Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
CPIM

CPM: মীনাক্ষী-সৃজনদের আপাতত গণফ্রন্টেই রাখতে চায় দল

আগামী সেপ্টেম্বর থেকে শাখা স্তরে সম্মেলন প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে সিপিএমের। কলকাতায় দলের রাজ্য সম্মেলন হবে আগামী বছর জানুয়ারিতে।

ফাইল চিত্র

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২১ ০৭:০৩
Share: Save:

বয়সের নতুন নীতি মেনে দলের রাজ্য নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে হবে বহু নেতাকে। কিন্তু বিমান বসু বা সূর্যকান্ত মিশ্র সরে গেলেই মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় বা সৃজন ভট্টাচার্যদের দলে বড় দায়িত্বে বসিয়ে দেওয়া হবে— এমন পরিকল্পনার পথে আপাতত হাঁটছে না সিপিএম। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে যাঁরা সাম্প্রতিক কালে নজর কেড়েছেন, তাঁদের প্রায় সকলকেই সংশ্লিষ্ট গণসংগঠনে রেখে দিয়ে মাটির কাছাকাছি থাকার বার্তাই দিতে চাইছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।

এ বারের বিধানসভা ভোটে এক ঝাঁক নবীন মুখকে ময়দানে নামিয়েছিল সিপিএম। দল জিততে না পারলেও তাঁদের অনেকেই প্রচারে নজর কেড়েছেন, বেশ কয়েক জন প্রার্থী দু’বছর আগের লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় বামেদের ভোটও বাড়িয়েছেন। তরুণ মুখ হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার পরেই চর্চা শুরু হয়েছে, এ বার কি সংগঠনের রাশও এঁদের হাতে তুলে দেওয়া হবে? বিযয়টি নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা সেরে আলিমুদ্দিনের নেতারা ঠিক করেছেন, বেশি তাড়াহুড়ো করতে গেলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা আছে। সাম্প্রতিক অতীতে ব্রতীন সেনগুপ্ত বা ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়দের দ্রুত উত্থানের পরে যে পরিণতি হয়েছে, তা মাথায় রাখতে হচ্ছে সিপিএমকে।

আগামী সেপ্টেম্বর থেকে শাখা স্তরে সম্মেলন প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে সিপিএমের। কলকাতায় দলের রাজ্য সম্মেলন হবে আগামী বছর জানুয়ারিতে। দলের জেলা সম্মেলন-পর্ব পুরোদস্তুর শুরু হওয়ার আগেই সামনের মাসদেড়েকের মধ্যে ছাত্র, যুব, কৃষক ও শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সম্মেলন হতে চলেছে। নদিয়ার নবদ্বীপে ছাত্র, উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে যুব, হাওড়া গ্রামীণে কৃষক এবং পশ্চিম বর্ধমানের শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক ফ্রন্টের রাজ্য সম্মেলন হবে। কিছু নতুন মুখের আমদানি করলেও গণসংগঠনের নেতৃত্ব থেকে এখনই সকলকে তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে না সিপিএম। গণসংগঠনে কাজ করার সঙ্গেই দলে কাউকে কাউকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।

সূত্রের খবর, এসএফআইয়ের রাজ্য নেতৃত্বে সৃজন ভট্টাচার্য ও প্রতীক-উর রহমানের জুটিকেই রেখে দেওয়ার পক্ষপাতী দল। ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সভানেত্রী মীনাক্ষী ইদানিং কালে সব চেয়ে বেশি চর্চিত হয়েছেন নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়ে। তাঁকে আরও এক দফা যুবনেত্রী হিসেবে রেখে দিয়েই আন্দোলনে হাত পাকাতে দিতে চায় আলিমুদ্দিন। তবে যুব সম্পাদক পদ থেকে সায়নদীপ মিত্রের অব্যাহতি প্রায় পাকা, তাঁর জায়গায় বিকল্প নামও ভেবে রাখা হয়েছে। কৃষক সভার ভারপ্রাপ্ত রাজ্য সভাপতি পদ থেকে সঞ্জয় পূততুণ্ড সরে দাঁড়াবেন। তাঁর জায়গায় অমল হালদারকে সভাপতির দায়িত্বে দেখা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে অমলবাবুর ছেড়ে দেওয়া রাজ্য সম্পাদক পদে তরুণ কোনও কৃষক নেতাকে জায়গা করে দেওয়া হতে পারে। শ্রমিক সংগঠন সিটুর রাজ্য সম্পাদক পদে প্রাক্তন শ্রমমন্ত্রী অনাদি সাহুকেই ফের দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা। সংগঠনের রাজ্য সভাপতি পদে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন না হওয়ার পাল্লা ভারী।

প্রবীণ নেতারা সরে দাঁড়ালে মধ্য প্রজন্মের নেতাদের শূন্যস্থানে বেশি করে নিয়ে আসা এবং একই সঙ্গে তরুণ অংশকে আন্দোলনের মুখ হিসেবে এগিয়ে দেওয়া সিপিএমের আপাতত লক্ষ্য। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘বয়স-নীতি কার্যকর করে সংগঠনকে গতিশীল করতেই হবে। কিন্তু অল্পবয়সি সকলকেই রাতারাতি নেতৃত্বে বসাতে হবে, এই রকম যান্ত্রিক ভাবনায় দল চালানো মুশকিল!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CPIM Minakshi Mukherjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE