অতি সম্প্রতি রানাঘাট-বনগাঁ শাখায় প্রায় ৩৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ডাবল লাইন নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে রেল বোর্ড। এ বার শিয়ালদহ ডিভিশনের দক্ষিণ শাখায় লক্ষ্মীকান্তপুর থেকে নামখানা পর্যন্ত ৪৫.৫৬ কিলোমিটার পথে ডাবল লাইন তৈরির জন্য চূড়ান্ত পর্যায়ের সমীক্ষা করার অনুমতি দিল তারা। শিয়ালদহ উত্তরে চাঁপাপুকুর-হাসনাবাদ শাখায় ১৬.৫৪ কিলোমিটার পথেও একই সমীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছে রেল বোর্ড।
সমীক্ষার অঙ্গ হিসাবে কী ভাবে রেলপথ নির্মাণ করা হবে, তা ঠিক করার পাশাপাশি সম্ভাব্য খরচও খতিয়ে দেখে বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করা হবে। এর পরে দেখা হবে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা (ফিজ়িবিলিটি রিপোর্ট)। সব শেষে প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অর্থবরাদ্দ করে চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে রেল মন্ত্রক।
তবে, লক্ষ্মীকান্তপুর-নামখানা পথে ডাবল লাইন নির্মাণের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত পর্বের সমীক্ষার অনুমতি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন রেল প্রশাসনের আধিকারিকেরা। ওই পথে গঙ্গাসাগর, বকখালি, হেনরি’জ আইল্যান্ড জনপ্রিয় পর্যটনস্থল। বর্তমানে ওই শাখায় সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতার চেয়ে সামান্য বেশি ট্রেন চলে। নতুন ট্রেন চালু হলে সেই হার আরও বাড়বে। সেই কথা মাথায় রেখেই ডাবল লাইন নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হল বলে অনুমান রেলের কর্তাদের।
তাঁদের মতে, এর ফলে ওই শাখার উদয়রামপুর, কালওয়ান হল্ট, করঞ্জলি হল্ট, নিশ্চিন্দপুর, কাশীনগর হল্ট, কাকদ্বীপ, উকিলের হাটের মতো একাধিক স্টেশনের গুরুত্ব বাড়বে। হল্ট স্টেশনগুলির পরিকাঠামো সম্প্রসারণেরও সম্ভাবনা থাকছে।
শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় বারুইপুর হয়ে লক্ষ্মীকান্তপুর পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ স্বাধীনতার আগেই সম্পন্ন হয়েছিল। ১৯৮৭-৮৮ সালে ওই শাখা নামখানা পর্যন্ত সম্প্রসারণের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। পরে কুলপি পর্যন্ত ১৯৯২ সালে এবং কাকদ্বীপ পর্যন্ত সম্প্রসারণের কাজ ২০০১ সালে সম্পূর্ণ হয়। ২০০৪ সালে নামখানা পর্যন্ত একটি লাইনের কাজ শেষ হয়।
অন্য দিকে, শিয়ালদহ-হাসনাবাদ শাখার চাঁপাপুকুর থেকে হাসনাবাদ পথে লাইনের ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী ১০০ শতাংশ ট্রেন চলে। ওই পথে ডাবল লাইন হলে ভ্যাবলা হল্ট, বসিরহাট, আনন্দপুর, নিমদাঁড়ি, মধ্যমপুর, টাকি রোড-সহ বিভিন্ন স্টেশনের যাত্রীদের সুবিধা হবে। স্থানীয় বাসিন্দা ইরফান আলি বলেন, ‘‘ডাবল লাইন হলে ট্রেন বাড়বে। তবে চাঁপাপুকুর এবং ভ্যাবলার মাঝে দেবীপুরে হল্ট স্টেশন জরুরি।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)