Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

রেজিস্ট্রেশন ভাঁড়িয়ে প্র্যাকটিস ভুয়ো ডাক্তারদের, উদ্বিগ্ন মেডিক্যাল কাউন্সিল

রাজ্যজুড়ে এই রকম ভেকধারী ভুয়ো চিকিৎসক ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে বলে বেশ কিছুদিন ধরেই অভিযোগ আসছিল রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের কাছে। জাল চিকিৎসক সম্পর্কে তাদের কাছে তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছিল সিআইডি-ও।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৭ ১১:০০
Share: Save:

ডাক্তারবাবু যে রেজিস্ট্রেশন নম্বরে চুটিয়ে প্র্যাকটিস করছেন সেটি আসলে তাঁর নয়, অন্য কোনও চিকিৎসকের!

রাজ্যজুড়ে এই রকম ভেকধারী ভুয়ো চিকিৎসক ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে বলে বেশ কিছুদিন ধরেই অভিযোগ আসছিল রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের কাছে। জাল চিকিৎসক সম্পর্কে তাদের কাছে তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছিল সিআইডি-ও। গত ২৫ মে বিধাননগর দক্ষিণ থানায় এই রকম ৭ জন চিকিৎসকের নামের তালিকা জমা দিয়েছিল রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল। তার ভিতরেই ছিল নরেন পাণ্ডে-র নাম, যিনি অন্য এক চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে ত্বক বিশেষজ্ঞ হিসাবে রমরমিয়ে প্র্যাকটিস চালাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। কাউন্সিলের তালিকা জমা পড়ার ঠিক পরের দিন এন্টালির এক চেম্বার থেকে এঁকে গ্রেফতার করে সিআইডি।

রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার মানস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘স্থানীয় মানুষ, স্থানীয় থানা, রেল এবং ডাক বিভাগ থেকে আমরা বেশ কিছু অভিযোগ পেয়েছিলাম। কয়েকটা নাম আমাদের সিআইডিও দিয়েছিল। তথ্যপঞ্জী ঘেঁটে আমরা দেখলাম, এই সাত জনের নাম মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রিতে নেই এবং তাঁরা অন্য চিকিৎসকদের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করছেন।’’ এ ছাড়াও আরও কিছু নাম তাঁদের কাছে রয়েছে বলে জানান মানসবাবু। সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে এই ভেকধারী চিকিৎসকেরা যেভাবে খেলা করে পয়সা রোজগার করছেন তাতে কাউন্সিল উদ্বিগ্ন এবং আতঙ্কিত।

কাউন্সিলের তরফে করা এফআইআরের কপি।

পুলিশের কাছে তাঁরা যে নামগুলি দিয়েছেন তার মধ্যে প্রথমেই রয়েছে এক ডাক্তারের নাম যিনি কলকাতার অশ্বিনী দত্ত রোডে প্র্যাকটিস করেন। তিনি যে রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করছেন সেটি আসলে কোন্নগরের এক ডাক্তারের। এর সম্পর্কে কাউন্সিলে প্রথম খবর দেন ইস্টার্ন রেলওয়ের এক ইঞ্জিনিয়ার। দ্বিতীয় জন নাদিয়াল থানা এলাকায় প্র্যাকটিস করছেন ঢাকার এক চিকিৎসকের অতি পুরনো রেজিস্ট্রেশন নম্বরে! তৃতীয় জনের সম্পর্কে অভিযোগ এসেছিল খোদ মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া থেকে। তিনি আলিপুরদুয়ারে প্র্যাকটিস করতেন। সেখানে ধরাও পড়েছিলেন। এখন ফালাকাটায়
দিব্যি একটি ক্লিনিক এবং এক্সরে ক্লিনিক চালাচ্ছেন।

চতুর্থ জনের সম্পর্কে অভিযোগ এসেছিল ডাক বিভাগ থেকে। শিলিগুড়ির এই চিকিৎসক কলকাতার বাগবাজারের এক চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করছেন। আবার হাসনাবাদে এক ডাক্তার বেআইনিভাবে প্র্যাকটিস করছেন ঢাকা-র এক গ্রামীণ চিকিৎসকের বহু পুরনো রেজিস্ট্রেশন নম্বরে। ষষ্ঠ জন এক মহিলা চিকিৎসক। তিনি বারাসতে প্র্যাকটিস করছেন দুর্গানগরের এক চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE