Advertisement
E-Paper

‘ওই লাথিটা মেরে ভাই খুব অনুতপ্ত’

তবে পুলিশ গ্রেফতারের পরেও তারিকুলের পরিবারের সদস্যদের মুখেচোখে খুব একটা উদ্বেগ ছিল না। বেশ নিশ্চিন্তেই বাড়ির সামনের ছোট্ট উঠোনে পাতা প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে ছিলেন তারিকুলের দাদা নইদুল শেখ।

সুস্মিত হালদার ও সন্দীপ পাল

শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:২৯
তারিকুলের দাদা। নিজস্ব চিত্র

তারিকুলের দাদা। নিজস্ব চিত্র

মঙ্গলবার সকাল। কিছু ক্ষণ আগে স্থানীয় তৃণমূল নেতারা তারিকুল শেখকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন। সোমবার দুপুরের পর থেকেই বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে শুধু তাঁর ছবি ছিল। করিমপুর বিধানসভা উপ-নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী জয়প্রকাশ মজুমদারকে এক লাথিতে রাস্তার পাশে ঝোপে ফেলে দিচ্ছেন।

তবে পুলিশ গ্রেফতারের পরেও তারিকুলের পরিবারের সদস্যদের মুখেচোখে খুব একটা উদ্বেগ ছিল না। বেশ নিশ্চিন্তেই বাড়ির সামনের ছোট্ট উঠোনে পাতা প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে ছিলেন তারিকুলের দাদা নইদুল শেখ। পাশে প্রতিবেশী এক বৃদ্ধ। তাঁদের ঘিরে পরিবারের কয়েক জন মহিলা। নইদুল জানালেন, তৃণমূল নেতারা কথা দিয়ে গিয়েছেন যে, আদালতে হাজির করা হলেই জামিন পেয়ে যাবে বাড়ির ছোট ছেলে। নিশ্চিনিতের কারণ এ বার স্পষ্ট হল।

নেতাদের কথা তাঁদেরঅবিশ্বাস করারও কারণ নেই। কারণ, তাঁরা নিজেরাই তৃণমূল পরিবারের অংশ। গ্রামীন চিকিৎসক নইদুল এলাকায় প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা হিসাবে পরিচিত। ৩২ ও ৩৩ নম্বর বুথের সামনে জয়প্রকাশ মজুমদারকে মারা হয়েছিল। সেই ৩৩ নম্বর বুথের তৃণমূলের পোলিং এজেন্ট ছিলেন নইদুল। বললেন, ‘‘বিজেপি প্রার্থীকে ঝোঁকের মাথায় লাথিটা মেরে ফেলায় ভাই অনুতপ্ত ছিল। বারবার দুঃখ করছিল।” নইদুলের আরও বক্তব্য, “আমার ভাই যথেষ্ট শিক্ষিত। কোনও গোলমালে থাকে না। কেন যে এমনকরে ফেলল বুঝতে পারছি না।” সেই সঙ্গে পরিবারের মহিলাদের গিকে তাকিয়ে আশ্বস্তও করেন, “জামিন পেয়ে যাবে। আজই। কোনও চিন্তা কোরো না।”

ভীত না হলেও গোটা ঘটনায় তারিকুলের পরিবার বেশ অস্বস্তিতে রয়েছে। গ্রামের অনেকেই তাদের এড়িয়ে যাচ্ছেন। কেউ বা ভয়ে আছেন। বাইরের কারও সঙ্গে কথাই বলতে চাইছেন না তাঁরা।

গ্রামের এক বৃদ্ধ চারপাশে চোখ বুলিয়ে গলা নামিয়ে বললেন, “কথা বলে মরব নাকি! এক দিকে পুলিশ আর অন্য দিকে তৃণমূল। কে বাইরে কার সঙ্গে কথা বলছে, সব খেয়াল রাখা হচ্ছে।”

মঙ্গলবার করিপুরের সর্বত্র একটাই আলোচনা—জয়প্রকাশকে লাথি। ঘিয়াঘাট পিপুলখোলা এলাকায় যত ভিতরে যাওয়া যায় ততই যেন এলাকা সুনসান হতে থাকে। ঘিয়াঘাট ইসলাম পুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথের সামনে পৌঁছতে দেখা গেল, স্কুলে অন্য দিনের তুলনায় ছাত্র অনেক কম। কিছু দূরে কয়েক জন নিজেদের মধ্যে আলোচনায় মত্ত ছিলেন কিন্তু সংবাদমাধ্যমের লোক জন দেখে তাঁরাও বাড়িমুখো হলেন।

Jay Prakash Majumdar Karimpur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy