শুধুমাত্র পর্যটকদের কথা ভেবে থানা তৈরির ভাবনা রাজ্যে। আর এই প্রথম পূর্ণাঙ্গ ট্যুরিস্ট থানা হচ্ছে গজলডোবা মেগা ট্যুরিজম হাব ‘ভোরের আলোয়’। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে খবর ‘ভোরের আলো ট্যুরিস্ট পুলিশ স্টেশন’ নামে ওই থানা চালু হওয়ার কথা। ইতিমধ্যেই তিস্তার বাঁধ ও ক্যানালের মাঝামাঝি জায়গায় থানা তৈরির জন্য ৮০ কাঠা জমি বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের মুখ্য সচিব মলয় দে ও স্বরাষ্ট্র সচিব অত্রি ভট্টাচার্য এসে জমি দেখে গিয়েছেন।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই শীর্ষ আমলার পরামর্শ মেনেই সামনের দিকে ছিমছাম একটি থানা ভবন তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। বাকি জমিতে পুলিশের একটি অতিথি নিবাস তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার নীরজ কুমার সিংহ বলেন, ‘‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শ মেনেই আমরা পূর্ণাঙ্গ ট্যুরিস্ট থানা তৈরির পরিকল্পনা করেছি।’’
পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, এই থানায় কেবলমাত্র পর্যটকরাই অভিযোগ জানাতে পারবেন। থানার পুলিশ কর্মী ও আধিকারিকদের দায়িত্বও হবে পর্যটকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। বছরখানেকের মধ্যে এই থানার কাজ শেষ হবে বলে আশা। এই মুহূর্তে গজলডোবার মিলনপল্লিতে শিলিগুড়ি পুলিশের একটি ক্যাম্প রয়েছে। তা ভক্তিনগর থানার আওতায়। এখানেই প্রায় ৪০০ একর জায়গা জুড়ে গজলডোবা মেগা ট্যুরিজম প্রকল্প তৈরির কাজ এগোচ্ছে। ভবিষ্যতে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে পর্যটকদের আনাগোনাও বাড়বে। তখনই এই ট্যুরিস্ট থানার গুরুত্বও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, পূর্ণাঙ্গ ট্যুরিস্ট থানা হলে সব দিক থেকেই ভাল হবে। কারণ, এখনই রোজ ‘ভোরের আলোয়’ গড়ে কয়েকশো পর্যটক যান। রবিবার সহ ছুটির দিনে বাঁধের ধারে তিল ধারণের জায়গা থাকে না। ক্যাম্পের গুটিকয় পুলিশকর্মীকে ফাঁকি দিয়ে গাড়িতে, চালাঘরে বা বাঁধের ধারে বসে দেদার নেশা করতে দেখা যায়। ফলে, পর্যটকরা অনেক সময়েই নিরাপদ বোধ করেন না। পুরোপুরি ট্যুরিস্ট থানা হলে পর্যটকদের সাহায্য করতে পর্যাপ্ত সংখ্যক ট্যুরিস্ট ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা যাবে বলে পুলিশের এক কর্তা জানান।
পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বছর কয়েক আগে বিহারের রাজগির, সহর্ষ, পশ্চিম চম্পারণ ও বৈশালীতে ট্যুরিস্ট থানা তৈরির ভাবনা হয়েছিল। তবে তা বাস্তবে কার্যকর হয়নি।
এ রাজ্যে দিঘার সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সহায়তা করতে সেখানকার থানার মধ্যেই আলাদা একটি ‘ট্যুরিস্ট সেল’ খোলা হয়েছে। সেই হিসেবে ‘ভোরের আলো’ রাজ্যে প্রথম পূর্ণাঙ্গ ট্যুরিস্ট পুলিশ স্টেশন হতে চলেছে।