E-Paper

রেমালের প্রভাব পড়ল কমই, স্বস্তিতে চাষিরা

পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক এস পুন্নমবলম জানান, বিক্ষিপ্ত ভাবে কয়েকটি এলাকায় গাছ পড়ে গিয়েছিল। তবে তাতে জনজীবনে খুব সমস্যা হয়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০২৪ ০৮:৪৩
বিশেষ ক্ষতি হয়নি ভুট্টা গাছের। বুদবুদে একটি জমিতে।

বিশেষ ক্ষতি হয়নি ভুট্টা গাছের। বুদবুদে একটি জমিতে। —নিজস্ব চিত্র।

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব সে ভাবে পড়ল না পশ্চিম বর্ধমান জেলায়। তবে রবিবার রাত থেকে ঝিরঝিরে বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া বইতে থাকে। সোমবার দিনভর আকাশ মেঘলা জেলা জুড়ে। সঙ্গে হাওয়ার দাপটও রয়েছে। আসানসোলে কয়েকটি গাছ পড়ে যায় বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। এই দুর্যোগের প্রভাব কৃষিকাজে খুব একটা পড়বে না বলে দাবি কৃষি দফতরের।

পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক এস পুন্নমবলম জানান, বিক্ষিপ্ত ভাবে কয়েকটি এলাকায় গাছ পড়ে গিয়েছিল। তবে তাতে জনজীবনে খুব সমস্যা হয়নি।

জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সোমবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত পশ্চিম বর্ধমান জেলায় গড়ে বৃষ্টিপাত হয়েছে ১১.৪ মিলিমিটার। দফতর সূত্রে আরও জানা যায়, রেমালের প্রভাব জেলায় কতটা পড়বে, তা ঠিক হওয়ার আগেই কৃষি দফতরের তরফে চাষিদের নানা সতর্কবার্তা দেওয়া হয়। এই সময়ে জেলায় মূলত তিল, ভুট্টা ও মুগ ডালের চাষ হয়। এ বার তিল চাষ হয়েছে প্রায় ৬৫০ হেক্টর, ভুট্টা প্রায় ৩২৬ হেক্টর ও মুগ ডালের চাষ হয়েছে প্রায় ১৩৬ হেক্টর জমিতে। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝড়ের গতিবেগ বেশি হলে তিল গাছ পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। ভুট্টা গাছও মাটিতে পড়ে যেত। কিন্তু যা ঝড় হয়েছে তাতে এই সব ফসলের কোনও ক্ষতির খবর নেই। পাশাপাশি, বৃষ্টিপাতও খুব বেশি না হওয়ায় জমিতে জল জমারও তেমন খবর নেই। তবে এই বৃষ্টি আমন ধান চাষের পক্ষে উপকারী হবে বলে দাবি কৃষি দফতরের। আধিকারিকেরা জানান, আর কিছু দিন পরেই জেলায় আমন ধানের মরসুম শুরু হবে। তার আগে এই বৃষ্টি মাটির আর্দ্রতা বাড়াবে। মরসুম শুরুর আগে চাষিরা ট্র্যাক্টরে এক বার চাষ দিলেই জমিতে আগাছা কম হবে। ফলে, চাষিদের খরচ কমবে।

জেলায় এই সময়ে প্রায় ২০০০ হেক্টর জমিতে নানা ধরনের আনাজ চাষ করে থাকেন চাষিরা। আনাজ চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, এই ঝড়ের পূর্বাভাস যেহেতু আগেই পেয়েছিলেন, সে কারণে পটল, ঝিঙের মতো আনাজের যাতে ক্ষতি না হয়, সে জন্য গাছ মাচার সঙ্গে বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি, জমিতে যাতে জল না জমে, সে জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত বড় ঝড় বা অতি ভারী বৃষ্টিপাত না হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন চাষিরা। কাঁকসার অজয়পল্লির পবিত্র মজুমদার, বিকাশ বিশ্বাসেরা বলেন, ‘‘সামান্য বৃষ্টি হয়েছে। তবে জল কোথাও জমেনি। আনাজের ক্ষতি সে ভাবে হয়নি।’’

কৃষি আধিকারিকদের মতে, পশ্চিম বর্ধমানের মাটি এমনিতেই শুষ্ক। তাই জল খুব একটা জমে না। তা ছাড়া, আনাজ চাষ যে সব জায়গায় হয়, সেগুলি অপেক্ষাকৃত উঁচু। জেলা উপ-কৃষি অধিকর্তা জাহিরুদ্দিন খান বলেন, ‘‘আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই।’’

আসানসোল মহকুমাশাসক বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য জানান, শহরের রবীন্দ্র ভবনের কাছে দু’দিকে কয়েকটি গাছ পড়ে গিয়েছিল। বিদ্যুৎ বণ্টন নিগমের তরফে সে সব সাফাই করার জন্য এ দিন দুপুরে কিছু ক্ষণ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। আসানসোল পুরসভার চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, পুরসভার কন্ট্রোল রুমে কোনও অপ্রীতিকর খবর আসেনি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Cyclone Remal Remal Bardhaman

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy