাজার থেকে সুদে টাকা ধারও নিতেন। সুদ-আসল মিলিয়ে যে পরিমাণ টাকা দাঁড়ায়, তা পুরসভার চাকরি করে মেটানো সম্ভব নয় বলেই সন্দেহ পুলিশের।

সোমবার সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে ফুলেশ্বরী মোড়, ভারতনগর এলাকায় তাঁকে বাইক নিয়ে ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছিল। একটি লটারির দোকানে টিকিটের খোঁজও করতে গিয়েছিলেন। সাড়ে ৯টার পর তিনি স্থানীয় ক্লাবে যান। তার পরে রাতে মিলল তাঁর ঝুলন্ত দেহ।

TMC Councillor Suicide
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy