Advertisement
০৮ মে ২০২৪
Crime

‘অল্প বয়স থেকেই উদ্দাম জীবনযাপন রমার, মেয়েও ছিলেন তাঁর মতো’

রমা ও তাঁর যুবতী কন্যা কৌশানী ওরফে রিয়ার অর্দ্ধদগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছে হলদিয়ায় হুগলি নদীর পাড়ে।

অভিযুক্ত সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে দিঘায় রিয়া এবং রমা। —নিজস্ব চিত্র।

অভিযুক্ত সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে দিঘায় রিয়া এবং রমা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:১৮
Share: Save:

বোন ও ভাগ্নীর মর্মান্তিক মৃত্যু মানতে পারছেন না তাঁরা। তবে মায়ের জন্যই যে মেয়ের এই পরিণতি, সে কথাও স্পষ্টই বলছেন নিউ ব্যারাকপুরের বাসিন্দা রমা দে-র দাদা-বৌদিরা।

রমা ও তাঁর যুবতী কন্যা কৌশানী ওরফে রিয়ার অর্দ্ধদগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছে হলদিয়ায় হুগলি নদীর পাড়ে। ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে শেখ সাদ্দাম ও শেখ মনজুর আলি মল্লিক নামে দুই যুবক। সাদ্দামের সঙ্গে তৃণমূল যোগের অভিযোগে সরব হয়েছে বিজেপি। ঘটনার তদন্তে উঠে এসেছে, মা-মেয়ের বিলাসবহুল, বেপরোয়া জীবনযাপনের কথা। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ফেসবুকে আলাপ জমিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতেন মা-মেয়ে। তার পর ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি পুঁজি করে চলত ব্ল্যাকমেল। সাদ্দামের ক্ষেত্রেও এমনটাই করা হয়েছিল। আর তার পরিণতিতেই মা-মেয়েকে পুড়িয়ে খুন করা হয়েছে বলে জানাচ্ছে পুলিশ।

জোড়া খুনের তদন্তে পুলিশ জেনেছে, স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পরে মুম্বই থেকে ফিরে বাপের বাড়ির এলাকা, নিউ ব্যারাকপুরেই ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন রমা ও কৌশানী। রমার বাবা-মা দু’জনেই মারা গিয়েছেন। রমারা তিন ভাই ও তিন বোন। মঙ্গলবার এলাকায় গিয়ে জানা গেল, রমার বড়দা গৌতম দে গরুর ব্যবসা করেন। মাস দু’য়েক আগে মহারাষ্ট্র থেকে ফেরার পথে ট্রেনে রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে গৌতমের ছেলে বছর চব্বিশের রাজীবের। সেই অস্বাভাবিক মৃত্যুর এখনও তদন্ত করছে পুলিশ।

এ দিন রমার এক বৌদি দাবি করেন, নিউ ব্যারাকপুরের ফেরার পর থেকে রমার সঙ্গে তাঁদের তেমন সম্পর্ক ছিল না। তবে তিনি জানালেন, অল্পবয়স থেকেই হৈ-হুল্লোড় আর উদ্দাম জীবনযাপন করতেন রমা। মেয়েকেও নিজের মতো করে তৈরি করেছিলেন। এ সবের জেরেই স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় রমার। তবে তিনি নিজের জীবনযাপন বদলাননি। রমার এক জ্যাঠতুতো ভাইয়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এ সব কারণেই আজ এমন ভয়ঙ্কর পরিণতি হল।’’

জোড়া খুনের তদন্তে নেমে নিউ ব্যারাকপুর থানার পুলিশ জেনেছে, দেখতে সুন্দর, ইংরেজি-হিন্দিতে সাবলীল কথা বলতে পারার সুবাদে মা-মেয়ে দু’জনেই ছিলেন আকর্ষণীয়। ফেসবুকে নানা নামে অ্যাকাউন্ট খুলে ধনী লোকজনের সঙ্গে আলাপ জমাতেন তাঁরা। তারপর শুরু হত টাকা আদায়ের ছক। সেই সূত্রেই মা-মেয়ের আলাপ হয়েছিল হলদিয়ার শেখ সাদ্দামের সঙ্গে। হলদিয়া ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেও শুরু করেছিলেন মা-মেয়ে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেরায় সাদ্দামও জানিয়েছে এই ব্ল্যাকমেলের কথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Murder Haldia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE