E-Paper

শৌচাগারের জানলা থেকে মুখ বাড়িয়ে উদ্ধার

শ্যামের খোঁজে আসা রাজকুমার জানান, প্রবল আতঙ্কে থাকলেও মোটের উপরে সুস্থ ছিলেন শ্যাম। রাতেই তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২৫ ০৭:৫০
শ্যাম পাণ্ডে।

শ্যাম পাণ্ডে।

একটি বেসরকারি সংস্থার ব্যবসায়িক কাজে মুম্বই থেকে কলকাতায় এসেছিলেন বছর পঁয়তাল্লিশের শ্যাম পাণ্ডে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তেতলার বাতানুকূল ঘরে স্নান সেরে একটু বিশ্রামের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। জানলা আঁটা বাতানুকূল ঘরে বসে তিনি কিছুই বুঝতে পারেননি, বাইরে কী ঘটছে। রাত আটটার কিছু পরে হোটেলে আচমকা বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় শোরগোল শুনে শ্যাম গোলমাল টের পান বলে খবর। দরজা খুলে বেরোতে গিয়েও দমবন্ধ করা প্রবল ধোঁয়া দেখে ঘরে ফিরে যান।

এ দিকে, আগুন লাগার খবর ছড়িয়ে পড়তেই শ্যামের পরিচিতেরা খোঁজখবর করা শুরু করেন। যে সংস্থার কাজে তিনি কলকাতায় এসেছিলেন, সেখানকার এক কর্মী আগুন লাগার খবর পেয়ে রাজকুমার যাদব নামে তাঁর এক সহকর্মীকে পাঠান শ্যামের খোঁজ করতে। বাইরে তখন উদ্বিগ্ন মুখে হাঁফাতে হাঁফাতে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ এবং হোটেল চত্বরের মধ্যে ছোটাছুটি করছেন ওই ব্যক্তি। তিনি এবং অন্যেরা নাগাড়ে ফোন করেও শ্যামের হদিস পাচ্ছেন না।

এ দিকে হোটেলের ঘরে বসে ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে আসার বিপদ বুঝে জানলা খুলতে গিয়েও ব্যর্থ হন শ্যাম। তিনি হোটেলের ঘর লাগোয়া শৌচাগারে গিয়ে কমোডের উপরে উঠে কোনও মতে জানলা ভেঙে বাইরে কী ঘটছে, বোঝার চেষ্টা করেন। বাইরে তখন ছাদে আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধার করতে তোলা হয়েছে হাইড্রলিক ল্যাডার। জানলা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে কোনও মতে উদ্ধারকারীদের নজর কাড়েন তিনি। এর পরে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চেষ্টা চালিয়ে রাত ১টা নাগাদ হোটেলের জানলা দিয়ে শ্যামকে বার করে আনেন দমকলকর্মীরা। ওই রকম পরিস্থিতিতে শ্যামের উপস্থিত বুদ্ধি দেখে অবাক তাঁরা। রাতেই তাঁকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

শ্যামের খোঁজে আসা রাজকুমার জানান, প্রবল আতঙ্কে থাকলেও মোটের উপরে সুস্থ ছিলেন শ্যাম। রাতেই তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বুধবার সকালে ব্যবসায়িক সংস্থার পক্ষ থেকে উড়ানের বিশেষ টিকিট কেটে মুম্বই উড়ে যান শ্যাম। সেখানেই প্রয়োজনীয় শুশ্রূষা চলছে তাঁর।

পরে রাজ বলেন, ‘‘যে ভাবে উনি জীবন ফিরে পেয়েছেন, তা এক কথায় অভিনব।’’ যদিও বার বার শ্যামের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি আতঙ্কে থাকায় কিছু বলতে চাননি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Mechua Fire Incident Barabazar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy