ফাঁকা মাঠ ভরাট হল না।—নিজস্ব চিত্র।
শিল্পী, কলাকুশলীদের জমায়েত ছাড়াই মাঠ ফাঁকা রেখে দু’দিনের জঙ্গলমহল উৎসব শুরু হল বোরোতে। বৃহস্পতিবার ধামসায় কাঠি দিয়ে উৎসবের সূচনা করেন বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীব সোরেন।
আদিবাসীদের পরম্পরাগত সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও অনুশীলন বজায় রাখতে ২০১৫ সাল থেকে জঙ্গলমহল উৎসব শুরু হয়। এ দিন দুপুরে বোরো থানার মুরগাডি ফুটবল ময়দানে গিয়ে দেখা গেল মূল মঞ্চের দু’পাশে গোটা দশেক স্টল। সেখানে বিভিন্ন বিভাগের কর্মীরা রয়েছেন। কিন্তু দর্শনার্থী কই? তাঁদের ছাড়া এই উৎসবের কার্যকারিতা কী?
বিশাল বড় মাঠ ফাঁকা পড়ে! সকাল দশটায় উদ্বোধন হওয়ার কথা থাকলেও শেষমেষ পিছিয়ে একটা নাগাদ ধামসা বাজিয়ে ও প্রদীপ জ্বালিয়ে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। এ দিন আমন্ত্রণ পত্রে জেলার দুই মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো এবং সন্ধ্যারাণি টুডুর উপস্থিত থাকার কথা বলা হলেও কেউ আসেননি। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতায় বৈঠক থাকায় উদ্বোধনী পর্বে তাঁরা যোগ দিতে পারেননি। আজ, শুক্রবার তাঁদের থাকার কথা। নেতা, মন্ত্রীরা না হয় ব্যস্ত ছিলেন, কিন্তু যাঁদের জন্য এই আয়োজন তাঁরা কোথায়?
অনগ্রসর দফতরের জেলা প্রকল্প আধিকারিক নিখিলেশ মণ্ডলের ব্যাখ্যা, ‘‘ধান কাটার মরসুম পড়ে যাওয়ায় প্রথম দিন লোকজন একটু কম হয়েছে। তবে মনে হয় রাতের দিকে শিল্পী ও কলাকুশলীদের ভিড় বাড়বে।’’ বিধায়ক রাজীব সোরেন, সহ সভাপতি সীতারাম মুর্মুদের আশা, আজ, শুক্রবার থেকে মেলা প্রাঙ্গণ জমে উঠবে।
প্রশ্ন হল, গেল বার ধান কাটার মরসুমেও উৎসব স্থলে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। এ বছর সেই ছবিটা উধাও হল কেন? উৎসব স্থলে উপস্থিত স্থানীয় এক তৃণমূল কর্মীর মত, দলের নেতাদের মধ্যে দূরত্ব বাড়ায় জমায়েত নিয়ে তেমন ভাবে কেউ মাথা ঘামাননি।
মানবাজার ২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি হংসেশ্বর মাহাতো উৎসব স্থলে আসেননি। জেলায় সাংস্কৃতিক কর্মী হিসাবে হংসেশ্বরবাবুর পরিচিতি রয়েছে। তাঁর অনুযোগ, আমন্ত্রণ পাননি। তাঁর কথায়, ‘‘বিনা আমন্ত্রণে কেন যাব? কই বিডিও কিংবা পঞ্চায়েত সমিতি তো আমাকে আমন্ত্রণ জানায়নি। তা ছাড়া খোঁজ নিয়ে জেনেছি, ওখানে অব্যবস্থা চলছে। কয়েক জন নেতা, আধিকারিককে নিয়ে সবাই ব্যস্ত ছিলেন। আমন্ত্রিত অতিথিরা গুরুত্ব পাননি। কিন্তু, গত বছরে উৎসবের সঙ্গে সংগঠনকে জড়িয়ে রাখা হয়েছিল। তাই প্রচুর লোকজনও হয়েছিল।’’
তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, আমন্ত্রণ পত্রে কার নাম থাকবে এ নিয়ে দলের মধ্যে দ্বন্দ্বের আভাস পেয়ে মানবাজার ২-এর বিডিও তারাশঙ্কর প্রামাণিক উৎসবের আগের দিন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন। সেই দ্বন্দ্ব মেটানো গিয়েছে বলে বিডিও দাবি করলেও শাসক দলের ব্লক সভাপতির কথায় স্পষ্ট যে, দ্বন্দ্বের চোরাস্রোত থেকেই গিয়েছে।
উৎসবের জায়গা ফাঁকা থাকায় তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না সিপিএমের মানবাজার ২ জোনাল কমিটির সম্পাদক বৈদ্যনাথ সোরেন। বৈদ্যনাথবাবু বলেন, ‘‘এ সব অনুষ্ঠান করতে গেলে খরচ তেমন হয় না। কিন্তু, জনগণের সঙ্গে যোগাযোগটা থাকা দরকার। ওদের সেটাই নেই। শুধু শুধু উৎসবের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা বরবাদ করা হচ্ছে।’’
এ দিকে বিডিও-র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি-র মানবাজার ২ ব্লকের সভাপতি কৃত্তিবাস মাহাতো। তাঁর কথায়, ‘‘সঙ্কটে পড়লে সর্বদলীয় সভায় আমাদের ডাক পড়ে। আমন্ত্রণ পেলে আমাদেরও লোকজনও তো উৎসব প্রাঙ্গণে যেত। তাতে তো লাভই ছিল।’’ বিডিও তারাশঙ্কর প্রামাণিকের অবশ্য দাবি উৎসবে সবাইকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সেই মর্মে এলাকায় মাইকে প্রচার করা হয়।
দেহ উদ্ধার। পুকুর থেকে উদ্ধার হল এক ব্যক্তির দেহ। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম অশোক বাউরি (৪৫)। তাঁর বাড়ি পুরুলিয়া মফস্সল থানার আড়িতা গ্রামে। বুধবার রাতে কুস্তাউর রেল স্টেশনের কাছে একটি পুকুরের পাড়ে একটি ভ্যানরিক্সা ও জুতো পড়ে থাকতে দেখে লোকজনের সন্দেহ হয়। তল্লাশি চালিয়ে পুকুরে দেহ মেলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy