Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal News

চাষি-তৃণমূল সংঘর্ষে তপ্ত বোলপুর, বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার শাসানি কেষ্টর

পুলিশ যদি গ্রেফতার না করে, তা হলে আন্দোলনকারীদের ঘর-বাড়ি তিনিই ভেঙে জ্বালিয়ে দেবেন বলে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি।

ডেপুটি পুলিশ সুপারকে বুধবার য়ে ভাবে হুমকি দিয়েছেন অনুব্রত, তাতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে আন্দোলনকারীদের মধ্যে। —ফাইল চিত্র।

ডেপুটি পুলিশ সুপারকে বুধবার য়ে ভাবে হুমকি দিয়েছেন অনুব্রত, তাতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে আন্দোলনকারীদের মধ্যে। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৭ ২২:২৩
Share: Save:

আন্দোলনকারী কৃষকদের ঘর-বাড়ি ভেঙে জ্বালিয়ে দেওয়া হবে। আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়াতে এলে আবদুল মান্নান, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যদের হাত-পাও ভেঙে দেওয়া হবে। শাসানি তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের

অধিগৃহীত জমিতে শিল্প ছাড়া অন্য কিছু হতে দেবেন না, জানিয়েছিলেন আন্দোলনকারী কৃষকরা। বোলপুরের শিবপুর মৌজায় কৃষকদের সেই আন্দোলন ভাঙতে বুধবার সরাসরি মাঠে নেমেছিল তৃণমূল। কৃষক বিক্ষোভে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান এবং সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। ঘটনাস্থলের অনেক আগেই মান্নান-বিকাশদের পথ আটকে দিল পুলিশ। আর শিবপুরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হল তৃণমূল কর্মীদের। এই সংঘর্ষের পরই ময়দানে নেমেছেন অনুব্রত নিজে। আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার করার জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়ে ডিএসপিকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। পুলিশ যদি গ্রেফতার না করে, তা হলে আন্দোলনকারীদের ঘর-বাড়ি তিনিই ভেঙে জ্বালিয়ে দেবেন বলে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি।

বীরভূমের বোলপুরের শিবপুর মৌজায় বিশ্ব বাংলা বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ব বাংলা হাট ও গীতাঞ্জলি আবাসন প্রকল্পের জন্য ২০০ একরেরও বেশি জমি অধিগ্রহণ করছে রাজ্য সরকার। কিন্তু, ওই জমিতে শিল্পের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন কৃষকদের একাংশ। সেই আন্দোলকে ঘিরেই বুধবার সকালে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। তৃণমূল কর্মীদের গাড়ি ও বাইক ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে। দুপুরে লাঠি-বাঁশ নিয়ে জমায়েত করে দু’পক্ষ। ঠিক সেই সময় অনিচ্ছুক কৃষকদের সভায় যোগ দিতে বোলপুরের জিলিপি মোড়ে পৌঁছন সিপিএম নেতা তথা আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য ও বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। তাঁদের গাড়ি আটকে দেয় পুলিশ। গাড়ি থেকে নেমে পুলিশের কাছে কৈফিয়ত চান বিকাশ-মান্নান। তাঁরা এলাকায় গেলে সেখানে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে বলে তাঁদের জানায় পুলিশ। কিন্তু অনড় বিকাশ পুলিশের ব্যারিকেড ঠেলে এগোনোর চেষ্টা করেন বিকাশ। পুলিশের সঙ্গে বিকাশ ভট্টাচার্যের টানাহেঁচড়া শুরু হয়ে যায়। চলে তুমুল কথা কাটাকাটিও। প্রায় দেড় ঘণ্টা রাস্তার উপরেই চাপান-উতোর চলে দু’পক্ষে। কিন্তু পুলিশ কিছুতেই আবদুল মান্নান, বিকাশ ভট্টাচার্যদের ঘটনাস্থলে পৌঁছতে দেয়নি।

আরও পড়ুন: ডেঙ্গি-ভয়কে পুঁজি করে ভুয়ো ডাক্তারি

এর পরই আসরে নামেন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। ডেপুটি পুলিশ সুপারকে তিনি বলেন, ‘‘বিকেল ৪.১৫ থেকে ৩ ঘণ্টা সময় দিলাম। রাত ৯টার মধ্যে ঢুকে যাব। একজনেরও বাড়ি-ঘর রাখব না, চুরমার করে দেব। যে তাণ্ডবলীলা খেলে দেব, ভয়ঙ্কর খেলে দেব। গ্রেফতার করুন, না হলে বাড়ি-ঘর ভেঙে জ্বালিয়ে দেব।’’

আরও পড়ুন: জোট চেয়ে বামের প্রতীক্ষায় কংগ্রেস

অনুব্রত মণ্ডলের এই শাসানির তীব্র নিন্দা করেছেন বিরোধীরা। বিকাশ ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘এদের উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়া দরকার। আবারও আসব। গুন্ডা দিয়ে ভয় পাইয়ে দেওয়া যাবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE