ভাইচুং ভুটিয়া ট্যুইট করে দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করতেই তৃণমূলের পাহাড়-সমতলের অনেকেই কিছুটা হলেও যেন স্বস্তিতে। সোমবার সকাল থেকে রাত অবধি সেই আলোচনায় সরগরম ছিল দার্জিলিং থেকে শিলিগুড়ি। এমনকী, ডুয়ার্সের বীরপাড়া, কালচিনি, জয়গাঁর মতো এলাকার তৃণমূল অফিসেও তা নিয়ে চর্চা চলেছে।
তৃণমূলের পাহাড়ের এক নেতা জানান, কোনও কিছু অপছন্দ হলেই সরাসরি দলনেত্রী তথা খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অভিযোগ করতেন। সমতলের অনেকে নেতারাও একই অভিযোগ। তাই ফুটবল-তারকার দলত্যাগের ঘোষণার পরে ওই নেতাদের অনেকেই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন। তবে তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি তথা পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘কয়েকদিন আগেই ভাইচুংয়ের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। খেলা নিয়ে খুব ব্যস্ত বলেছিল। তার পরে আর কথা হয়নি। আপাতত আর কিছু বলার নেই।’’
তৃণমূলের একাধিক অফিসে অবশ্য দেখা গিয়েছে খোলামেলা আলোচনা চলছে। একান্ত আড্ডায় অনেকেই বলছেন, রাজনীতির মাঠ আর খেলার ময়দান যে একরকম নয় সেটা দেশের প্রাক্তন ফুটবল অধিনায়ককে বোঝাতে হিমশিম খেতে হতো। তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা কমিটির এক নেতা জানান, কেউ ওঁর কথা না শুনলেই লিখিত অভিযোগ জমা দিতেন। তৃণমূলের এক জেলা নেতা একান্তে জানান, যে নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে শিলিগুড়িতে প্রায় গোটা জেলা কমিটি নতুন করে গড়তে হতো। পাহাড় তৃণমূলের একাধিক নেতা জানান, ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটে প্রচুর সহযোগিতার পরেও তাঁদের একাংশের বিরুদ্ধে নালিশ গিয়েছিল তৃণমূল ভবনে।
নিজের ট্যুইটার হ্যান্ডেলে তৃণমূল ছাড়ার কথা ঘোষণা ভাইচুঙের।
ফলে, গত পুরভোটের সময়ে পাহাড়ে ভাইচুংকে প্রচারে চাননি প্রায় কেউ-ই। বরং, সিকিমের ভূমিপুত্র ভাইচুং পরোক্ষে গোর্খাল্যান্ডের পক্ষে সওয়াল করেছেন জানিয়ে পাল্টা নালিশ গিয়েছিল তৃণমূল ভবনে। সে কথা মনে করিয়ে পাহাড়ের তৃণমূলের এক মুখপাত্র বলেন, ‘‘ফুটবলার হিসেবে অতুলনীয় হলেও রাজনীতির ময়দানে আচমকা ‘ক্যাপ্টেন’ হওয়া যে যায় না, সেটা বোঝানো যেত না বলেই সমস্যা। তবে ওঁর দল ছাড়ার সিদ্ধান্তে আপাতত স্বস্তি।’’
দেশের প্রাক্তন ফুটবল অধিনায়ক একটা সময়ে শিলিগুড়িতে হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপ বানিয়ে নানা খবরাখবর আদানপ্রদান করতেন। পাহাড়ে গত জুন মাসে গোলমালের পর থেকে সেই গ্রুপ ধীরে ধীরে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। ভাইচুংয়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবে তৃণমূলের যে ক’জন নেতা পরিচিত ছিলেন, তাঁরাও এ দিন অতি মাত্রায় সতর্ক। তেমনই এক তৃণমূল নেতা জানান, ভাইচুংয়ের সঙ্গে নাকি গত জুন মাস থেকেই যোগাযোগ প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy